Friday , November 22 2024
Breaking News
Home / International / ‘আর মাত্র ৬ মাস বাঁচবো, আমার এই কঠিন অসুখের কথা কাউকে বলবেন না ’

‘আর মাত্র ৬ মাস বাঁচবো, আমার এই কঠিন অসুখের কথা কাউকে বলবেন না ’

পৃথিবীতে এমন এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায় যা মানুষকে নাড়িয়ে দেয় মনের ভেতর থেকে। আর এই ধরণের ঘটনা অহরহ হয়ে থাকে সারা পৃথিবীতে। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম টুইটার এ একটি পোস্ট কাঁদাচ্ছে এমনি একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে।‘আমার আর মাত্র ছয় মাস সময় বাকি আছে। আমার ক্যা’ন’সা’রে’র কথা বাবা-মাকে বলবেন না’— এভাবেই ক্যা’ন’সা’র আক্রান্ত ছয় বছর বয়সী এক শিশু চিকিৎসকের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন। সম্প্রতি ক্যা’ন’সা’রে’র চতুর্থ ধাপে ভোগার পর মা’রা’ যাওয়া এই শিশুর সেই কথা টুইটারে টুইট করেছেন ভারতের হায়দরাবাদের এক নিউরোলজিস্ট। তার সেই টুইট মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়েছে। হৃদয় নাড়া দেওয়া শিশুটির এই কথা ঝড়িয়েছে অনেকের চোখের পানিও।

সম্প্রতি, অ্যাপোলো হাসপাতালের ডাক্তার সুধীর কুমার এমন একটি ছোট শিশুর এমন অসাধারণ ধৈর্য এবং সাহসিকতার কথা স্মরণ করে একটি হৃদয় বিদারক টুইট করেছেন। মানু (ছদ্মনাম) নামের শিশুটির মৃ’ত্যু’র’ পর ৫ জানুয়ারি তার করা এই টুইটটি ইতিমধ্যে ১০ লাখের বেশি মানুষ পড়েছেন।

একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ডাক্তার সুধীর কুমার অন্য দিনের মতো হাসপাতালের বাইরে রোগী দেখতে ব্যস্ত ছিলেন। এমন সময় হাসপাতালের বাইরের ওয়ার্ডে আসেন এক যুবক দম্পতি। তারা ডাক্তারকে বলল, ‘মানু বাইরে অপেক্ষা করছে। তার ক্যা’ন্সা’র’ হয়েছে। কিন্তু আমরা তাকে বলিনি। তাকে দেখুন এবং পরামর্শ দিন। তবে আপনি তাকে যে চিকিৎসা দেবেন সে সম্পর্কে কিছু বলবেন না। পরে মানুকে হুইলচেয়ারে করে হাসপাতালের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তার সুধীর সে কথা স্মরণ করে হাসলেন। সে সময়ে তাকে আত্মবিশ্বাসী এবং খুব স্মার্ট মনে হয়েছিল।’

জানা যায়, মানুর ম’স্তি’ষ্কে’র’ বামপাশে চতুর্থ স্তরের গ্লিওব্লাস্টোমা ক্যা’ন’সা’র’ ধরা পড়েছিল। যে কারণে তার ডান হাত এবং পা প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হয়। তার ক্যা’ন’সা’রে’র’ অস্ত্রো’প’চা’র এবং কেমো’থে’রা’পি’ দেওয়া হয়েছিল। পরে সে খিঁচুনিতেও ভোগে; যা ম’স্তি’ষ্কে’র ক্যা’ন’সা’রে’র’ কারণে হয়েছিল। চিকিৎসক সেদিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, তারা হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার সময় মানু তার বাবা-মাকে একটু বাইরে যেতে বলে। আমার সাথে একান্তে কিছু কথা বলতে চায় সে। মানু সেদিন সুধীর কুমারকে বলেছিলেন, ‘ডাক্তার, আমি এই রোগের ব্যাপারে সবকিছু আইপ্যাডে পড়েছি। আমি জানি, আমি আর মাত্র ৬ মাস বাঁচবো। কিন্তু আমি বাবা-মাকে এটা বলিনি। কারণ তারা বিপর্যস্ত হয়ে পড়বেন। তারা আমাকে অনেক ভালোবাসেন। দয়া করে, এসব কথা তাদেরকে বলবেন না।’

শিশুটির এই কথাগুলো সত্যিই নাড়িয়ে দিয়েছে ডাক্তারকে। সুধীর বলল, ‘আমি একটু নড়েচড়ে বসলাম। আমি তাকে বললাম, আপনার কথা রাখার চেষ্টা করব। আমি তার বাবা-মাকে ডেকে বললাম, মানুকে বাইরে রেখে আমার সাথে কথা বলতে। পুরো বিষয়টি তাদের সাথে শেয়ার করলাম। ডাক্তার বলেছিলেন যে তিনি মানুর সাথে তার প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবেন না। কারণ এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে পরিবারের জন্য একইভাবে চিন্তা করা জরুরি। ৯ মাস পর আবারও চিকিৎসক সুধীর কুমারের কাছে আসেন দম্পতি। ডাক্তার তাদের প্রথম দর্শনেই চিনে ফেলেন এবং মানুর শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান।

জবাবে মানুর বাবা-মা জানান, ‘ডাক্তার, আপনার সাথে সাক্ষাতের পর আমরা মানুকে নিয়ে দারুণ একটি সময় কাটিয়েছি। সে ডিজনিল্যান্ডে যেতে চেয়েছিল এবং আমরা তাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু এক মাস আগে আমরা তাকে হারিয়ে ফেলেছি। আমাদের আজকের এই সাক্ষাৎ কেবল আপনাকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য। কারণ আপনি সবচেয়ে ভালো ৮টি মাস আমাদেরকে উপহার দিয়েছিলেন।’

About Rasel Khalifa

Check Also

বাংলাদেশ নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিকের অভিযোগ, যা বলল যুক্তরাষ্ট্র

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ নিয়ে ভারতীয় মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন দাবি তোলা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *