বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. শাহেদুন্নবী চৌধুরী সিটি করপোরেশনের ১০৫টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন। মেয়র পদে অন্য প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত আরেক নেতা নিজামউদ্দিন কায়সার ঘোড়া প্রতীকে ২৯ হাজার ৯৯ ভোট পেয়েছেন। তবে এর আগে ৭২টি কেন্দ্রের বেসরকারি ফলাফলে রিফাত ৩৩ হাজার ৭৯৩ ভোট পেয়ে এগিয়ে ছিলেন। সাক্কু পেয়েছেন ৩২,৩২২ ভোট।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচনের ফলাফল প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহার বলেন, আমরা বিজয়ী হয়েছি। কে রেজাল্ট গ্রহন করলো বা না করলো সেটা কোন ব্যাপার না। অনেক কাউন্সিলর ফলাফল মেনে নেবেন না। বুধবার রাতে নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর গণমাধ্যমে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এখানে নাটক দেখেছি। আমি বাড়িতে ছিলাম, ফলাফল দেখছিলাম। কখনও আমি অগ্রসর হই, কখনও তারা অগ্রসর হয়। ৭২টি কেন্দ্রে রিফাত ১৪০০ ভোটে এগিয়ে আছেন। তখন সিইসি বলেন, তিনি বাথরুমে যাবেন। তখন সাক্কুর জনতা স্লোগান দিতে থাকে। তারা ফলাফল দিতে আটকে গেছে। কুমিল্লার সবাই দেখেছে।
‘সেখানে দেখলাম সাক্কু এগিয়ে গেলে সবাই করতালি দেয়। আমরা এগিয়ে গেলে কেউ সাধুবাদ জানায় না। এরপর আমাদের লোকজন স্লোগান দিলে সবাইকে বের করে দেওয়া হয়। তবে আগে বের হননি বলে জানান এমপি বাহার।
তখন টিভির সামনে সাক্কু সাহেব বললেন, আমি ৯০০ ভোটে এগিয়ে আছি। তারা আমাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। “” আমি জানতে চাই কে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের উচিত আমাদের এই ব্যাখ্যা দেওয়া,” তিনি বলেন, কিছু কাউন্সিলর ফলাফল মেনে নেবেন না।
তিনি বলেন, অনেক জায়গায় কিছু সমস্যা হয়েছে। তারপরও আমরা বিজয়ী হয়েছিলাম। বিভিন্ন স্থানে নৌকার ব্যাজ পরা লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ডিসিকে জানিয়েছি। বিজয়ী প্রার্থী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আরফানুল রিফাত একজন আত্মত্যাগী নেতা। ছাত্রলীগ করতেন। তিনি জনগণের জন্য কাজ করবেন।
উল্লেখ্য, ভোটকেন্দ্রে নাটকীয় ৪৫ মিনিটে কী ঘটেছিল:-
সূত্রঃ ডেইলি স্টারঃ-
সময় ছিল রাত ৮টা ২০ মিনিট। কুমিল্লা সিটির ৭২টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কুর মধ্যে হাতাহাতি হয়। ৭২টি ভোট কেন্দ্রের ফলে রিফাত পেয়েছেন ৩৩৬৯৩ ভোট এবং সাক্কু পেয়েছেন ৩২৩২২ ভোট। ভোটের চূড়ান্ত ফল জানতে নেতাকর্মীদের নিয়ে শিল্পকলা মিলনায়তনে আসেন বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী মনিরুল হক সাক্কু। তখনও রিটার্নিং অফিসার শাহেদুন্নবী চৌধুরী ভোটকেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করছিলেন। তিনি বলেন, ১০১টি ভোটকেন্দ্রের ফলাফল পাওয়া গেছে। তবে কে কত ভোট পেয়েছেন তা ঘোষণা করেননি তিনি।
এরপর রাত ৯টার দিকে নৌকার মেয়র প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতের কর্মী সমর্থকরা করতালি ও স্লোগানে সেখানে উপস্থিত হন। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাক্কুর সামনে টানা পাঁচ মিনিট দাঁড়িয়ে নৌকার উল্লাস করেন তারা। এরপর রিফাতের সমর্থনে আরেকটি পক্ষও একইভাবে সেখানে হাজির হয়। হঠাৎ রিফাতের কয়েকজন সমর্থক সাক্কুর ওপর হামলা চালায়। তার মামলার সমর্থকরা এই বিবৃতিটির প্রকৃত প্রতিলিপি অনলাইনে উপলব্ধ করার জন্য কাজ করছেন। এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তা সবাইকে চিৎকার বন্ধ করে শান্ত হতে বলেন। তবে তাতে কাজ হয়নি।
রাত সোয়া ৯টার দিকে পুলিশ বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের বাধা দিতে লাঠিপেটা শুরু করে। পুলিশও সাক্কুকে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে ভোটের ফল না নিয়ে সরে যেতে রাজি হননি তিনি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, তারা সব কেন্দ্রের ফলাফল পেয়েছেন এবং শিগগিরই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। এরপর রিটার্নিং কর্মকর্তা মেয়র পদে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাতকে বিজয়ী ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, রিফাত সাক্কুর কাছে ৩৪৩ ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন।