গতবারের নির্বাচন কমিশন গঠনে বাংলাদেশের সব থেকে বড় বিরোধী দল বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। যদিও অংশগ্রহণ না করার পেছনে রয়েছে নানান অভিযোগ বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এবারও তারা অংশগ্রহণ করেননি যেটা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানটা একনায়কতন্ত্র কেন্দ্রিক করে দিচ্ছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কৃষিমন্ত্রী বিএনপিকে নির্বাচন কমিশন গঠনে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। সেই সাথে আরো অনেক কথা বলেছেন অনেক বিষয় নিয়ে। তিনি আহ্বান জানানোর সাথে এটাও বলেন যে, বর্তমান রাষ্ট্রপতি নিরপেক্ষ মানুষ।
নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতির সংলাপে বিএনপিকে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি নিরপেক্ষ মানুষ। নির্বাচন কমিশন গঠনের দায়িত্ব তাঁর ওপর। তিনি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বিভিন্ন দলের সাথে সংলাপ শুরু করেছেন। বিএনপি বলছে সেই সংলাপে যাবে না। আমি বিএনপিকে বলব, সংলাপে অংশগ্রহণ না করা দায়িত্বশীল দলের কাজ না। আপনারা সুনাগরিক হলে, দায়িত্বশীল দল হলে, জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ দল হলে সংলাপে অবশ্যই যাবেন। নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে গঠনমূলক সুপারিশ প্রদান করবেন।
আজ মঙ্গলবার বিকালে মিরপুরে গ্রামীণ ব্যাংক ভবন মিলনায়তনে বিজয়ের ৫০ বছর এবং বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
কৃষিমন্ত্রী আরো বলেন, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করা দেশের জন্য সম্মানের নয়। জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে যেভাবে নির্বাচন হয়, দেশেও সেই প্রচলিত পদ্ধতিতেই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে ৭৫ থেকে ৯৬ পর্যন্ত দীর্ঘ ২১ বছর স্বৈরাচার, সামরিক ও গণতন্ত্রের লেবাসে স্বৈরাচার সরকার ক্ষমতায় ছিল। সেই পরিস্থিতিতে গণতন্ত্রকে স্থিতিশীল করতে ৩ বার তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাচন হয়েছে। এখন আর সেটির কোনো প্রয়োজন নেই। সংবিধান অনুযায়ী দেশের স্বাধীন নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনই সুষ্ঠু নির্বাচন করতে পারে।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ কে এম সাইফুল মজিদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন হাওলাদার, বুয়েটের অধ্যাপক মোহাম্মদ কায়কোবাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
কৃষিমন্ত্রীর আহ্বানের উত্তরে বিএনপি কি বলেছে সেটা এখনো জানা যায়নি। তবে বিএনপি নির্বাচন কমিশন গঠনে উপস্থিত হবে কিনা সে নিয়ে রয়েছে এখনও সন্দেহ। কারণ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি, যার বিদেশে চিকিৎসার জন্য বেশ কিছুদিন ধরে বিএনপির আবেদন করে আসছে। কিন্তু নানান আইনের ফাঁকফোকরে সেই আবেদন গ্রহণ করা হচ্ছে না। এখন দেখার বিষয় নির্বাচন কমিশন গঠনে বিএনপি উপস্থিত হয় কিনা।