ঢাকাই সিনেমার তুমুল জনপ্রিয় ও খ্যাতিমান একজন অভিনেতা আজিজুল হাকিম। অভিনয়ের মুগ্ধতা ছড়িয়ে যুগের পর যুগ ভক্তদের মাতিয়ে রেখেছেন তিনি। এদিকে করোনার পাশাপাশি শারীরিক অসুস্থতার কারনে দীর্ঘদিন অভিনয় জগতে থেকে দূরে সরে ছিলেন গুণী এই অভিনেতা। তবে পরিস্থিতি কিছুটা অনুকূলে আসতেই আবারো অভিনয়ে ফিরেছেন তিনি।
ব্যক্তি জীবনে এই অভিনেতা মার্জিত, সর্বদা হাসিমুখে থাকতেই পছন্দ করেন। সব মিলিয়ে কেমন আছেন? বর্তমানে অভিনয়ে ব্যস্ততা কেমন? উত্তরে আজিজুল হাকিব বলেন, ভালো আছি। সরকারি অনুদানের ‘গলুই’ ছবিতে অভিনয় করছি। এস এ হক অলীক পরিচালক হিসেবে ইতিপূর্বে সিনেমায় তার কারিশমা দেখিয়েছেন। ‘গলুই’ তার অতীতের সব কাজকে ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা রাখি। তিনি আরও বলেন, গলুইতে আমার চরিত্র একজন বাবার।
শাকিব খানের বাবার চরিত্রে অভিনয় করছি। এ নায়কের সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতাও ভালো। শাকিব শুধু দেখতেই সুদর্শন নয়, অভিনয়ও অনেক পরিশীলিত ও মার্জিত। ছোট পর্দায় আপনার কাজ কেমন চলছে? এ অভিনেতা বলেন, মধ্যে আমি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলাম। মহামারিতে আক্রান্ত হয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেতে হয়েছে। একমাত্র আল্লাহর রহমত আর আপনাদের সবার দোয়ায় দ্বিতীয় জীবন ফিরে পেয়েছি। আমি হয়তো অসুস্থ না হলে বুঝতামই না যে, দর্শক আমাকে এত ভালোবাসেন। ভালোবাসার এই ঋণ শোধ হওয়ার নয়। অনেক দিন পর কায়সার আহমেদের ‘গোলমাল’ ও ‘জাদুনগর’- নাটকে কাজ করছি। তাছাড়া দীপ্ত টিভির ধারাবাহিক ‘দেনা পাওনা’য় অভিনয় করছি। মঞ্চ থেকে অনেক শিল্পীর অভিষেক হয়। সময়ের ব্যবধানে অনেক সময় দেখা যায় অনেকেই মঞ্চকে সময় দিতে চান না বা আগ্রহবোধ করেন না। বিসয়টিকে কিভাবে দেখেন? উত্তরে আজিজুল হাকিম বলেন, মঞ্চই শিল্পীর ‘বেইজ’ তৈরি করে দেয়। একজন প্রকৃত শিল্পীর আঁতুড় ঘর মঞ্চ। আমিও বেশ কিছুদিন ধরে এই জায়গা থেকে দূরে ছিলাম। অবশ্য আশার কথা হচ্ছে- অচিরেই দর্শকরা আমাকে মঞ্চে দেখতে পাবেন। মাসুম রেজার নির্দেশনায় ‘জনকের অনন্ত যাত্রা’ নাটকে। নাটকটিতে আমার চরিত্র হচ্ছে টুঙ্গীপাড়ার মসজিদের ইমাম সাহেবের। একজন অভিনয় শিল্পীর সবচেয়ে বড় পাওয়া দীর্ঘদিন জনপ্রিয়তা ধরে রাখা। যা আপনার ক্ষেত্রে শতভাগ প্রযোজ্য। এর রহস্য কি? এ অভিনেতা বলেন, একজন অভিনয় শিল্পীর সবচেয়ে যে বড় বিষয় থাকে অভিনয়কে হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করা এবং ভালোবাসা। যেখানে ভালোবাসা নেই সেখানে যেমন শূন্যতা অনুভব হয়। ঠিক তেমনি অভিনয়ের প্রতি আমি শতভাগ ভালোবাসা রাখি। নিজ পেশার প্রতি ভালোবাসাই আজ আমাকে আজিজুল হাকিম হতে সহযোগিতা করেছে।
উল্লেখ্য, ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৯৩ সালে চিত্রনাট্যকার জিনাত হাকিমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন বাংলার অন্যতম গুণী এই অভিনেতা। বর্তমানে দুই সন্তানের অভিভাবক তিনি। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে বেশ ভালই রয়েছেন আজিজুল হাকিম। তবে মাঝে মধ্যেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয় তাকে।