বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন উপাচার্য অনেক উচ্চ পর্যায়ের শিক্ষিত মানুষ। তাকে শিক্ষাবিদ বললেও ভুল হবেনা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মানে অনেক বিশাল একটি ব্যাপার। একজন উপাচার্য খুব বিচক্ষণ ও জ্ঞানবুদ্ধিসম্পন্ন হয়ে থাকেন। তার প্রত্যেকটি কথা ও কাজ অতি মূল্যবান এবং শিক্ষণীয়। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য বলেছেন ডাক্টার ইঞ্জিনিয়ার বানাচ্ছি কিন্তু মানুষ বানচ্ছি কতটুকু।
শিক্ষাবিদ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষকদের ওপর লাঞ্ছিত ও লাঞ্ছনার ঘটনা সমাজের সবাইকে বিব্রত করেছে। এর প্রধান কারণ শিক্ষার্থীদের এখন মানবিক পড়ানো হচ্ছে না। আমরা শুধু জিপিএ-৫ পেতে ব্যস্ত। মানুষের শিক্ষা একটি বড় প্রয়োজন। আমরা ছাত্রদের ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার বানাচ্ছি। কিন্তু আমি কতটা মানুষ তৈরি করছি তা নিয়ে ভাবি না।
গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন। এই শিক্ষাবিদ আরও বলেন, মানবিক শিক্ষা, সততা শেখানো, মূল্যবোধ শেখানো, মানুষকে ভালোবাসা শেখানোর পাঠ্যসূচিতে শিক্ষার্থীদের গুরুত্ব দিচ্ছি না। এটি এমন অবক্ষয়ের প্রধান কারণ। এছাড়াও, বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।
অধ্যাপক আরেফিন সিদ্দিক আরও বলেন, আমরা শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে মানুষ হওয়ার শিক্ষা বাদ দিয়েছি। তাই এসব অমানবিক ঘটনা বেড়েছে। নড়াইলে সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটেছে। একজন অধ্যক্ষের পক্ষে সবার উপস্থিতিতে জুতার ফিতা পরানো কীভাবে সম্ভব? অধ্যক্ষ অপরাধ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনেক উপায় রয়েছে। মানুষকে মর্যাদা না দেওয়ার একটা উপসংস্কৃতি গড়ে উঠেছে আমাদের মধ্যে। এই উপসংস্কৃতি থেকে সবাইকে বেরিয়ে আসতে হবে। অন্যথায় আমাদের চড়া মূল্য দিতে হবে। আশা করি সরকারের নীতিনির্ধারকরা বিষয়টি নিয়ে ভাববেন।
প্রসঙ্গত, শুধু বড় বড় ডিগ্রী অর্জন করলেই হবেনা তার সাথে সাথে ঃটে হবে মানুষের মত মানুষ। মানুষের গুণাবলী যদি একজন মানুষের মধ্যে না থাকে তাহলে যত বড়ই ডিগ্রী অর্জন করা হোক না সেটা কোনো কাজে আসবে না। তাই সর্বপ্রথম মানুষ হতে হবে তাহানলে জীবনের সকল অর্জন ভেস্তে চলে যাবে।