হিমাগার পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলুর দাম নিশ্চিত করতে স্থানীয় জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে মঙ্গলবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশ অনুসারে, জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যে, বুধবার অর্থাৎ আজ থেকে প্রতি কেজি ২৬ বা ২৭ টাকায় কোল্ড স্টোরেজের (হিমাগর) আলু বিক্রির জন্য একজন মনোনীত কর্মকর্তার উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে।
সোমবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়ে সব উপ-প্রশাসককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে এই সিদ্ধান্তটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য নিয়ন্ত্রণ আইন-১৯৫৬-এর ৩(২)(ই) অনুযায়ী নেওয়া হয়েছে।
আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে গত সোমবার আলু আমদানির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে কোল্ড স্টোরেজ ও খুচরা পর্যায়ে আলুর দাম নির্ধারণ করেছিল সরকার। তবে সরকারি সংস্থাকে মাঠে আনার পরও নির্ধারিত মূল্য বাস্তবায়ন করা যায়নি।
খুচরা বাজারে এখন নির্ধারিত দ্বিগুণ দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। গত চার দিনে আলুর দাম কেজিতে অন্তত ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়।
রাজধানীর অন্যতম কাঁচাবাজার কারওয়ান বাজারে সরেজমিনে দেখা যায়, খুচরা বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। প্রতি পাল্লা বা পাঁচ কেজি ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা।
খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, হিমাগারগুলো বেশি দাম নিচ্ছে। অন্যদিকে হরতাল-অবরোধের কারণে রাজধানীতে আলু আসছে তুলনামূলক কম।
কারওয়ান বাজারের খুচরা আলু বিক্রেতা মো. আলম বলেন, ‘আমরা আড়ত থেকে কিনে এখানে বিক্রি করি। যে দামে কিনি, তার চেয়ে কিছু লাভ করে বিক্রি করি। মোকামে দাম বেশি।
কম দামে কেনা যায় না, এর জন্য দাম বেশি।
ধানমন্ডি থেকে জাকির হোসেন বলেন, ‘দাম বেশি নেওয়ার কারণ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। তারাই বেশি দাম রাখে। এতে ভুগতে হয় আমাদের। বাজার যদি সরকার ঠিকমতো দেখে, পদক্ষেপ নেয়, তাহলে দাম নিয়ন্ত্রণে আসবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, হিমাগার ও খুচরা পর্যায়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে আলু বিক্রি করছে আলু ব্যবসায়ীরা। জনস্বার্থে আলুর বাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসকরা তাদের জেলায় হিমাগার থেকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রির ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
এর আগে সরকার হিমাগারে প্রতি কেজি আলুর বিক্রয়মূল্য ২৬ থেকে ২৭ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু সরকার নির্ধারিত দামে কোল্ড স্টোরেজ ও খুচরা কোনো পর্যায়েই আলু বিক্রি হচ্ছে না।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে ২০২০-২১ সালে আলু উৎপাদিত হয়েছে ৯৯ লাখ টন ও রপ্তানি হয়েছে ৬৮ হাজার ৭৭৩ টন; ২০২১-২২ সালে উৎপাদিত হয়েছে এক কোটি দুই লাখ টন ও রপ্তানি হয়েছে ৭৮ হাজার ৯১০ টন এবং ২০২২-২৩ সালে উৎপাদিত হয়েছে এক কোটি ১১ লাখ টন ও জানুয়ারি পর্যন্ত রপ্তানি হয়েছে ১৩ হাজার টন।
চলতি বছরের শুরুতে কৃষিমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে বছরে এক কোটি টনের বেশি আলু উৎপাদিত হয়েছে। প্রতি বছর আমাদের চাহিদা ৮০ লাখ টন, বাকি ২০ লাখ টন রপ্তানির জন্য সুযোগ থাকে।