চা শ্রমিকদের আন্দোলন নিয়ে গেল বেশ কিছু দিন ধরেই তোলপাড় চলছে বাংলাদেশে। নিজেদের মজুরি বৃদ্ধির দাবি নিয়ে তারা করছেন আন্দোলন। আর এই কারনেই আজ প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে চা বাগানের মালিকরা। এ নিয়ে একটি বিশেষ স্ট্যাটাস দিয়েছেন ছাত্রলীগের সাবে সাধারন সম্পাদক গোলাম রব্বানী।পাঠকদের উদ্দেশ্যে তার সেই স্ট্যাটাস তুলে ধরা হলো হুবহু:-
কাল পড়ন্ত বিকেলে গণভবনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে চায়ের আড্ডায় আলোচনায় বসবেন চা বাগান মালিকগণ। তো যারা নিষ্পেষিত, সমস্যায় জর্জরিত, বর্তমান বাজারে ন্যায্য দাবীর (মূলত ৫০০) চেয়েও কম প্রত্যাশা, ৩০০ টাকা মজুরী চেয়ে তপ্ত রাজপথে আন্দোলন করছে, তাদের কোন প্রতিনিধি নেই? তাহলে সঠিক কথা, তথ্য-উপাত্ত কে তুলে ধরবে??
ইতিমধ্যেই, চা বাগান মালিকগণ নেত্রীর কাছে যে তথ্য দিয়েছিলেন, মানে- তাদের হিসেবে সব সুযোগ-সুবিধা সহ মজুরী নাকি ৪০২ টা, সেটা যে মূলত ১৫৮ টাকা, তা কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদ হাতেকলমে শ্রম আইনের আলোকে দেখিয়ে মালিকপক্ষের প্রহসনমূলক দৈনিক মজুরীর মুখোশ ও স্বরূপ উন্মোচন করেছে! অর্থাৎ ইতিপূর্বে মালিকপক্ষ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করেছিলেন!
সুতরাং, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সামনে চা বাগানের মালিক ও শ্রমিক উভয় পক্ষের প্রতিনিধি থাকা আবশ্যক। চা শ্রমিকের সন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী Santosh Rabi Das সহ নূন্যতম তিন জেলা থেকে ১০-১২ জনের চা শ্রমিক প্রতিনিধি দলকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানানোটাই ন্যায্যতা।
আরেকটা জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকারের গণতান্ত্রিক মনোভাবও প্রকাশ করবে এই সময়োচিত সিদ্ধান্ত।
আইনের ম্যাক্সিম হচ্ছে, মাস্ট হেয়ারিং দ্যা বোথ সাইড ফর ট্রু জাস্টিস! জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ ভিসির মিথ্যা নালিশের মতো, একপক্ষের মনগড়া কল্পকাহিনীতে বিভ্রান্ত হয়ে, অপরপক্ষকে না শুনে দোষী বানিয়ে কোন সিদ্ধান্ত এলে তা মোটেও সুবিবেচনাপ্রসূত ও ফলপ্রসূ হবে না! মূল সমস্যার সমাধানও হবে নাহ। বর্তমান ছাত্রলীগের মতো চা শ্রমিকরা তথা চা শিল্পও ধুঁকতে থাকবে…
আমি রাজনীতির মানুষ, রাজনীতির ক্যালকুলেশন বুঝাই- মালিক পক্ষের অধিকাংশই ভিন্ন ঘরানার, ভিন্ন আদর্শের, আমার জানামতে সরাসরি আওয়ামী রাজনীতির সাথে জড়িত চা বাগান মালিক নেহায়াতই কম, দুই/তিন জন। আর বংশানুক্রমে চা-শ্রমিকরা ১০০ ভাগ নৌকার ভোটার, শেখ হাসিনার ভক্ত।
আশা করি, নেত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন, বাস্তবতা জেনে বুঝে। গার্মেন্টস কর্মীদের যেভাবে বেতন বাড়িয়েছেন, সেভাবে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৩০০ এর স্থলে ৫০০ করবেন।
প্রসঙ্গত, সারা দিন হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে থাকেন চা বাগানে কর্মরত শ্রমিকেরা। আর দিন শেষে তাদের হাতে আসে মাত্র ১২০ টাকা যা একটি সভ্য দেশে সত্যিই অনেক বিরল একটি ঘটনা। আর এই কারনেই এবার তারা আন্দোলনরে নেমেছে একটু ভালো থাকার দাবিতে।