অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদারসহ ১৪ আসামির ২২ বছর কারাদণ্ডের আশা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গত ২২ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করে দুদক। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মীর আহমেদ সালাম তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি আশা করেন।
দুদকের পিপি মীর আহমেদ সালাম জানান, পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে ১০৬ সাক্ষীর মধ্যে ৯৯ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমি তাদের বিরুদ্ধে দুদক আইন ও মানি লন্ডারিং আইনের ২৭(১) ধারায় অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আমরা তাদের ২৭ (১) ধারার অধীনে ১০ বছর এবং মানি লন্ডারিং আইনের অধীনে ১২ বছরের জেল হবে বলে আশা করছি।
কানাডায় ৮০ কোটি টাকা পাচার ও প্রায় ৪২৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার রায় ঘোষণা করবে আদালত।
আজ দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ মামলার রায় ঘোষণা করবেন। গত ৪ অক্টোবর একই আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।
এ মামলার প্রধান আসামি পিকে হালদার। পিকে হালদারকে অর্থ পাচারের অভিযোগে গত বছরের ১৪ মে ভারতের অশোকনগর থেকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—পি কে হালদারের আইনজীবী সুকুমার মৃধা, মেয়ে অনিন্দিতা মৃধা, সহযোগী অবন্তিকা বড়াল ও চাচাতো ভাই শঙ্খ বেপারী, পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার এবং ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার এবং সহযোগী পূর্ণিমা রানী হালদার, অমিতাভ অধিকারী, রাজীব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায়, উত্তম কুমার মিস্ত্রি এবং স্বপন কুমার মিস্ত্রি।
এদের মধ্যে সুকুমার, অনিন্দিতা, অবন্তিকা ও শঙ্খ আগে গ্রেফতার হয়ে হেফাজতে রয়েছে। পিকে হালদারসহ ১০ জন পলাতক।
এদের মধ্যে সুকুমার, শঙ্খ ও অনিন্দিতা এর আগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
এ মামলায় অভিযোগকারীসহ রাষ্ট্রপক্ষের ১০৮ জন সাক্ষীর জবানবন্দি রেকর্ড করেছেন আদালত।
গত বছরের ১০ ফেব্রুয়ারি ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে পিকে হালদারসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপ-পরিচালক মো. সালাহউদ্দিন।
এই মামলার পলাতক আসামিরা হলেন পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, পূর্ণিমা রানী হালদার, উত্তম কুমার মিস্ত্রি, অমিতাভ অধিকারী, প্রীতিশ কুমার হালদার, রাজীব সোম, সুব্রত দাস, অনঙ্গ মোহন রায় ও স্বপন কুমার মিস্ত্রি।
২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী পিকে হালদারের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগে মামলা করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়, পিকে হালদার তার দখলে রেখেছেন ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ। এ ছাড়া টাকা আড়াল করতে বিদেশে পাচার করে মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধও করেছেন।
মামলাটি তদন্ত করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। 8 সেপ্টেম্বর, ২০২২ তারিখে, আদালত অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে।