বাংলাদেশের সুপরিচিত এবং জনপ্রিয় চেনা মুখ অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমু। তিনি দুই দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের বিনোদন অঙ্গনের সাথে যুক্ত রয়েছেন। এবং অভিনয় করেছেন অসংখ্য সিনেমায়। তিনি সিনেমার পাশাপাশি নাটকেও কাজ করেছেন। গত ১৭ তারিখ কেরানীগঞ্জে একটি ব্রীজের পাশি এই জনপ্রিয় অভিনত্রীর বস্তাবন্ধি লাশ পাওয়া গেছে। এই নিয়ে দেশ জুড়ে চলছে বেশ আলোচনা-সমালোচনা। এই ঘটনাকে ঘিরে আক্ষেপ নিয়ে বেশ কিছু কথা বললেন বাংলাদেশের প্রথম সারির চলচ্চিত্র নির্মাতা কাজী হায়াৎ।
মঙ্গলবার সকালে চলচ্চিত্র ও নাট্য অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর হ/ত্যা/র খবর শুনে ম/র্মা/হত হয়েছেন প্রখ্যাত পরিচালক কাজী হায়াৎ। এই পরিচালকের সহায়তায় ১৯৯৮ সালে চলচ্চিত্রে নাম লেখান শিমু। তিনি বলেন, ‘এই হ/ত্যা/কা/ণ্ডের সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসতে হবে। যে বা যারা এই হ/ত্যা/কা/ণ্ডে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। এমন শাস্তি যে এমন অপরাধের কথা আর কেউ ভাববে না,’বলেন কাজী হায়াৎ। সোমবার দুপুরে ঢাকার কেরানীগঞ্জের হযরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকার রাস্তার পাশ থেকে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুর লা/শ উদ্ধার করা হয়। লা/শ বস্তায় ভরে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পু/লি/শ। কারা এ হ/ত্যা/কা/ণ্ড ঘটিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। তার অকাল মৃ/ত্যু/র খবর দ্রুত চলচ্চিত্র জগতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রতিবেদকের কাছে রাস্তার পাশে অভিনেত্রী শিমুরের বস্তাবন্দি লা/শ পাওয়া গেছে শুনে হ/ত/বাক হয়ে যান পরিচালক কাজী হায়াৎ। এবং তিনি বলেন, “আমার কিছু বলার নেই। শিমু আমার ছবিতে কাজ করেছে। মেয়েটি আমার চোখে খুব ভালো ছিল। মান্না তাকে আদর করতেন, আমিও তাকে ভালো করে চিনতাম। কিন্তু আজ বস্তাবন্দী শরীরের কথা শুনে অবাক হয়েছি। খুবই দুঃখজনক, খুবই দুঃখজনক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কি একটু অবনতি হয়েছে? নাকি এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা?’
শিমু প্রসঙ্গে কাজী হায়াৎ বলেন, ‘শিমু একজন শিল্পী। সর্বোপরি, তিনি একজন দুর্দান্ত শিল্পী ছিলেন। চলচ্চিত্র ও শিল্পক্ষেত্রে কিছু করার প্রবল ইচ্ছা ছিল। এভাবে লা/শ বস্তাবন্দী করা খুবই দুঃখজনক। এমনটি যাতে আর না হয় সেজন্য এটাই দাবি। কিন্তু তার এভাবে চলে যাওয়াটা খুবই দুঃখজনক। তবে শিমু চলে যাওয়ার পরও খু/নে/র সঠিক তথ্য বেরিয়ে আসা উচিত ছিল। যারা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। বেশ কয়েক বছর ধরে খবরে নেই রাইমা ইসলাম শিমু। নতুন কোনো ছবিতে তাকে দেখা যায়নি। খবরের শিরোনামে ছিলেন না প্রয়াত এই অভিনেত্রী। ক/রো/না/য় চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ হারানো ১৮৪ জনের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে হঠাৎ কথা বলতে দেখা যায় এই অভিনেত্রীকে। তিনি অধিকারহীন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। কাজী হায়াৎ শিমুরকে প্রথম কিভাবে খুঁজে পেলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “তার ভাই খোকন এফডিসিতে আড্ডা দিতেন। মান্না ভাইয়ের সঙ্গে তার যোগাযোগ ছিল। সেই সূত্রে মান্নার সঙ্গে আমারও পরিচয় হয়। একদিন মান্না শিমুকে নিয়ে এসে বলল, হায়াত ভাই। দেখো এই মেয়েটা চলে গেছে কিনা? ফিল্মে অভিনয় করতে তার খুব আগ্রহ। আমিও বললাম, ঠিক আছে। আমার প্রথম সিনেমা ‘বর্তমান’ প্রথম কাজ করেছে। এরপর ‘মন্ত্রী’তে অভিনয় করেছে। মান্নার অনুরোধে শিমুকে দুটি সিনেমায় নেওয়া। কাজী হায়াৎ বললেন, শিমুকে ‘বিষ্ণুপদ’ বলা হতো। কারণ হলো আমাদের গ্রামে বিষ্ণুপদ নামে এক হিন্দু ভদ্রলোক ছিলেন। শিমুর চেহারাও ছিল তার মতো। শিমু সেই ভদ্রলোকের মতোই বিনয়ী ও ভদ্র ছিল। অনেক কিছু বলেনি। চুপচাপ শুনছি। শান্ত মেজাজ। আহ, ওই ঠাণ্ডা মেয়েটাকে কে এমন মা/র/ল! আহহ….মেয়েটার একটা মেয়ে আর একটা ছেলে ছিল। তাদের কি হবে!’
কাজী হায়াৎ বাংলাদেশের পরিচিত মুখ। তিনি বাংলাদেশের অসংখ্য সিনেমা নির্মান করেছেন। এবং তিনি তার কাজের মধ্যে দিয়ে অর্জন করেছেন ব্যপক সফলতা এবং সম্মননা। এমনকি তিনি তরা কাজের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। তার নির্মিত সিনেমা গুলো বাংলাদেশের দর্শক মনে ব্যপক সাড়া ফেলেছে।