Friday , September 20 2024
Breaking News
Home / Sports / আশরাফুলকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে বিপাকে পড়তে চলেছেন প্রধান নির্বাচক নান্নু

আশরাফুলকে দেশদ্রোহী আখ্যা দিয়ে বিপাকে পড়তে চলেছেন প্রধান নির্বাচক নান্নু

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাচক হিসেবে রয়েছেন এক সময়কার ক্রিকেট স্টার মিনহাজুল আবেদীন নান্নু। তার সাম্প্রতিক সময়ের একটি বক্তব্য নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে আর এই বক্তব্যে তিনি জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুলকে ‘দেশদ্রোহী’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। সেই সাথে তিনি তাকে একজন ফিক্সার ও বলেন। দেশের একটি জনপ্রিয় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচারিত একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে বাছাই প্যানেলের মেয়াদ নিয়ে আলোচনা করার সময়, নান্নু বলেছিলেন যে “দেশদ্রোহিতার কারণে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের জন্য বরখাস্ত হওয়া খেলোয়াড়দের কাছ থেকে কোনও ভালো কোনো পরামর্শ আশা করা যায় না”। কয়েক বছর আগে বাংলাদেশ দলের একজন অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে আশরাফুলকে বিবেচিত হন। এরপর তিনি ১৯১৩ সালের দিকে স্পট ফিক্সিংয়ের জন্য তাকে নিষিদ্ধ করা হয়। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি জাতীয় দলে আর ফিরে যাননি কিন্তু নিয়মিত ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেন।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও কিংবদন্তি ক্রিকেটার মোহাম্মদ আশরাফুলকে প্রকাশ্যে ‘দেশদ্রোহী ও ফিক্সার’ বলায় আরেক সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমান প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর ওপর ক্ষে’পেছে দেশের ক্রিকেটের নীতিনির্ধারকরা!

আশরাফুল-নান্নু ইস্যুতে নতুন করে উত্তেজনা বাড়ছে দেশের ক্রিকেটে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশন্স বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, যেহেতু আশরাফুল বর্তমানেও খেলছে এবং সাবেক একজন অধিনায়ক, তাই এভাবে সরাসরি আক্রমণ করা ঠিক হয়নি। বিষয়টি নিয়ে আমাদের আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বোর্ড সভাপতির সঙ্গেও আলাপ করা হবে।’

জালাল ইউনুস আরও বলেন, বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আশরাফুল বলেছিলেন, ক্রিকেট দলের নির্বাচক প্যানেলের সদস্যদের কাজে মেয়াদ ৩ থেকে ৪ বছর হলে ভালো হয়। কারণ দীর্ঘমেয়াদী নির্বাচক প্যানেল দিয়ে ক্রিকেটে সুফল ফেরানো সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, নির্বাচক প্যানেলে যারা আছেন তাদের প্রতিভার সুফল কিন্তু ৩-৪ বছরেই আমরা পেয়ে যাব। কিন্তু একই ব্যক্তি যদি একই কাজ ১১ বছর ধরে করতে থাকেন তবে আমরা এক জায়গাতেই আটকে যাব। নির্বাচক প্যানেলের মেয়াদ তাই ৩-৪ বছর হওয়া উচিত।

এই বিষয়ে নান্নুর কাছে জানতে চাইলে একই টেলিভিশনের এক লাইভ অনুষ্ঠানে আশরাফুলকে ‘দেশদ্রোহী ও ফিক্সার’ বলে আখ্যায়িত করেন। তিনি বলেন, যেসব খেলোয়াড় দেশদ্রোহী হয়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সাসপেন্ড হয়, তাদের কাছ থেকে ভালো কোনো পরামর্শ আশা করা যায় না।

কড়া ভাষায় নান্নু আরও বলেন, ‘ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাচক কতদিন দায়িত্বে ছিলেন সে সম্পর্কে বোধহয় আশরাফুলের কোনো ধারণা নেই। উনি প্রায় ৯ থেকে ১২ বছর একটানা কাজ করেছেন। তাতে কি অস্ট্রেলিয়া অনেক পিছিয়ে গেছে? সেখানে আশরাফুল শুধু বলছে বিশ্বকাপ থেকে বিশ্বকাপ পর্যন্ত থাকবে নির্বাচকরা। তাহলে বাংলাদেশ কি শুধু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবে নাকি ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ খেলবে? নাকি টেস্ট ক্রিকেট খেলবে? তাহলে কি টি-টোয়েন্টি, ওয়ানডে এবং টেস্টের জন্য আলাদা নির্বাচক থাকবে? যে ক্রিকেটার দেশদ্রোহী হয়ে ম্যাচ ফিক্সিংয়ে সাসপেন্ড হয়, তাদের কাছ থেকে ভালো কোনো পরামর্শ আশা করা যায় না।’

একই বিষয় নিয়ে রোববার (২ জানুয়ারি) নিজের ফে’সবুক লাইভে এসে আশরাফুল বলেন, ‘একটা পোস্টে যদি একজন বেশিদিন থাকে তবে তার প্রতিভাটা এক জায়গায় আটকে থাকবে। আমি কারো নাম উল্লেখ করিনি। তবে তিনি যেভাবে সবার সামনে আমাকে ‘দেশদ্রোহী’ বললেন তা খুবই দুঃখজনক। আমি যদি খারাপ কিছু বলে থাকি তাহলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন। আমি শুধু দলকে ভালো অবস্থায় নেয়ার জন্য আমি যা মনে করি তাই বলেছি। আমি কারো নাম উল্লেখ করিনি।’

এদিকে আশরাফুলের অবদান নিয়েও কথা বলেছেন নান্নু। তার জবাবে আশরাফুল লাইভে বলেন, ‘আমার অবস্থান বাংলাদেশ ক্রিকেটে কতটুকু তা আমি বলতে চাই না তা আপনারাই জানেন। আর আমি যে ভুল করেছি আর তা স্বীকার করেছি তা কয়জন করে? আমি যা করেছি তা অতীত হয়ে গেছে। আমি এখন সবকিছু নতুন করে শুরু করেছি। তবে কেন অতীতের কথা আনা হবে। আমি চেষ্টা করছি যতদিন খেলে যাচ্ছি যেন ভালোভাবে থাকতে পারি।’

উল্লেখ্য, নান্নু ১৯৮০ এর দশকের শুরুতে ক্রিকেট নির্বাচকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। ১৯৮৩ সালের ডিসেম্বরে, তিনি পশ্চিমবঙ্গ সফরের জন্য নির্বাচিত হন। সেখানে, তিনি খুব বেশি সফলতা দেখাতে পারেননি, তবে তিনি ১৯৮৪ সালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া কাপে বাংলাদেশ টাইগারদের হয়ে খেলে আরও বেশি সাফলতা দেখাতে পেরেছিলেন। তিনি বর্তমানে জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের প্রধান নির্বাচক হিসেবে রয়েছেন। তবে আশরাফুলকে নিয়ে তার এই ধরনের বক্তব্যের পর তিনি সমালোচনায় পড়েছেন দেশের ক্রিকেট ভক্তদের। আশরাফুল তার বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দূ:খ প্রকাশ করেছেন।

 

 

About

Check Also

ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ের পর মুখ খুললেন সাকিব

ছাত্র আন্দোলনের সময় নীরবতা পালন করে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েন দেশের সেরা ক্রিকেটার সাকিব আল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *