বাঙালি বাবা ইমরান শরীফের মেয়ে লায়লা লিনাকে হেফাজতে নিতে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করেছেন জাপানি মা নাকানো এরিকো। আবেদনটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের ডকেটে ১৮ নম্বরে রয়েছে।
সোমবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ আবেদনের ওপর শুনানি করবেন। নাকানো এরিকোর আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনি গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
১৩ ফেব্রুয়ারি, হাইকোর্ট রায় দেয় যে বড় জাপানি শিশু জেসমিন মালেকা এবং তার ছোট বোন সোনিয়া তাদের জাপানি মা এরিকো নাকানোর সাথে থাকবেন। মে কন্যা লায়লা লিনা তার বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফের সঙ্গে থাকবেন।
রায়ে বলা হয়েছে, জাপানি নাগরিক এরিকো নাকানো তার প্রথম ও তৃতীয় কন্যাকে নিয়ে বাংলাদেশ বা যেকোনো দেশে থাকতে পারবেন। তবে বাবা সন্তানদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন। একইভাবে দ্বিতীয় কন্যা লায়লা লীনা বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরিফের সঙ্গে থাকবেন। তবে দ্বিতীয় কন্যা সন্তানকে দেখার সুযোগ পাবেন জাপানি মা।
বিচারপতি মামনুন রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আপিলের আংশিক অনুমতি দিয়ে রায় দেন।
আদালতে ইমরান শরীফের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আখতার ইমাম, ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম, অ্যাডভোকেট নাসিমা আক্তার লাভলী। নাকানো এরিকোর পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
এর আগে বাংলাদেশের দুই জাপানি শিশু জেসমিন মালেকা ও লায়না লিনা তাদের জাপানি মায়ের সঙ্গেই থাকবেন বলে রায় দেন ঢাকার জেলা জজ আদালত। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন ইমরান শরীফ।
গত বছরের ৯ মার্চ জাপানি মায়ের দুই শিশু সন্তান জেসমিন মালেকা ও লায়লা লিনাকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার আবেদন নাকচ করে দেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে শিশু দুটির হেফাজত কার কাছে থাকবে সে বিষয়ে তিন মাসের মধ্যে আপিল জেলা জজ আদালতকে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন আদালত। ততদিন পর্যন্ত দুই সন্তান জেসমিন মালেকা ও লায়লা লিনা তাদের মতোই থাকবে।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৭ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে গত বছরের ২৯ জানুয়ারি বাংলাদেশি বাবা ইমরান শরীফ ও জাপানি মা এরিকো নাকানোর দুই সন্তানকে হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন আদালত। দুই নাবালিকা জেসমিন মালেকা ও লায়লা লিনার কল্যাণের কথা মাথায় রেখে এই রায় দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ রায় দেন।