Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আমি বিক্রি হওয়ার লোক নই, পদত্যাগ করতে চেয়েছি: জিএম কাদের

আমি বিক্রি হওয়ার লোক নই, পদত্যাগ করতে চেয়েছি: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের এমপি বলেছেন, আমি বিক্রি হওয়ার লোক নই। কেউ ইউটিউবে বিজ্ঞাপন দিয়েছে যে, আমি বিক্রি হয়ে গেছি। এটা আমাকে আহত করেছে। আমার অনেক পাওনাও গ্রহণ করিনি নীতির প্রশ্নে।

আমি আমার কর্মজীবনে আমার জন্য বরাদ্দের প্রয়োজনীয় অংশ নিয়েছি। আমার পরিবারের সদস্যরা কোনো সফরে আমার সঙ্গে থাকলে, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের থাকার বিল পরিশোধ করতাম। আমি একবার মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করতে চেয়েছি, আরেকবার মন্ত্রিত্ব গ্রহণ করিনি। অর্থ বা ক্ষমতার জন্য আমি বিক্রি হতে পারি না।

তিনি আরও বলেন, আমি ২৫ বছর চাকরি করেছি, গত ১০ বছরের চাকরিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছি। গত দুই বছরে দেশের পুরো পেট্রোলিয়াম পণ্য ক্রয় করতাম। আমার অবৈধ অর্থ উপার্জনের সুযোগ ছিল, আমি কখনই করিনি। ২৮ বছরের রাজনীতিতে ২০ বছর এমপি, ৫ বছরে দুটি মন্ত্রণালয় চালিয়েছি। আমি বিক্রি হওয়ার লোক নই, আমি দল এবং দেশ ও জাতির কথা চিন্তা করি।

বুধবার বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের অডিটোরিয়ামে কয়েকজন সাংবাদিকের সঙ্গে খোলামেলা কথা বলেন জিএম কাদের। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান এমপি ও জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রেস সেক্রেটারি-০২ খন্দকার দেলোয়ার জালালী প্রমুখ।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, আমি আগেই বলেছি ভারত একটি শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। তারা চায় নির্বাচনের আগে ও পরে কোনো সহিং”সতা না হোক। কে ক্ষমতায় আসবে বা কী পদ্ধতিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সে সম্পর্কে ভারতে কোনো কথা নেই। তারা মনে করেন, এসব বিষয় দেশের জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে, এগুলো বাংলাদেশের নিজস্ব বিষয়। ভারত চায় বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো বিঘ্ন সৃষ্টি না হোক। বাংলাদেশে ভারতের বিনিয়োগ বা স্বার্থসংশ্লিষ্ট অনেক বিষয় রয়েছে, তাই তারা কখনই চায় না বাংলাদেশে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হোক। আসলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ে ভারত সরকারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমি বলতে চেয়েছি, দুটি দেশের সরকারপ্রধান বা যে কোনো দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় যৌথ একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। দুটি পক্ষ যেটুকু প্রকাশে সম্মত হবে, ততটুকুই প্রকাশ করা হয়। এর আগে একটি খসড়া করা হয়। আমরা বিভিন্ন সময়ে বিদেশিদের সঙ্গে বা গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলি, তখন তারা জেনে নেন এ আলোচনার সংবাদ টুইট করা যাবে কিনা, ছবি দেওয়া যাবে কিনা বা আলোচনার কতটুকু প্রকাশ করা যাবে। আমরা সম্মতি দিলেই তারা টুইট করতে পারেন।

তিনি যোগ করে বলেন, আমরা গণমাধ্যমকে বলতে গেলেও তাদের সঙ্গে আলোচনা করে নেই, এটাই বাস্তবতা। বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করিনি বলেই ভারত সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলিনি গণমাধ্যমকে আমরা কি বলব বা কি বলব না। তাই বিস্তারিত বলতে গেলে তাদের সঙ্গে আলাপ করাটা হচ্ছে ভদ্রতা। অনেক সময় খোলামেলা আলোচনায় অনেক কথাই হতে পারে। একজন একটি কথা বলেছে, আমি হয়তো অন্যভাবে বুঝেছি। তখন তারা বলতে পারে আমি তো এইভাবে বলিনি। তাই এগুলো নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। সেদিন স্পর্শকাতর বিষয় মনে করে কথা বলার সময় অনুমতি শব্দটি ব্যবহার না করে সম্মতি শব্দটি ব্যবহার করলে আরও ভালো হতো। আমি যে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বললে তাদের সম্মতি ছাড়া প্রকাশ করাটা ভদ্রতা মনে করি না, এমন একটি নিয়মও আছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ভারত সরকারের পক্ষ থেকে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। আমি আমার সহযোগী নিয়ে নিজের খরচে ভারতে গিয়েছিলাম। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বা ব্যক্তি জিএম কাদেরের সঙ্গে কথা বলতে চায় ভারত সরকার। দ্বিপাক্ষিক কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আওয়ামী লীগ দল হিসেবে ভারতে গিয়েছিল এবং সে দেশের ক্ষমতাসীন দলের আমন্ত্রণে।

তিনি আরো বলেন, আমি এর আগেও গণমাধ্যমকে বলেছি, ভারত সরকার জাতীয় পার্টির প্রতি আগ্রহী। তারা মনে করে ভারতের সাথে তাদের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং সেই সম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। তারা বিশ্বাস করেন জাতীয় পার্টি একটি সম্ভাবনাময় দল, জাতীয় পার্টি আগামীতে ভালো করতে পারবে। তারা আশা করে যে ভারতের সাথে পারস্পরিক সম্পর্কের উন্নতি হবে এবং পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, হঠাৎ করে বিমানবন্দরের ভিড়ে বাড়ি ফেরার বক্তৃতায় কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে এবং কথাবার্তা ঠিক হয়নি। এতে কিছুটা সমালোচনাও হয়েছে। আমি ঠিক বুঝতে পারিনি, এটা আমার ব্যর্থতা।

About bisso Jit

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *