নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসার দরকার নেই এমনই এক অভিযোগ উঠেছে সাদিকুল ইসলাম সাদিক নামে এক আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। সাদিকুল ইসলাম উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও মির্জাবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। সম্প্রতি নির্বাচনী প্রচারণা সভায় সাদিকুল ইসলাম এমন বক্তব্য দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার বক্তব্যের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে উপজেলাজুড়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
নির্বাচনে ভোট না দিলে কেন্দ্রে আসতে নিষেধ করে এমন বক্তব্যের কারণে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে, অপর এক আদেশে বিতর্কিত নেতার বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। স্থগিত হওয়া ইউনিয়ন টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়ন।রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা-২ এর উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত স্থগিতাদেশ মধুপুর নির্বাচন অফিসে পৌঁছেছে বলে নিশ্চিত করেছেন নির্বাচন কর্মকর্তা খন্দকার মোহাম্মদ আলী ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন রিটার্নিং কর্মকর্তা করুণা সিন্ধু চাকলাদার। এর আগে সন্ধ্যায় নৌকার প্রার্থী মো. আবদুর রহিম সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার দেওয়া নোটিশের জবাব দেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে কেন অবহিত করা হবে না- ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লিখিত জবাব চেয়ে শনিবার নোটিশ জারি করা হয়েছে।
জবাব দেওয়ার পর সচিবালয় থেকে স্থগিত আদেশের অনুলিপি ইমেইলে মধুপুর পৌঁছেছে। টাঙ্গাইলের মধুপুরের ৮টি ইউনিয়নের একটি অরণখোলা ইউনিয়নে ১৫ জুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়ায় আগামী ১৫ জুন অরণখোলা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনের তফসিল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। অপর এক নির্দেশনায় বিতর্কিত নেতার বিরুদ্ধে নিয়মিত (জিআর) মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন রিটার্নিং কর্মকর্তা করুণা সিন্ধু চাকলাদার। এর আগে বুধবার বিকেলে অরণখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগের নৌকার চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুর রহিমের পক্ষে নির্বাচনী সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে মির্জাবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাদিক ভোটকেন্দ্রে না আসার হুমকি দেন। বৃহস্পতিবার রাতে তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেস// বুকে ভাইরাল হয়। শনিবার দেশের জনপ্রিয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে তা প্রচারিত হয়।
ভিডিওতে দেখা যায়, সাদিকুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন- ১৫ তারিখ সারাদিন ভোট হবে এবং নওকা মার্কায় ভোট হবে। আপনারা ভোট দেবেন। যারা নৌকা মার্কায় ভোট দেবেন তারাই কেন্দ্রে আসবেন। আর যারা নৌকায় ভোট দিতে অনিচ্ছুক তারা দয়া করে কেন্দ্রে আসবেন না। তবে আমরা কাছেই থাকব। এখানে ২৪০০ ভোট আছে, দুই হাজার ভোট দিলে দুই হাজার ভোট পেতে চাই। সাদিকুল ইসলাম বলেন- যেকোনো মূল্যে নৌকাকে বিজয়ী করতে হবে। এ জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগের নেতারা দুর্গ গড়ে তুলবেন। আমাদের যা প্রয়োজন আমরা ব্যবহার করব।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতার এমন আলোচিত বক্তব্যের পর থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারদের মধ্যে এক প্রকার আতঙ্ক বিরাজ করছে। বুধবার বিকেলে উপজেলার অরণখোলা ইউনিয়নের আমলীতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুর রহিমের নির্বাচনী সভায় সাদিকুল এ মন্তব্য করেন। তার এই নির্বাচনী প্রচারনায় এমন বক্তব্যকে কেন্দ্র করে স্থানীয় পর্যায়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তার এমন বক্তব্যের কারনে উক্ত এলাকায় নির্বাচনকে স্থগিত করা হয়েছে এবং এই বক্তব্য দেওয়া প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যাবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিগন।