বিশ্বকাপ ফুটবল প্রেমিদের কাচে জনপ্রিয় একটি দল হলো ব্রাজিল, আর এই দলের পোস্টার বয় হিসেবে খ্যাত নেইমার। নেইমারের ফুটবল খেলার নৈপূন্য দেখতে মুখিয়ে থাকেন তার ভক্তরা। কিন্তু এই তারকা ফুটবলার প্রথম ম্যাচেই চোট পেয়ে বর্তমানে মাঠের বাইরে থাকতে হচ্ছে। সোমবার সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ব্রাজিলের খেলায় মাঠে নামতে পারেননি তিনি। এই রাউন্ডে কোনো ম্যাচ খেলতে পারবেন না। পরের রাউন্ডে তার পারফরম্যান্স নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা।
সার্বিয়ার বিপক্ষে ব্রাজিলের ২-০ গোলের জয়ে গোড়ালিতে চোট পেয়েছেন নেইমার, যার কারণে কাল হলো ব্রাজিলের জন্য। সাইড বেঞ্চে বসে সতীর্থদের খেলা দেখতে হচ্ছে নেইমারকে। মন ভালো নেই দ্য ফেনোমেননের।
এ অবস্থায় উত্তরসূরির কাছে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন ব্রাজিলের সাবেক বিশ্বকাপজয়ী স্ট্রাইকার রোনালদো। সেলেকাওদের বর্তমান সুপারস্টারের প্রতি আবেগ ও ভালোবাসায় ভরা তার পূর্বসূরিকে লেখা চিঠির বাংলা অনুবাদ এখানে দেওয়া হল।
বৈশ্বিক ঐশ্বর্য পাওয়ার জন্য ব্রাজিল বরাবর যে চাপে ভোগে, তোমার মতো আমারও সেটি বেশ ভালোভাবে জানা আছে। কাতারে তুমি এবং তোমার সতীর্থরা যে চাপ অনুভব করছেন, আমরাও সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে গেছি। ব্রাজিল শেষবার ২০০২ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল। তোমরা সবাই বলবে, সেই বিশ্বকাপ জেতার জন্য আমি দলকে অনুপ্রাণিত করেছি। অস্বীকার করবো না। সেটা দৃশ্যমান ছিল. যেটা দেখা গেল না সেটা হল মানসিক চাপ। তুমি এখন সেই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছ। আমি এই চিঠিটি শুরু করতে পারি এই বলে, নেইমার, তুমি একজন জায়ান্ট! আমি নিশ্চিত, আমার মতো, বেশিরভাগ ব্রাজিলিয়ানরা আপনাকে ভালোবাসে। আপনার প্রতিভা আপনাকে শীর্ষে নিয়ে গেছে। এত উচ্চতায় যে এই গ্রহের প্রতিটি কোণে ভক্তদের কাছ থেকে তোমার জন্য অফুরন্ত স্নেহ এবং ভালবাসার অভাব নেই। আর এই কারণে, নিজেকে এত উঁচুতে নিয়ে গিয়ে, এত সাফল্য মুঠোবন্দি করায়, তোমার শত্রুও এত বেড়েছে। অনেক লোক আছে যারা আপনাকে হিংসা করে। আপনার মতো তারকা আহত হওয়ায় অনেকেই খুশি। এই ধরনের ঘটনা বিরল নয়। আমরা কোন পৃথিবীতে বাস করছি। আমরা তরুণ প্রজন্মকে কী বার্তা দিচ্ছি? মনে রাখবে, সবসময় কিছু লোক থাকবে যারা আপনার সমালোচনা করবে। দুঃখ পাই এটা দেখে যে, আমাদের সমাজ এখন অসহিষ্ণুতা সহ্য করে। ঘৃণাকে স্বাভাবিকতার পর্যায়ে নিয়ে যায়।
এই মৌখিক সহিংসতা, যা একটি ধ্বং”সাত্মক শক্তি, সে সম্পর্কে আজ তোমাকে লিখছি। শক্তিশালী হয়ে ফিরে এসে! আরও স্মার্ট হও! গোলের জন্য ক্ষুধার্ত হয়ে ওঠো। তুমি মাঠে এবং মাঠের বাইরে যাই করো কিছু ভালো করো, তোমার প্রতি মানুষের ঈর্ষার চেয়ে তা শতগুণ শ্রেয়। এক মুহুর্তের জন্য সেটা ভুলে যাবে না সেই যাত্রাকে, যে যাত্রা তোমাকে বিশ্ব ফুটবলের একজন আইডলে পরিণত করেছে।
ব্রাজিল তোমাকে ভালবাসে! যারা সত্যিকারের ফুটবল ভক্ত, তোমার অনুরাগী, তারা তোমার কাছ থেকে গোল চায়। তোমার ড্রিবলিং দেখতে চায়। দেখতে চায় তোমাকে সাহসীরূপে। চাক্ষুষ করতে চায় তোমার আনন্দ। যারা ভীতু ও ঈর্ষান্বিত তাদেরকে মর্যাদা দিও না। ভালোবাসাকে উদযাপন করো। নেইমার, তুমি ফিরে আসবেই! তখন সমস্ত ঘৃণা যেন জ্বালানী হয়ে যায়।
তবে নক আউট পর্বে গিয়ে নেইমার মাঠে নামতে পারবেন এমন আশা করছেন তার ভক্ত শুভাকাঙ্খিরা। চিকিৎসকেরাও চেষ্টা করে যাচ্ছেন যাতে নেইমার মাঠে নামতে পারেন। নেইমার না থাকলে দলের জন্য সেটা দু:সংবাদ হতে পারে। তবে তিনি সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়দের কাছ থেকে দারুনভাবে অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন।