Friday , November 15 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আমি ফার্স্ট ক্লাস, আমাকে চাকরি দেবেন, প্লাকার্ড টাঙ্গিয়ে চাকরির আবেদন হায়দারের

আমি ফার্স্ট ক্লাস, আমাকে চাকরি দেবেন, প্লাকার্ড টাঙ্গিয়ে চাকরির আবেদন হায়দারের

লন্ডনের একজন ২৪ বছর বয়সী যুবক একটি ট্রেন স্টেশনে নিজের পপ-আপ স্ট্যান্ড স্থাপন করে ‘প্রথম শ্রেণির ডিগ্রি আছে আমার, চাকরি দেবেন’ লেখা একটি প্লাকার্ড লাগিয়ে ভিন্ন কায়দায় চাকরির জন্য আবেদন করেন আর তারোর কয়েক দিনের মধ্যে একটি চাকরি খুঁজে পেতে সক্ষম হয়েছিল। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যাঙ্কিং এবং ফিন্যান্সে প্রথম-শ্রেণীর ডিগ্রি থাকা সত্ত্বেও হায়দার মালিক বিশ্বব্যাপী চলমান পরিস্থিতির শুরু থেকেই চাকরি খুঁজছিলেন। এই যুবকের নাম হায়দার মালিক, যিনি একজন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত।

মিঃ মালিক বলেছেন যে তিনি তার বাবা মেহমুদ মালিকের কাছ থেকে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, একজন অবসরপ্রাপ্ত ক্যাব চালক যিনি কিশোর বয়সে পাকিস্তান থেকে ব্রিটেনে চলে এসেছিলেন। এই চাকরিপ্রার্থী চাকরি পেতে একটি ভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করেন, যেটাতে একটি স্টেশনারি দোকান থেকে একটি বোর্ড কিনেছিলেন, যার উপরে তিনি কিউআর কোড সাটিয়ে দিয়েছিলেন যাতে লোকেরা সহজেই তার সিভি এবং লিঙ্কডইন প্রোফাইল অ্যাক্সেস করতে পারে। তিনি গত ২ নভেম্বর লন্ডনের অর্থনৈতিক প্রাণকেন্দ্র ক্যানারি হোয়ার্ফের টিউব স্টেশনের বাইরে ব্যাঙ্কিং ও ফিনান্সের ফার্স্ট ক্লাস ডিগ্রি হাতে নিয়ে গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে নিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন

প্রথম দিকে সেভাবে সাড়া না পড়লেও মাত্র ১৪ দিনের মাথায় চাকরি পান হায়দার। পথচলতি মানুষের সাথে কথা বলতে শুরু করেন। এই সময়ে অনেকে ভিজিটিং কার্ডও দিয়ে যান। ঘটে যায় ‘মিরাক্যাল’। তাও আবার মাত্র ১৪ দিনের মাথায় এক অচেনা ব্যক্তির সহযোগিতায়। হায়দার যোগ দেন ‘ট্রেজারি অ্যানালিস্টের’ পদে।

হায়দারের পাশে ওই সময় এসে দাঁড়ান অচেনা ইম্যানুয়েল। নিজের উদ্যোগে লিঙ্কড-ইনে হায়দারের ছবি পোস্ট করে তিনি আবেদন জানান, কারও হাতে চাকরি থাকলে তিনি যেন দ্রুত হায়দারের সাথ যোগাযোগ করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেজারি অ্যানালিস্টের চাকরি পাওয়ার পর হায়দর মালিক তার শুভান্যুধায়ীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। বিশেষ করে অচেনা ইম্যানুয়েলের প্রতি তিনি তার কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

হায়দারের কথায়, ওই দিনও সকালটা শুরু হয়েছিল একইভাবে। সকাল ৭টার মধ্যেই স্টেশনে পৌঁছে গিয়েছিলেন তিনি। যখন ফোনটা বেজে ওঠে তখন ঘড়িতে বাজে সাড়ে ৯টা। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ভেসে আসে একটি কণ্ঠ। ও প্রান্তের কণ্ঠস্বর বলে ‘ট্রেজারি অ্যানালিস্টের চাকরি আছে, তবে ইন্টারভিউয়ের জন্য পৌঁছতে হবে এক ঘণ্টার মধ্যে’। সঙ্গে গাড়ি ছিল। তাই গন্তব্য পৌঁছতে অসুবিধা হয়নি হায়দারের। প্রথম ধাপে উতরে যাওয়ার পর ১৬ নভেম্বর দ্বিতীয় ধাপে পরীক্ষা হয়। সেখানেই সিলেক্ট হন হায়দার। তারপরেই আসে জয়েনিং লেটার।

হায়দার জানিয়েছেন, কিশোর বয়সে পাকিস্তান থেকে তার লন্ডনে আসা। বাবা ট্যাক্সি চালাতেন। তবে এখন অবসর নিয়েছেন। বাবার থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে অভিনবভাবে জীবনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়ান হায়দার মালিক। তাহলে স্বপ্ন দেখতে পারলে, জীবনে মিরাকলও ঘটে, এবার সেটাই বিশ্বাস করতে শুরু করেছেন হায়দার।

সমাজমাধ্যমে নিজের দুটি ছবি পোস্ট করে, হায়দর মালিক লিখেছেন, ‘১৪ দিনে অনেক কিছু বদলে যায়’।

জানা যায়, সাক্ষাৎকারের পরে, ২৪ বছর বয়সী এই যুবক তার গাড়িতে ফিরে যান এবং বুঝতে পারেন একটি জনপ্রিয় সমাজিক মাধ্যম লিঙ্কডইন পোস্টটি উড়িয়ে দিচ্ছে। “প্রথম তিন দিন ধরে আমার ফোনটি অবিরাম বেজেছিল, এটি কখনই রিং বন্ধ করেনি এবং লিঙ্কডইন সত্যিই ব্যস্ত ছিল,” তিনি এভাবেই বলেছিলেন। এরপর মিঃ মালিককে ক্যানারি ওয়ার্ফ গ্রুপের সাথে দ্বিতীয় সাক্ষাত্কারের জন্য ডাকা হয়েছিল। একই সন্ধ্যায় তাকে চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়। লিঙ্কডইন-এর কাছে কৃতজ্ঞতা স্বরুপ মিঃ মালিক লিখেছেন, “যারা এটি সম্ভব করতে সাহায্য করেছে তাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ,” ইমানুয়েলের জন্য একটি বিশেষ ধন্যবাদ যোগ করেছেন তিনি, যার পোস্ট তাকে চাকরি খুঁজে পেতে সহায়তা করেছে।’

 

About

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *