যে কোনো সময় আমার জামিন বাতিল হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ইউনূস।
মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ সময় সিএনএনের তারকা সাংবাদিক ক্রিশ্চিয়ান আমানপুরকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে সিএনএন-এর খবর শুরু হয় এই বলে: বাংলাদেশে নোবেলজয়ী অধ্যাপক ইউনূসের সমর্থকরা বলছেন, তিনি দেশের প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছেন। আমানপুরের এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, এখানে ভ/য়াবহ সব ঘটনা ঘটছে।
আপনার বিরুদ্ধে মামলার পরিণতি কী হতে পারে? জেলে যেতে পারবেন? জবাবে তিনি বলেন, ইতিমধ্যে আমার সাজা হয়েছে। যে কোনো সময় আমার জামিন বাতিল হতে পারে। তারা আমার জামিন বাড়াতে পারে, অথবা আমাকে বা আমার সাথে আসামিদের জেলে যেতে পারে।
ড. ইউনূস বলেন, আগামী ৩ মার্চ দুর্নীতি দমন কমিশনের করা একটি নতুন মামলা- যাতে আমাদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং ও অন্যান্য বিষয়ে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে- শুরু হতে যাচ্ছে। যদি আমরা পুরো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাই, তাহলে মামলার ফলে দীর্ঘতর জেল হতে পারে। আমরা জানি না এগুলো কবে শেষ হবে।
অভিযোগের বিষয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আমি শুধু অস্বীকার (অভিযোগ) করিনি। আমি দেশে এবং দেশের বাইরে যত আইনজীবীদের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করেছি, তারা সবাই একমত যে এই মামলাগুলির কোনও ভিত্তি নেই এবং তারা আগে এমন কোনও মামলা দেখেননি এবং পরিচালনা করেননি। এটা এক প্রকার হ/য়রানি। এটা নিশ্চিত করা যে আমি বা আমরা এই বার্তা পাচ্ছি যে আমাদেরকে ভালোভাবে নেওয়া হচ্ছে না।
শেখ হাসিনা কি আপনাকে তার রাজনীতির জন্য চ্যালেঞ্জ মনে করেন? জবাবে এই অধ্যাপক বলেন, আমি জানি না সে কী ভাবছে। তবে রাজনীতির সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু সরকার প্রধান হওয়ার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। আমি এটা প্রত্যাখ্যান করেছি।আমার এখানে (রাজনীতিতে) যুক্ত হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। আমি অনেকবার বলেছি, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
ইউক্রেনে থাকা আমানপুর রাশিয়ার বিরোধী নেতা নাভালনির মৃ/ত্যুর কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। ইউনূস জানতে চান আপনি কি বিদেশে থাকার প্রস্তাব পেয়েছেন?
জবাবে ড. ইউনূস বললেন, হ্যাঁ- অনেক বিদেশী বন্ধুর কাছ থেকে এ দেশ ছেড়ে তাদের দেশে যাওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েছি। তারা আমাকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে এবং আমার কাজ বিশ্বব্যাপী চালানোর জন্য সব ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছে। কিন্তু আমি তাদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে শুরু। আমি যুক্তরাষ্ট্রের মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়াতাম। তারপর বাংলাদেশে ফিরে আসি। দেশে ফিরে যা করেছি সবই সাধারণ মানুষের জন্য। দুর্ভিক্ষ দেখেছি, মানুষের নানা সমস্যা দেখেছি। সেজন্য আমি ভেবেছিলাম গরিব মানুষের উপকার করা উচিত। এটাই আমার চাওয়া, এটাই আমার জীবন। যার ফলশ্রুতিতে ক্ষুদ্রঋণ এসেছে এবং বিশ্বে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।