সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের যে দুইটি চলচ্চিত্র সাড়া পেয়েছে, তার মধ্যে একটি হলো অনন্ত জলিল অভিনীত এবং প্রযোজিত সিনেমা ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমা। এই ছবিতে অভিনয় করেছেন অনন্ত জলিল এবং তার স্ত্রী বর্ষা। গেল ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত এই থ্রিলার ও অ্যাকশান ধাঁচের ছবিটি আলোচনায় উঠে আসে। মুক্তির বেশ কয়েক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এই ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে হাউসফুল চলছে।
বলা হচ্ছে, ঢাকাই চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটিই সবচেয়ে বড় বাজেটের ছবি। সিনেমাটি নির্মাণে দুই হাত ভরে অর্থ ব্যয় করেছেন অনন্ত। ছবিটির প্রায় ৯০ শতাংশ শুটিং হয়েছে বিদেশে — ইরান, তুরস্ক এবং আফ”গানিস্তানে।
এত বড় বাজেটের ছবিতে অভিনয়ের জন্য অভিনেতা অনন্ত ও বর্ষা কত পারিশ্রমিক পেয়েছেন? সম্প্রতি এক সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে এই দুই তারকাকে সেই প্রশ্ন করা হয়। জবাবে অনন্ত সরাসরি পারিশ্রমিকের পরিমাণ বলেননি। তবে তারা এ সম্পর্কে ধারণা দেন।
অনন্ত বলেন, ইরানের প্রযোজকেরা জিজ্ঞেস করেছিলেন, আপনি (অনন্ত ও বর্ষা) সিনেমায় কত পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন? উত্তরে বলেছিলাম, বাইরের কোনো প্রযোজনায় কাজ করি না। তখন তারা জিজ্ঞেস করে, সেটা করতে হলে কত নিতে হবে? আমি তখন বলেছিলাম, বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের বাজার খুবই ছোট। এমনকি বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় নায়করাও এক হাজার মার্কিন ডলারের বেশি বেতন পান না। তাহলে আমরা সেই পরিমাণের বেশি টাকা চাইতে পারি না।
কিন্তু রেজা হেদায়েতির মতো শিল্পীদের সে দেশে (ইরান) ন্যূনতম বেতন অর্ধ মিলিয়ন ডলার। তারা আসলে অবাক যে আমরা বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেতা, কিন্তু এত কম বেতন পাই কেন? তখন তাদের বললাম- বাংলাদেশে সিনেমার বাজেট কম।
এ সময় বর্ষা বলেন, যেহেতু তারাই মূল প্রযোজক, আমি বলেছিলাম- তবে ফ্রি হবে না। আমাকে কিন্তু টাকা দিতেই হবে। তখন দুজনে মিলে ১৬ লাখ টাকা নিয়েছিলাম। এর পর উচ্চস্বরে হেসে দেন বর্ষা।
অনন্ত কথার পিঠে বলেছিলেন যে, এই ১৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে কারণ ইরানে হাত ধরে রোমান্টিক দৃশ্য করা যায় না। তাই গানের জন্য আমাকে তুরস্ক যেতে হয়েছে। গানটির কস্টিউম বাবদ ১৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে।
‘দিন দ্য ডে’ ইরান-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার একটি অ্যাকশন থ্রিলার মুভি। এটি পরিচালনা করেছেন ইরানি পরিচালক মোর্তেজা আতাশ জমজম। সিনেমাটিতে নিজের নামের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অনন্ত জলিল। যেখানে দেখা যায়, তিনি এবং তার স্ত্রী বর্ষা বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ শাখা সোয়াত (স্পেশাল উই”পনস অ্যান্ড ট্যাকটিকস) এ কর্মরত।
তবে এই ছবিটি নির্মাণের পর ভিন্নভাবে আলোচনায় আসেন অনন্ত জলিল এবং বর্ষা। তাদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্যও হয়। যার কারণে তারা আক্ষেপ নিয়ে আর ভবিষ্যতে কোনো সিনেমায় অভিনয় করবেন না বলেও জানান। তবে সমস্ত সমালোচনা ছাপিয়ে তাদের অভিনীত সিনেমা দেশের প্রেক্ষাগৃহগুলোতে বেশ জনপ্রিয়তার সাথেই চলছে।