Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আলোচিত সেই শিক্ষার্থীর শিট ছেঁড়া সেই চিকিৎসক লাপাত্তা, বেরিয়ে এলো নতুন তথ্য

আলোচিত সেই শিক্ষার্থীর শিট ছেঁড়া সেই চিকিৎসক লাপাত্তা, বেরিয়ে এলো নতুন তথ্য

মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় নকল না করেও ছাত্রীর ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলার অভিযোগ নিয়ে তোলপাড় চলছে। পরীক্ষার হলের দায়িত্বে থাকা মেডিকেল পরীক্ষকের দিকে সন্দেহের তীর, ঘটনার পর থেকে তিনি লাপাত্তা। আসেন না হাসপাতাল ও কলেজে। বন্ধ ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরও।

ভুক্তভোগী ছাত্রী হুমাইরা ইসলাম ছোয়ার চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়, তিনি শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮২৩ নম্বর কক্ষে মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষা দেন। তার পাশের এক ছাত্র ডিভাইস ব্যবহার করে নকল করছিল। এক ঘণ্টার পরীক্ষায় ৪০ মিনিটের মাথায় একজন মহিলা পরিদর্শক ডিভাইস ব্যবহার করে ছাত্রটিকে ধরে ফেলেন।

হুমাইরা দাবি করেন, ওই নারী পরিদর্শক নকল করা ছাত্রের মতো সন্দেহজনকভাবে তার ওএমআর শিট ছিঁড়ে ফেলেন। পরে হুমাইরার দাবির সত্যতা যাচাইয়ে প্রমাণিত হয় যে তার উত্তরপত্র সঠিক ছিল। পরে দুঃখ প্রকাশ করে তাকে নতুন ওএমআর শিট দেওয়া হয়। কিন্তু সময় কম ছিল। এতেই হুমিরার সব স্বপ্ন শেষ হয়ে যায়।

স্বজনরা জানান, ভর্তিচ্ছু ওই কক্ষে দায়িত্বরত পরিদর্শকের ভুলের শিকার হয়েছেন। তারা এই ঘটনার প্রতিকার চায়।

সে কেন্দ্র ছিল সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধীনে। ঘটনার পর হুমায়রার পরিবার প্রথমে শেরেবাংলা কেন্দ্র ও পরে মেডিকেল কলেজে এসেও কোনো সমাধান পায়নি। অবশেষে ১১ ফেব্রুয়ারি ফল ঘোষণার দিন অধিদপ্তরে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেন হুমাইরা ও তার পরিবার। মন্ত্রী চলে যাওয়ার পর মারধরের ঘটনা ঘটে।

সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলের রেকর্ড থেকে দেখা যায় ওই কক্ষে পরিদর্শকের দায়িত্বে ছিলেন তিনজন চিকিৎসক। তাদের মধ্যে দুইজন নারী এবং অন্যজন পুরুষ। দুই নারী চিকিৎসকের একজন আদিবাসী সম্প্রদায়ের। হুমাইরা বলেছেন যে তার ওএমআর ছিঁড়েছে সে একজন বাঙালি। নথি বলছে, ডা. নাফিসা ইসলামের সঙ্গেই হুমাইরার ওই কাণ্ড ঘটে।

তবে ঘটনার পর থেকে নাফিসা ইসলাম নিখোঁজ রয়েছে। সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। পরিদর্শনে নথিতে দেওয়া তার মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। হাসপাতালে তার সহকর্মীরা তাদের অবস্থান জানাতে পারেনি।

ফলে যার দিকে সন্দেহের তীর নিক্ষেপ করা হয়েছিল তার কাছ থেকে সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে জানা সম্ভব হয়নি।

যদিও পরীক্ষার দায়িত্বে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সহ-সভাপতি মো. সোহেল মাহমুদের দাবি, অভিযোগকারী যা বলছেন তা সত্য নয়। সেদিন এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি।

তিনি বলেন, ‘অভিযোগ আসার পর হল সুপারদের আমি ডাকাই। তাদের তিনজনের সাক্ষাৎকার নেই। তারা বলে, এরকম কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’

এমন অবস্থায় অভিযোগকারী সেই শিক্ষার্থী এবং তার পরিবারও ঘটনার কোন ইতিবাচক ফল আশা করছেন না। তারা জানান, কেন স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে এমন অভিযোগ জানানো হয়েছে ‘সেই অপরাধে’ যিনি মারধরের নেতৃত্বে ছিলেন তাকেই স্বাস্থ্য অধিদফতর তদন্ত কমিটির প্রধান করেছে।

এই অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে কমিটিকে বৈঠক করতে দেওয়া হয়নি। কমিটির চার সদস্য সংবাদের সামনে এড়িয়ে যান। এরপর আফজালুর রহমানকে ফোন করা হলে তিনি বুধবার আসতে বলেন। বুধবার ফোন করা হলে তিনি ওই দিন অফিসে আসতে পারবেন না বলে জানান। পরে গণমাধ্যমে এ নিয়ে কথা হয়।

সব শুনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ সামন্ত লাল সেন বলেছেন হুমাইরার প্রতি কোনো অবিচার হবে না। তিনি বলেন, আমি খুবই দুঃখিত। কারো অবহেলার কারণে একটি মেয়ে কোনোভাবেই বঞ্চিত হওয়া কাম্য নয়। মেয়েটির প্রতি যেন কোনো অবিচার না হয় সেদিকে নজর রাখব।

হুমাইরার পরিবারের দাবি, হুমাইরাকে মেডিক্যাল পরীক্ষক নাফিসার সঙ্গে দেখা করতে হবে এবং বাকি পরীক্ষার্থীদেরও জানানো উচিত সেদিন আসলে কী হয়েছিল।

About Rasel Khalifa

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *