কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে মারধরের বিষয়ে মুখ খুললেন রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী এডিসি সানজিদা। তিনি বলেন, আমার স্বামী একটি ছোট বিষয়কে বড় করে তুলছেন। হারুন স্যারকে আমার স্বামী আগে মারধর করেছে।
মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা বলেন।
সানজিদা আফরিন আজিজুল হক মামুনের স্ত্রী। তিনি ৩১তম বিসিএসের কর্মকর্তা। তিনি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অপরাধ বিভাগে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সেদিনের ঘটনা সম্পর্কে সানজিদা আফরিন গণমাধ্যমকে বলেন, “কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড বুকে ব্যথায় ভুগছিলাম। সেদিন ব্যথাটা একটু বেশি অনুভূত হয়েছিল। তাই ডাক্তার দেখানোর দরকার ছিল। যেহেতু ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল স্যারের (এডিসি হারুন) জুরিসডিকশনের (আওতা) মধ্যে পড়ে তাই ডাক্তারের সিরিয়াল পাওয়ার জন্য আমি স্যারের হেল্প চেয়েছিলাম।’
“আমি যখন স্যারকে বললাম, তিনি আমাকে বললেন, ঠিক আছে আমি আশেপাশে আছি। আমি এসে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলে দিচ্ছি। এরপর স্যার এলেন। আসার পর একটা ডাক্তার ম্যানেজ হলো। এরপর ডাক্তার কিছু টেস্ট দিলেন। আমি ব্লাড টেস্টের জন্য স্যাম্পল দিলাম। ইকো টেস্ট আর ইসিজি করানো হলো।’
সানজিদা বলেন, এই ঘটনার সময় যে ঘরে ইটিটি করা হয়েছিল আমি সেখানেই ছিলাম। ১৫-২০ মিনিট ইটিটি করার পর আমি বাইরে একটা হৈচৈ শুনতে পেলাম। প্রথম যে আওয়াজটা কানে আসে স্যার (এডিসি হারুন) চিৎকার করে বলছেন, ‘ভাই, আমার গায়ে হাত তুলছেন কেন? আপনি তো আমার গায়ে হাত তুলতে পারেন না’।
প্রথমে ভেবেছিলাম অন্য কারো সাথে সমস্যা হতে পারে। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আমার স্বামীকে (আজিজুল হক মামুন) দেখলাম, উনি আসলে ওখানে কী করছিলেন কেন গিয়েছিলেন আমি জানি না। উনাকে টোটালি আউট অব মাইন্ড লাগছিল (মানসিকভাবে স্থির ছিলেন না) এবং খুবই উত্তেজিত ছিলেন। ওনার সঙ্গে আরও কয়েকজন ছেলে ছিল, আমি আসলে তাদের চিনি না। তারা স্যারকে (এডিসি হারুন) মারতে মারতে ইটিটি রুমে নিয়ে এলেন।”
এমন সময় স্যার তার নিজের নিরাপত্তার জন্য যে রুমের কোণে দাঁড়িয়ে ছিলাম তার দিকে দৌড়ে গেলেন। ইটিটি রুমে এত লোক ঢোকে যে (বিব্রতকর পরিস্থিতি) তৈরি হয়। কারণ ইটিটি রুমে রেস্ট্রিকশন (কড়াকড়ি) থাকে। তখন আমি শাউট করছিলাম।’
সানজিদা বলেন, তখন আমার স্বামী তার সঙ্গে থাকা লোকজনকে বলেন, ‘এই ভিডিও কর’। তারপর সবাই ফোন বের করে ভিডিও করতে লাগলো। তারা যখন ভিডিও করা শুরু করে তখন আমি আমার স্বামী এবং তার সাথে থাকা লোকজনের সাথে চিল্লাচিল্লি শুরু করছিলাম। এরপর যারা ভিডিও করছিল তাদের মোবাইল ফোন ধরার চেষ্টা করলে আমার হাতেও একটু ব্যথা লাগে। কারণ আমি চাইনি কেউ আমাকে ওই অবস্থায় ভিডিও করুক। এবং আমি আমার স্বামীর সাথে থাকা ছেলেদের কাউকেও চিনতাম না।”
সেই অবস্থায় আমার স্বামী আমার গায়ে হাত হাত তোলেন এবং স্যারকে বের করার চেষ্টা করছিলেন। তখন বিষয়টি স্যারের কাছে নিরাপদ মনে হয়নি। তারপর স্যার কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। এরপর হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরাও আসেন। ১০-১৫ মিনিট পর, যখন ফোর্স আসে, তারা সেখান থেকে বেরিয়ে যায়,” এমনটি বলেন সানজিদা আফরিন।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে নির্যা”তন করেন এডিসি হারুন। হ”তাহতরা হলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বিজ্ঞান বিষয়ক সম্পাদক শরীফ আহমেদ মুনিম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক এবং ফজলুল হক হলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সভাপতি আনোয়ার হোসেন নাঈম।