আওয়ামী লীগ দল পুনর্গঠন করতে পারে এতে কোনো সমস্যা নেই। তবে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে পরিণতি ভালো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।
সোমবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে কোটা আন্দোলনে সহিংসতায় আহত আনসার সদস্যদের খোঁজখবর নেওয়ার পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।
আওয়ামী লীগ সম্পর্কে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, লোক জড়ো করুক আর যাই করুক, এমন কিছু করবেন না যাতে আপনার জীবন বিপন্ন হয়। কারণ দেশের মানুষ আপনাদের গ্রহণ করতে আসেনি।
আমি বরং মনে করি আপনি আপনার পার্টি পুনর্গঠন করুন। বাংলাদেশে এই দলের অনেক অবদান রয়েছে। আমরা এটা অস্বীকার করতে পারি না। পার্টিকে রিঅর্গানাইজড করেন, পলিটিক্যাল পার্টির মতো যেভাবে থাকে। ইলেকশন আসলে ইলেকশনে কনটেস্ট করুন। জনগণ ভোট দিলে ভোটে যাবেন। তবে প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখলে হাজার-হাজার মানুষের রক্ত ঝরবে।
দেশে আওয়ামী লীগের অবদানের কথা তুলে ধরে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘এটি অনেক বড় দল। আওয়ামী লীগের প্রতি আমার অনেক শ্রদ্ধা আছে। এই দলটি একসময় বাঙালির আশার জায়গা ছিল। বায়ান্ন, ঊনসত্তরের গণআন্দোলন ও স্বাধীনতা আন্দোলনের অবদান ব্যক্তিগত কোনো কারণে নষ্ট করবেন না। এটা জাতীয় সম্পদ। আপনারা আসুন। যারা রেগুলার করতে চান এখানে মারামারি করে লাভ নেই।’
অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, “আমরা চাই না আর কোন লোক মারা যাক।” ইতিমধ্যে ৪০০ থেকে ৫০০ হয়তো তারও বেশি মানুষ মারা গেছেন। আমরা যদি উস্কানি দিতাম তাহলে আপনারা টিকতে পারতেন না আর্মি ফায়ারে। আমরা আর্মিকে নিষেধ করেছি। বলেছি ডন্ট ওপেন ফায়ার। কারণ আপনি কাকে মারবেন। পুলিশকে দিয়ে কাকে মেরেছেন। পুলিশকে দিয়ে মেরেছেন আপনার সন্তানকে।’
“আপনারা ব্যক্তিগত স্বার্থে এত বড় দলকে নষ্ট করবেন না। এটা আমাদের প্রাইড ছিল। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল এটা নষ্ট করবেন না। আপনার নষ্ট করার কোনো অধিকার নেই। এটা বাংলাদেশের সম্পত্তি। কেউ যদি মনে করেন আবার কাউন্টার রেভ্যুলেশন করে আসবেন। তা করতে হলে আপনাকে হাজার হাজার লোকের রক্ত বহাইতে হবে। যদি সেই দায়িত্ব নিতে চান নেন, তাহলে আমার কিছু করার নেই।-যোগ করেন সাখাওয়াত হোসেন।
এ সময় কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সহিংসতার সময় লুটপাট হওয়া অস্ত্র এক সপ্তাহের মধ্যে জমা না দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, লুট হওয়া অস্ত্রগুলো আগামী সোমবারের মধ্যে থানায় জমা দিতে হবে। তারপর পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাখাওয়াত হোসেন আন্দোলনে হতাহতের নিন্দা জানিয়ে তদন্তের আশ্বাস দেন।