Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পরেই নিথর হলেন ছাত্রী, অসুস্থ ২

আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পরেই নিথর হলেন ছাত্রী, অসুস্থ ২

সাধারনত দেশের বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রীদের খাওয়ানো হয় আয়রন ট্যাবলেট। নারী শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার জন্য সরকার একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর এই ধরনের ট্যাবলেট খাওয়ানোর কর্মসূচী নিয়ে থাকে। সম্প্রতি জানা গেছে, ঝিনাইধে ( Jhenaidhe ) একটি স্কুলে এক ছাত্রী আয়রন ট্যাবলেট খায়, খাবার পরপরই সে ধীরে ধীরে চলে যায় না ফেরার দেশে। আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে ফারজানা ( Farzana ), আসমা ( Asthma ), সুমাইয়া ( Sumaiya ) ও উর্মিলা ( Urmila ) নামে আরো ৪ শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

ঝিনাইদহের একটি স্কুলে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার কিছুক্ষণ পর রেবা খাতুন নামে এক শিক্ষার্থী প্রয়াত হয়েছেন, বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আরো চার শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। সোমবার ( Monday ) জেলার হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

তবে আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে নাকি অন্য কোনো শারীরিক অসুস্থতার কারণে ঐ শিক্ষার্থীর প্রয়ান ঘটেছে তা এখনও নিশ্চিত হতে পারেননি চিকিৎসকরা।

রেবা খাতুন সদর উপজেলার উত্তর সমশপুর ( North Samashpur ) গ্রামের সাগর হোসেনের ( Sagar Hossain ) মেয়ে এবং হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।

এ ঘটনায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়া চার শিক্ষার্থী হলো- ফারজানা ( Farzana ), আসমা ( Asthma ), সুমাইয়া ( Sumaiya ) ও উর্মিলা ( Urmila )।

এদিকে শিক্ষার্থী প্রয়ানের ঘটনায় সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিথিলা ইসলামকে ( Mithila Islam ) প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

জানা যায়, স্কুল পড়ুয়া কিশোরী মেয়েদের শরীরে আয়রনের ঘাটতি পূরণে ইউনিসেফের অর্থায়নে প্রতি সাত দিন পর পর একজন শিক্ষার্থীকে একটি করে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ানো হচ্ছে।

সকালে স্কুল থেকে সব শ্রেণির ছাত্রীদের একটি করে আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ান শিক্ষকরা। এর কিছুক্ষণ পর ১১টার ( ১১টার ) দিকে রেবা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন দ্রুত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক রেবাকে ( Rebecca ) প্রয়াত ঘোষণা করেন, জানায় রেবা খাতুনের ( Reba Khatun ) সহপাঠী জান্নাতুল।

রেবার আরেক সহপাঠী সামিন ( Samin ) বলেন, তারা রেবাকে ( Rebecca ) হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় কোনো শিক্ষক সেখানে উপস্থিত ছিল না। তখন সে ঠিক বুঝতে পারছিল না কী করবে। একপর্যায়ে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। পরে রেবার বাড়ি ও স্কুলে জানানো হয় তিনি প্রয়াত হয়েছেন।

রেবার মা স্বপ্না বেগম ( Swapna Begum ) বলেন, সকালে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে স্কুলে যায় রেবা। এরপর স্কুল থেকে জানানো হয় আমার মেয়ে একটি ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তখন দ্রুত স্কুলে গিয়ে দেখি সেখানে মেয়ে নেই। পরে হাসপাতালে এসে দেখি রেবার নিথর দেহ নিয়ে সহপাঠীরা দাঁড়িয়ে আছে।

তিনি আরো বলেন, কী কারণে মেয়ের প্রয়ান ঘটলো হলো এর সঠিক বিচার চাই। ভালো মেয়ে স্কুলে গেল আর পেলাম নিথর অবস্থায়। এর পেছনে শিক্ষকদের কোনো অবেহলা আছে কি না তা খুঁজে বের করে দোষিদের শাস্তি দেওয়া হোক।

হাটগোপালপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নাসিমা খাতুন ( Nasima Khatun ) বলেন, আমাদের বলা হয়েছিল প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের মাধ্যমে ট্যাবলেট খাওয়াতে। সেভাবেই খাইয়েছি। এখানে আমাদের কোনো গাফিলতি ছিল না। তবে কী কারণে এমনটি ঘটেছে তা জানি না।

ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন ডা. শুভ্রা রানী দেবনাথ ( Shuvra Rani Debnath ) বলেন, সাধারণত আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে কেউ প্রয়াত হয় না। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে পেটে ব্যথা কিংবা অ্যাসিডিটি বা পাতলা পায়খানা হতে পারে। তবে সে আগে থেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল কি না খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। তার প্রয়ানের সঠিক কারণ জানতে ময়নাতদন্ত করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ঘটনার তদন্তে তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করা হয়েছে। সেখানে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, সিভিল সার্জন অফিসের ( Office Civil Surgeon ) রোগ নিয়ন্ত্রণ বিভাগের মেডিকেল অফিসার ও ইউনিসেফের একজন প্রতিনিধি থাকবে।

এরকম অপ্রতাশিত ঘটনায় ঐ এলাকায় চলছে শো”কের মাতম। আয়রন ট্যাবলেট খেয়ে প্রাণ হারানোর ঘটনা আসলেই অবাককর। এর পিছনে অন্য কোনো সমস্যা বা কারন ছিলো বলে ধারণা করা হচ্ছে। রেবার মা বলেছেন রেবা একদম সুস্থ ছিলো। রেবার বাবা মা মেয়েকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে গেছে। মুহূর্তের মধ্যে কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই রেবা পাড়ি জমালো পরপারে। ঘটনাটি আসলেই খুবই দঃখজনক।

About bisso Jit

Check Also

আ.লীগ ও তৃণমূল থেকে বিএনপিতে যোগদানের হিড়িক

নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও তৃণমূল বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে বিএনপিতে যোগদানের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *