জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জ্যাব) জনস্বাস্থ্য ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনির একটি অডিও ফাঁস হয়েছে,যেখানে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নূরুল আলমকে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। তার কৃপায় অধ্যাপক মোঃ নুরুল আলম উপাচার্যের চেয়ারে বসে আছেন বলে অডিওতে মন্তব্য করেছেন।
সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) কুরিয়ারের মাধ্যমে এ সম্পর্কিত অডিও ক্লিপ সংবলিত ডিভিডি, দায়মুক্তিপত্র প্রত্যাহারের আবেদন ও চিঠি সংবলিত একটি খাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে পাঠানো হয়। খামের ওপর প্রেরকের পরিচয় না থাকলেও চিঠির নিচে লেখা ছিল, ‘ধন্যবাদান্তে : প্রক্টরিয়াল বডির একজন সদস্য’।
তা ছাড়া এই অডিও ক্লিপটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও ছড়িয়ে পড়েছে।
অডিও ক্লিপটির ৩২ সেকেন্ড পর মাহমুদুর রহমান উপাচার্যকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন এবং বলেন, ‘আমাকে নাকি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে।’ তাই আমাকে আইনি আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। তবে ওই… (উপাচার্য) যে আমার জন্য চেয়ারে বসেছে, সেটা সে ভুলে গেছে।
’
জানা যায়, মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে চাকরির প্রলোভনে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ রয়েছে।
কুরিয়ারে ‘যৌন নিপীড়ক জনিকে বাঁচাতে তত্পর উপাচার্য, নেপথ্যে…’ শিরোনামে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান রীতি অনুসারে, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিললে অভিযুক্তকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্ট্রাকচার্ড কমিটি গঠিত হয়। তবে জনির ক্ষেত্রে সেটি করা হয়নি। সিন্ডিকেটের সভাপতি (উপাচার্য মো. নূরুল আলম) সুকৌশলে জনিকে শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যান।
’
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান, সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ শৈবাল ও মাহমুদুর রহমান জনির বিরুদ্ধে জোরপূর্বক দায়মুক্তিপত্র লেখানোর অভিযোগে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি উপাচার্য বরাবর পাঁচ পৃষ্ঠার একটি আবেদনপত্র দিয়েছেন পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের ৪৩তম ব্যাচের এক ভুক্তভোগী ছাত্রী। জানিকে অনাক্রম্যতার চিঠি লিখতে বাধ্য করা হয়। সেই আবেদনপত্রের একটি পিডিএফ ফাইলও কুরিয়ারের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
জোরপূর্বক ছাড়পত্রের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এএসএম ফিরোজ উল হাসান বলেন, এ অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।
জনস্বাস্থ্য ও তথ্যবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনি বলেন, “আমি এমন কিছু বলিনি, অডিও ক্লিপ সম্পর্কেও জানি না।
আর উপাচার্যকে চেয়ারে বসানোর আমি কে?’
পুরো বিষয়টি জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নুরুল আলমকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।