কখনো রাজনৈতিক, আবার কখনো ব্যক্তিগত নানা বিষয় নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের শিরোনামে আসেন জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিক। আর এরই ধারাবাহিকতায় এবার ছেলে এরিক এরশাদের ওপর মানসিক অত্যাচারের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বেশ চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
মায়ের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সন্ধ্যার মধ্যে বিদিশাকে পুলিশের সহায়তায় প্রেসিডেন্ট পার্কের বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার অনুরোধও করেন এরশাদপুত্র।
এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশিদকে ডেকে মা বিদিশার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
কাজী মামুনুর রশীদের সঙ্গে এরিকের কথোপকথনের একটি অডিও পাওয়া গেছে।
অডিওতে বলতে শোনা যায়- আয়েশা নামে একটি মেয়ে আছে। আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের অভিযোগ এনে আয়েশাকে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু তার সঙ্গে আমার কোনো শারীরিক সম্পর্ক নেই।
মা বিদিশাকে ‘মীরজাফর’, এরশাদ শিকদারের সঙ্গে তুলনাও করেন এরিক। এরশাদপুত্র বলেন, ‘আমাকে বাঁচানো জরুরি। আজ যদি সে (বিদিশা) এই বাড়িতে থাকে, আমি এই বাড়িতে থাকব না।’
এ বিষয়ে জানতে এরশাদ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান কাজী মামুনুর রশীদ বলেন, এরিক এরশাদ এখন তার মায়ের কাছে বন্দি। আমরা যদি এরিককে মিডিয়া সহ আমাদের সকল (ট্রাস্ট) সদস্যদের সামনে খোলাখুলি কথা বলতে দেই তাহলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
মামুনুর রশীদ বলেন, ‘এরিক আমার কাছে সাহায্য চেয়েছিল। তার মা তাকে ‘মানসি’ক নি’র্যা’ত’ন করে। আমার কাছে তার অডিও বার্তা আছে। কারা এই জিডিতে স্বাক্ষর করেছে তা তদন্ত করে দেখা উচিত।’
এরশাদ ট্রাস্টের সদস্য অ্যাডভোকেট রুবায়েত বলেন, এরিকের নিরাপত্তার বিষয়ে আজ ট্রাস্ট মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘এরিক অবরুদ্ধ। এরিকের মা বিদিশা মাসখানেক আগে এরিকের কাছ থেকে মোবাইল ফোন নিয়েছিলেন।
অন্যদিকে একটি সূত্র জানায়, এরশাদ মূলত ট্রাস্টের অর্থ ও সম্পত্তি নিয়ে মূলত কারকারী। কারণ এই ট্রাস্টে সাড়ে ১৫ কোটি টাকার এফডিআর জমা হয়েছে। এ থেকে মাসে আয় হয় ৬ লাখ টাকা। এ ছাড়া গুলশানে দুই হাজার বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে ট্রাস্টের অধীনে। এ থেকে মাসে ৪৫ হাজার টাকা আয় হয়। বনানীতে মাসে ২৫ হাজার টাকা আয়ের একটি ফ্ল্যাট আছে। গুলশানে একটি দোকান আছে যেখানে মাসে দুই লাখ টাকা আয় হয়। রংপুরে একটি হিমাগার আছে। এই হিমাগারের সব খরচ বাদে বার্ষিক আয় ৩০ লাখ টাকা। এরিক ট্রাস্টের মাধ্যমে এই সমস্ত অর্থের সুবিধাভোগী।
আর এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোচনার এক পর্যায়ে এরিক এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার লক্ষ্যে বিদিশা সিদ্দীকের মুঠো ফোনে কল করা হলেও, তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি। ফলে এ বিষয়ে এরিক এরশাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।