বাংলাদেশের বৃহত্তম একটি প্রকল্প পদ্মা সেতু, যেটা দিয়ে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হলো। তবে এই প্রকল্পে বিশ্ব ব্যাংকের নিকট অর্থ চাইলে অর্থায়নের বিষয়টি নিয়ে শুরু হয় ষড়যন্ত্র, যার কারণে পদ্মা সেতুর অর্থ সংগ্রহে বিপাকে পড়ে সরকার। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই ধরনের ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করে সম্পূর্ন নিজস্ব অর্থায়নের মাধ্যমে পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করার নির্দেশ দেন।
সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গহর রিজভী পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থে হোক, এটা চাননি বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সাহাব উদ্দিন চুপ্পু।
গতকাল বুধবার ‘বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতুর অবদান’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আওয়ামী লীগের প্রচার উপ-কমিটি এ সেমিনারের আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।
সাহাব উদ্দিন চুপ্পুর সেমিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারকাত। আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খান মাহমুদ আমানত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ। আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক আবদুস সবুর।
সভাপতির বক্তব্যে সাহাব উদ্দিন চুপ্পু বলেন, তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতও চাননি পদ্মা সেতু হোক। তিনি ওকাম্পোর নেতৃত্বে আসা বিশ্বব্যাংকের তদন্ত দলকে কৌশলে কথা বলতে বলেছিলেন। কিন্তু আমি তা করিনি। ওকাম্পো আমাকে বলেছিল ইউনূসের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের কথা। আমি তাকে কড়াভাবে উত্তর দিয়েছিলাম সেই সময়। প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা গহর রিজভী নিজেও সেতুটি নিজস্ব অর্থে এই সেতু হোক এটা চাননি। তিনি আরও বলেন, আমি তখন দুদকের কমিশনার ছিলাম। এ সময় বলা হয়েছিল, পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে যৌথ তদন্তে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করবে দুদক। আমি ভেটো দিয়েছি।
প্রকৌশলী আবদুস সবুর বলেন, আমাজনের পর পদ্মা নদী বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম খরস্রোতা নদী। এই নদীর উপর একটি সেতু নির্মাণ আমার প্রকৌশলী জীবনের একটি বড় ঘটনা।
উল্লেখ্য, পদ্মা সেতু এশিয়ার দীর্ঘতম সেতুগুলোর মধ্যে একটি। আরে এই সেতু বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল হলো সমগ্র বিশ্বে। বাংলাদেশ দেখিয়ে দিয়েছে যে বাইরের থেকে কোন অর্থ নেওয়া ছাড়াই যেকোনো ধরনের বড় ধরনের প্রকল্প বাংলাদেশ সরকার বাস্তবায়ন করতে পারে। পদ্মা সেতু আজ বিশ্বের বুকে একটি চিহ্ন এঁকে দিলো।