বিএনপি সভানেত্রী খালেদা জিয়া অসুস্থ হওয়ার পর বেশ কিছুদিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তিনি বিভিন্ন ধরনের বার্ধক্যজনিত অসুস্থতাসহ লিভার সিরোসিস রোগে ভু’গছেন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা, যেটা তার এই সময়ের সব থেকে বেশি জীবনের ঝুঁকিতে ফেলেছে। খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে বিদেশে পাঠানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী। আজ (শুক্রবার) অর্থাৎ ৩ ডিসেম্বর ঢাকায় ইনস্টিটিউশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে গণফোরামের ষষ্ঠ কাউন্সিলের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এই আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বোন হিসেবে সম্বোধন করে বলেন, আমার বোন শেখ হাসিনার নিকট অনুরোধ খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিন। আপনি মানবতা দেখিয়েছেন, আরো কিছুটা দেখান।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, আমি বঙ্গবন্ধুর প্রেমিক। আমি তার মেয়ে শেখ হাসিনাকে গালি দিতে পারি না। খালেদা জিয়াকে নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি যা বলেছেন আমি সমর্থন করি। কিন্তু তিনি আবেগের বশবর্তী হয়ে তা বলেছেন, যা সংবিধানের আলোকে বলতে পারেন না।
বাংলাদেশের এই অবস্থার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে এই রাজনীতিক বলেন, দেশের বড় বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি। কিন্তু তারা কোনো আন্দো’লনে নামে না। তেলের দাম বাড়ে, জিনিসপত্রের দাম বাড়ে বিএনপি আন্দো’লন করে না। নারীদের সাথে খারাপ কাজ করা অপরা’ধীদের শা’স্তির দাবিতে তারা রাস্তায় নামে না। তিনি বলেন, বিএনপি জামায়াতের ওপর ভর করেছে। তারা মনে করেছে প্রোগ্রাম হলে জামায়াত লোক আনবে। জামায়াত মনে করেছে বিএনপি লোক আনবে।
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, আমি ঐক্যফ্রন্টে গিয়েছিলাম ড. কামাল হোসেনকে দেখে, তার ওপর ভরসা করে, বিএনপিকে দেখে নয়। যতদিন বিএনপিতে জামায়াত থাকবে ততদিন আমি বিএনপির সঙ্গে নেই। যদি বেহেশতেও জ্ঞান থাকে, সেই সময়েও বলব, তাদের সঙ্গে যাব না। তিনি বলেন, জামায়াতের সঙ্গে কোনো আপস নেই। যদি তারা নিজেদের ভুল স্বীকার করে তবে ভেবে দেখব।
উল্লেখ্য, আব্দুল কাদের সিদ্দিক একজন বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ যিনি বঙ্গবীর উপাধিতে অধিক পরিচিত। তিনি মুক্তিবাহি’নীর সদস্য এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পাকিস্তান সে’নাবা/হিনীর বিরুদ্ধে টাঙ্গাইল অঞ্চলে ১৭,০০০ শক্তিশালী গেরিলা বাহিনী নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। সেনাবাহিনীর নাম ছিল কাদেরিয়া বাহি’নী (কাদের বাহি’নী)। যু’/দ্ধ শেষে, ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর, সিদ্দিকীর বাহি’নী যু’/দ্ধের সমাপ্তির সংকেত দিয়ে ভারতীয় বাহি’নীর সাথে ঢাকায় প্রবেশ করে। বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর উত্তম উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি তার নিজের গড়া দল কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।