বাংলা ছোট পর্দার অত্যন্ত জনপ্রিয় ও সাড়া জাগানো ‘কমেডিয়ান’ অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিক। অভিনয়ে জগতে পা রাখার খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কোটি ভক্তের মনে জায়গা করে নেন তিনি। এই মুহুর্তে একদিকে যেমন সংসার সামলাচ্ছেন, তেমনই অন্যদিকে ব্যবসা ও অভিনয়ও চালিয়ে যাচ্ছেন গুণী এই অভিনেতা।
এদিকে সম্প্রতি এবার নিজের ব্যক্তি ও কর্মজীবন নিয়ে কথা বলেছেন সংবাদ মাধ্যম-এর সঙ্গে।
প্রতিবেদক: কেমন আছেন এবং বর্তমানে কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
সিদ্দিকুর রহমান: হ্যাঁ, আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। বর্তমানে আমি আমার কাজ, ব্যবসা ও সংসার নিয়ে ব্যস্ত আছি। এক মাসকে তিন ভাগে ভাগ করার চেষ্টা করছি, দশ দিন অভিনয়ের জন্য, দশ দিন ব্যবসার জন্য এবং বাকি দশ দিন সংসারের জন্য। এসবের মাঝেও আমি আমার এলাকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। নিয়মিত এলাকায় যাচ্ছি, সেখানে বিভিন্ন কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করছি।
প্রতিবেদক: সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি?
সিদ্দিকুর রহমান: পরিকল্পনা অবশ্যই আছে। কারণ যে কোনো জায়গা থেকে সার্ভিস করা যায় কিন্তু একটা প্লাটফর্ম দরকার। একজন নেতা যা পারেন, একজন অভিনেতা তা পারেন না। একজন নেতা জনগণের পাশে দাঁড়াতে পারেন এবং সাহায্যের হাত বাড়াতে পারেন যেমন একজন শিল্পী পারেন না। তবে এখন আমার পরিচয় শুধুই অভিনেতা।
প্রতিবেদক: সম্প্রতি মিডিয়ায় তারকাদের বিচ্ছেদ নিয়ে বেশ চিন্তিত দেখা যাচ্ছে!
সিদ্দিকুর রহমান: সারা বিশ্ব মিডিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। সাধারণ মানুষ তারকা অনুসরণ করে এবং অনুকরণ করে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমি মনে করি এটা দুঃখজনক। আমাদের ঘন ঘন বিবাহবিচ্ছেদ কোনভাবেই কাম্য নয়। এটা আমাদের বাচ্চাদের বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও খুবই বিব্রতকর, যা তারাও চায় না। এ ধরনের ঘটনায় তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এটা আমার জীবনেও ঘটেছে।
যে পরিবারগুলো দীর্ঘদিন ধরে একসাথে আছে কিন্তু ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নেয়, এটা খুবই দুঃখজনক। বাবা-মায়ের বিবাহ বিচ্ছেদের পর শিশুরা কষ্ট পায়। তবে তাদের দোষ নেই। তাহলে এসবের জন্য তাদের শাস্তি হবে কেন? কিন্তু উভয়কেই সরি বলার মানসিকতা থাকতে হবে। তবেই আমরা একসঙ্গে থাকতে পারব।
প্রতিবেদক: আপনার সন্তান আরাশ বর্তমানে কার সাথে থাকছেন?
সিদ্দিকুর রহমান: আদালতের আদেশ অনুযায়ী আরাশ সপ্তাহে ৫ দিন মায়ের কাছে থাকে এবং বাকি ২ দিন আমার কাছে থাকার কথা থাকলেও মাঝে মাঝে তাকে নিয়ে আসি। পড়ালেখার ক্ষতির কথা ভেবে তাকে নিয়মিত আনা হয় না। কারণ পৃথিবীতে মা হচ্ছে সন্তানের প্রাথমিক বিদ্যালয়। তাই সন্তানদের মা থেকে মানুষ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই আমি চাই আরাশ তার মায়ের কাছে থাকুক যতক্ষণ সে মাকে ডাকতে পারে।
প্রতিবেদক: আপনি কি এখনও আপনার প্রাক্তন স্ত্রীর সাথে যোগাযোগ করছেন?
সিদ্দিকুর রহমান: না, তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। আমি কয়েকবার চেষ্টা করেছি, কিন্তু সে এটা চায়নি। আমি শুধু ছেলে আরশের জন্যই যোগাযোগ করি যেটা পরিবার থেকে পরিবার। আরশের জন্য কোনো সিদ্ধান্ত থাকলে দুই পরিবার একসঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রতিবেদক: বিয়ে নিয়ে কী ভাবছেন?
সিদ্দিকুর রহমান: না, আমি এই মুহূর্তে এসব নিয়ে ভাবছি না। কারণ ভূমিকম্পে বাড়িটি ভেঙে পড়লে। সেই ঘর মেরামত করতে সময় দিতে হয়, ময়লা পরিষ্কার করতে হয়। হয়তো আমি কিছু ভুল করেছি তাই আজ ডিভোর্স হয়ে গেছে। সেই ভুলগুলো শোধরানোর চেষ্টা করছি। এসব সংশোধন করার পর যখন মনে হবে আমি বিয়ের জন্য পারফেক্ট, তখন আবার বিয়ের কথা ভাবব। তার আগে নয়। সবচেয়ে বড় কথা, আরাশ যতক্ষণ না বুঝে ও নিজেকে স্থির করতে না পারে ততক্ষণ আমি বিয়ের কথা ভাবছি না। সে যখন পারবে তখন ভাবব। কিন্তু দেরি হয়ে যাবে।
প্রতিবেদক: পছন্দের কেউ আছে?
সিদ্দিকুর রহমান: না, এই মুহূর্তে আমার পছন্দের কেউ নেই। অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান বর্তমানে অবিবাহিত (হাসি)।
২০১৩ সালে ‘এইতো ভালোবাসা’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্যদিয়ে বড় পর্দায়ও অভিষেক ঘটে সিদ্দিকের। ব্যক্তিগত জীবনে ২০১২ সালেডর ১২ মে মারিয়া মীমকে বিয়ে করেন তিনি। কিন্তু দাম্পত্য কলহের জের ধরে মাত্র ৮ বছরের মাথায় বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে তাদের।