ওমর সানি-জায়েদ চড় কান্ডে সুত্রপাত অভিনেত্রী মৌসুমীকে নিয়ে বিষয়টির সত্যতা কতটুকু জানতে মৌসুমীর সাথে অনেকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার পক্ষ্য থেকে কোন প্রকার সাড়া পাওয়া যায়নি। ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশের ২৬ ঘন্টা মাথায় গিয়ে হঠাৎ একটি অডিও বার্তা সামাজিক বার্তা ছড়িয়ে পড়ে। তবে কে বা কারা এই অডিও বার্তাটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। পরবর্তীতে একাধিকবার মৌসুমীর নম্বরে কল ও টেক্সট করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি তার সাথে।
অভিনেতা ওমর সানী ও মৌসুমী বিষয়টি এখন টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে। ডিপজলের ছেলের বিয়েতে জায়েদ খান ওমর সানিকে চড় মেরে ওমর সানিকে পিস্তল দিয়ে গুলি করার হুমকি দিলে এ ঘটনা ঘটে। গত ১০ জুন রাতে রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি অস্বীকার করেছেন জায়েদ খান ও ডিপজল। কিন্তু ওমর সানি নিজের চড় মারার কথা স্বীকার করে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তবে ঘটনার তিন দিন পর ১৩ জুন বিকেলে সাংবাদিকদের কাছে অডিও বার্তা দেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এই অডি বার্তায় সানি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং জায়েদের পক্ষে কথা বলেছেন। এরপর আবার শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। নেট ওয়ার্ল্ডে এই অডিও বার্তা ভাইরাল হয়েছে। এরপর সানি সরাসরি ফেসবুক লাইভে এসে তার অভিযোগের বিষয়ে অনড় থাকেন। এরপর পানি কম ঘোলা হয়।
তাদের ছেলে ফারদিন মুখ খুললেন। আবার শুরু হয় তোলপাড়। একের পর এক বার্তা দিয়ে সত্যিকারের সিনেমাগুলো গল্পের মতো হয়ে গেছে। শেষ পর্যন্ত ফারদিনের বক্তব্যই উঠে আসে। আসলে রাগেই এই অডিও বার্তা দিয়েছেন মৌসুমী। তবে তার মা (মৌসুমী) তার বাবার (ওমর সানির) বিরুদ্ধে কেন কথা বললেন, জানতে চাইলে ফারদিন গণমাধ্যমকে বলেন, এ বিষয়ে আমি আমার মায়ের সঙ্গে কথা বলেছি, মা বললেন, দেখ বাবা, আমি রাগ করে বলেছি। তোর বাবার উপর একটু রাগ করেছিলাম। এটাই বলেছি। মিথ্যা বলছি কিন্তু সানি সরাসরি বলেনি। আমি যাই বললাম রাগ করেই বললাম। এ প্রসঙ্গে ফারদিন আরও বলেন, আমি আমার মাকে (মৌসুমী) জিজ্ঞেস করেছি। আমি বললাম মা তুমি ওই অডিও মেসেজের শুরুতে আর শেষে কি বললে? জানতে চাইলাম, একটা বিশ্রী পরিবেশ তৈরি হয়েছে। (কারণ, পরিস্থিতি কুৎসিত নয়) এটি ঘরোয়াভাবে সমাধান করতে হবে। এটাকে মিউচুয়াল করতে মিডিয়ার কাছে যেতে হবে না। চলচ্চিত্রে সিনিয়ররা আছেন যারা সমস্যার সমাধান করতে পারেন।
মৌসুমী জায়েদ খানের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে ফারদিন বলেন, এক জায়গায় দেখলাম আমার মা বলতেন ওমর সানি মিথ্যার সঙ্গে জড়িত। আমার মা যদি কোথাও এমন বক্তব্য দিয়ে থাকেন, আমি বলতাম এটা ঠিক নয়। মা আমার সাথে কথা বললেন। পত্র-পত্রিকা ও টিভিতে কোনো আলোচনা বা সংবাদ প্রকাশিত হোক তা তিনি চাননি। বাবা-মা-সন্তানের সম্পর্ক প্রসঙ্গে এই তারকা বলেন, সবকিছু ঠিকঠাক আছে। আমি বাবাকে পাচ্ছি, মাকে পাচ্ছি। স্বামী-স্ত্রীর অনেক বিষয়ে সমস্যা আছে। আমি বিবাহিত, আমরাও তাই। এটাই স্বাভাবিক। অভিভাবক দুজনই চান বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি হোক। এদিকে সোমবার (১৩ জুন) বিকেলে ফেসবুক লাইভে ওমর সানি বলেন, আমি ২৬ বছর আগে বিয়ে করেছি। মৌসুমী আমার স্ত্রী, আমার সন্তানের মা। আমার দুটি ছোট বাচ্চা আছে। আমার ছেলেরও বিয়ে হয়েছে। মৌসুমীকে অসম্মান করে একটা কথাও বলব না। তিনি জায়েদ খানের পক্ষে কথা বলছেন কিনা আমি জানি না।
উল্লেখ্য, জায়েদ খান-ওমর সানির চড়কান্ড নিয়ে নিয়ে মুখ খুলেছেন মৌসুমী-সানির ছেলে ফায়দিন। জায়েদ খানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগও করেন ফারদিন। ফারদিন গণমাধ্যমকে বলেন, জায়েদ খানের কথা সবাই জানেন তিনি কেমন মানুষ। শুধু আমার মা নয়, তিনি প্রায় সবাইকে হয়রানি করে আসছেন। সে আমার বাবার পাশাপাশি আমার মাকেও অপমান করেছে। কিন্তু আম্মু মনে করে ব্যাপারটা সিম্পিল ব্যাপার, পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকুক। আমরা নিজেরাই এর সমাধান করব। ফারদিন বলেন, তার মা উদ্বেগ প্রকাশ করে কথাগুলো বলেছিলেন যে এতটা কাদামাটি হবে, সেইটা সে বুঝতে পারেননি। যেন ব্যাপারটা দ্রুত ঠান্ডা হয়ে যায় সেই বিষয়টা নিয়েই সবাই চেষ্টা করবেন আশাকরি।