বাংলাদেশের বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশের অনেক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে আর সেইগুলো পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান। বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের বেশ কয়েকটি মেগা প্রকল্প চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন এবং এক এক করে বাস্তবায়িত করছেন এবং যার ফলে বাংলার মানুষ অনেক উপকৃত হচ্ছে। সম্প্রতি এবারের জাতীয় নির্বাচনে সরকারের ট্রাম্প কার্ড কি জানালেন নানক।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘তুরুপের তাস’ হবে পদ্মা সেতুসহ সরকারের নয়টি মেগা প্রকল্প- এমনটাই মনে করছেন দলটির একাধিক নীতিনির্ধারক। তাদের মতে, ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সেতুর দুই পাড়সহ সারাদেশে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। যা ছিল সাধারণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রদর্শনের মহড়া। আরো আটটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতিও পর্যায়ক্রমে দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরা হবে।
যে আটটি প্রকল্প পুরোদমে চলছে সেগুলো হলো- মেট্রারেল, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র, পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর, চট্টগ্রামের দোহাজারী-রামু থেকে কক্সবাজার এবং রামু-মিয়ানমার থেকে ঘুমধুম। . লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাক (রেলওয়ে) এবং কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এসব প্রকল্পের কিছু কাজ শেষ করার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে সরকার।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা প্রায় প্রতিদিনই তাদের সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কথা বলছেন। সেখানে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন কাজের পাশাপাশি ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিরোধী দল বিএনপির শাসনামলের দুর্নীতি ও ধ্বংসাত্মক রাজনীতি এবং বর্তমান সরকার দেশে কী উন্নয়ন করেছে তাও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতা এবং সরকারের নীতিনির্ধারক ও মন্ত্রীদের বক্তব্যে বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। .
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সোমবার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতির কারণে বিএনপির নেতিবাচক রাজনীতি এখন পদ্মার গভীর অতল গহ্বরে তলিয়ে গেছে। শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে। বিএনপির ষড়যন্ত্র ও ধাপে ধাপে প্রতিবন্ধকতা সরকারের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারেনি। এরপর থেকে বিএনপি নেতারা দিন দিন গভীর থেকে গভীর হতাশায় ভুগছেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বুধবার দেশের একটি জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশ এগিয়ে যাবে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার টানা তিন মেয়াদে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়েছে। সারা বিশ্বে শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন এখন বিশ্ববাসীর কাছে চমক। বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এ অগ্রগতি উন্নয়নের রোড মডেল হিসেবে দেখা হচ্ছে। তিনি একাই পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব করেছেন। পদ্মা সেতু নিয়ে দেশের মানুষের যেমন অনুভূতি রয়েছে অন্যান্য মেগা প্রকল্প নিয়েও। এগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্ব, সাহসিকতা ও কল্পনাশক্তির ফসল। তাই আগামী নির্বাচনে জনগণ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। জানা গেছে, প্রকল্পটি ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এটির বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০১৬ সালের জুলাই মাসে। এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে।
মেট্রোরেল প্রকল্প ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। সরকারের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্পে শুরু থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১৭ হাজার ৮৪৯ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। কাজের সার্বিক অগ্রগতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৮৭ শতাংশ।
পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ প্রকল্পটি ৩৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এটি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। গত এপ্রিল পর্যন্ত এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২২ হাজার ৬৮০ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার সাথে সাথে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম হাতে নেয়। দেশের মানুষ এখন এর সুফল ভোগ করছে। বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে মাতারবাড়ী বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। ৩৫,৯৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পটি জুন 2026 এর মধ্যে শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেই বিদ্যুৎখাতের উন্নয়নে ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করে। তার সুফল এখন দেশের মানুষ ভোগ করছে। বিদ্যুতের ক্রমবর্ধমান চাদিা পূরণ করতে মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়। এটি ৩৫ হাজার ৯৮৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
বিদ্যুৎখাতে সরকারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প। এটি ১৬ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে। গত এপ্রিল মাস এপ্রিল পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ১২ হাজার ৪০১ কোটি টাকা। এই প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৮১ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।
সরকারের পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প ৪ হাজার ৩৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত এপ্রিল মাস পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ১৬২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এই প্রকল্পের ভৌত অগ্রগতি ৮৫ শতাংশেরও বেশি।
চলতি বছরের ডিসেম্বরের পর কর্ণফুলী টানেল যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। এই টানেল (বঙ্গবন্ধু টানেল) কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে। কক্সবাজার ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের যানবাহন চট্টগ্রাম শহর এড়িয়ে টানেল দিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে যাতায়াত করতে পারবে। তাহলে চট্টগ্রাম শহরের যানজট অনেকাংশে কমে যাবে।
প্রসঙ্গত, জাহাঙ্গীর কবির নানক হলেন বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের একজন প্রবীন রাজনীতিবীদ। আেই সাথে তিনি ঢাকা-১৩ আসন থেকে নির্বাচিত একজন সংসদ সদস্য। এই সম্মানীয় পদে আসীন হবার পর থেকে তিনি সততা ও নিষ্ঠারশিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।