আসছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ঘোষিত এক দফা দাবি ছিল ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের প্রতিষ্ঠা। গণ-অভ্যুত্থানের সফলতার পর এই দাবিকে বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে চলেছে তারা। এবার আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম থেকে আরও একধাপ এগিয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে এই দলের গঠনের পরিকল্পনা চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের জানুয়ারিতেই নতুন এই রাজনৈতিক দলটি আত্মপ্রকাশ করতে পারে। যদিও দলের নাম এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে এটি হবে মূলত তারুণ্যনির্ভর।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা এর আগে বিভিন্ন জেলায় সফর করে দল গঠনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর আন্দোলনের প্ল্যাটফর্মকে সাংগঠনিক রূপ দিতে আহ্বায়ক কমিটি এবং জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়।

জাতীয় নাগরিক কমিটির এক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, জানুয়ারিকে সামনে রেখে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বে নতুন এই দলের পরিকল্পনা করা হচ্ছে, তবে দল গঠনের আগে তাকে উপদেষ্টার পদ ছাড়তে হবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা মনে করেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর জনগণের কাছে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তি অপরিহার্য। তারা বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা ও পরিকল্পনার মাধ্যমে এই নতুন দলের কাঠামো গড়ে তুলছেন। নতুন দল গঠন হলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কার্যক্রম চালিয়ে যাবে।

জাতীয় নাগরিক কমিটির পলিটিক্যাল অ্যাফেয়ার সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম আদীব জানান, তাদের লক্ষ্য হলো নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে মানুষের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার সুরক্ষিত থাকবে। ইতিমধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় কমিটি গঠন প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেন, ‘জানুয়ারির আগেই আমরা সব জেলায় কমিটি ঘোষণা করব।’

এই নতুন দল গঠনে ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের তরুণ নেতৃত্বকেই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা আশা করি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বাংলাদেশের জনগণের সামনে নতুন একটি রাজনৈতিক দলের রূপ প্রকাশিত হবে। এটি হবে তরুণদের উদ্যোগে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম।’

নতুন দলের লক্ষ্য, গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করে বাংলাদেশের পুনর্গঠনে কাজ করা এবং জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা।


লিপি ওসমানকে নিয়ে সিটি সেন্টারে শামীম ওসমান

দুবাইয়ের আজমান শহরের সিটি সেন্টার শপিং মলে আবারও দেখা মিললো নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে। যার বিরুদ্ধে গত ৫ আগস্টের পর নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন থানায় অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত শুক্রবার দুবাইয়ের আজমানে সহধর্মিনী সালমা ইসলাম লিপিকে সাথে নিয়ে সিটি সেন্টারে একজনের সাথে কথা বলতে দেখা গেছে সাবেক এই এমপিকে। এ সময় তার পড়নে ছিল হাত হাতা কালো রঙের সাদা ডোরা কাঁটা চেক শার্ট। সালমা ওসমান লিপির পড়নে ছিল থ্রি পিছ গায়ে কফি রঙের চাঁদর মোড়ানো। সিটি সেন্টার শপিং মলে দাঁড়িয়ে লিপি ওসমান সহ অন্য একজনের সাথে কথা বলছিলেন শামীম ওসমান। তবে ওই ব্যক্তিটি কে তা শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।

একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শামীম ওসমান সিটি সেন্টারে প্রায়ই আসেন, তবে সাধারণ মানুষ ও নারায়ণগঞ্জের পরিচিতদের সাথে তিনি খোলামেলা কথা বলতে দেখা যায়নি। পাশাপাশি তিনি জানান, শামীম ওসমান ও লিপি ওসমানের সঙ্গে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে, যেমন নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ নিজাম এবং শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই শেখ হেলাল ও ফুফাতো ভাই শেখ সেলিম।

এর আগে শামীম ওসমানকে দুবাইয়ের একটি শপিং সেন্টারে হাল্কা বাদামী রঙের শার্ট এবং কালো প্যান্ট পরিধানে দেখা গিয়েছিল, যেখানে তার সঙ্গে দুই নারী উপস্থিত ছিলেন। ধারণা করা হচ্ছে, একজন তার স্ত্রী লিপি ওসমান এবং অন্যজন তার কন্যা অহনা ওসমান। তবে শামীম ওসমানের এক বন্ধু জানায়, তার মেয়ে আমেরিকায় পড়াশোনা করে এবং বোরখা পরেন না, তাই সম্ভবত ওই দুই নারী তার স্ত্রী ও কন্যা ছিলেন।

শামীম ওসমান এবং তার পরিবারের সদস্যরা সম্প্রতি ভারতে গিয়ে নিজামুদ্দিন আউলিয়ার দরগাতে সুতা বাঁধে বলে শোনা গেছে। তারা আইফোন ১৬ প্রো ম্যাক্স হাতে একটি মোবাইল অপারেটর প্রতিষ্ঠানে ঢুকেছিলেন। এ সময় শামীম ওসমান বাংলাদেশি নাগরিকদের ছবি তুলতে নিষেধ করেন।

উল্লেখ্য, শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর তিনি ও তার অনুসারীরা নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে ভারতে চলে যান। শামীম ওসমানের নেতৃত্বে গত ১৯ জুলাই নারায়ণগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালানোর অভিযোগ রয়েছে, যার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।