Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Entertainment / আমি নিজেও আন্দোলন করেছি, রাস্তায় মার খেয়েছি, সেই ফলও কিন্তু পেয়েছি : ইলিয়াস

আমি নিজেও আন্দোলন করেছি, রাস্তায় মার খেয়েছি, সেই ফলও কিন্তু পেয়েছি : ইলিয়াস

সারাদেশে নির্বাচনী সাথে সাথে বর্তমানে চলমান রয়েছে চলচ্চিত্র নির্বাচনের প্রচারণা। যেখানে বড় ভূমিকা রয়েছে ইলিয়াস কাঞ্চন। প্যানেল তৈরি হয়েছিল এটি একটিতে মিসা আরেকটি ইলিয়াস। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র টা অনেকটা শুয়ে পড়ার মত অবস্থা। সে নিয়েই মূলত তারা নয় ইলিয়াস কাঞ্চনের নির্বাচনে এমনটাই বলেছেন তিনি। প্রচারণায় তিনি বলেন একবারের মত মরণ কামড় দিতে চান তিনি, তাতে যদি চলচিত্র জগৎ টাকে একটু দাঁড় করানো যায়। নির্বাচনী প্রচারণায় আশ্বাস দিয়েছে এমন ধরনের মন্তব্য করেন নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন।

এরই মধ্যে জমে উঠেছে আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচন। বিএফডিসিতে প্রতিদিন বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত শিল্পীদের আসা-যাওয়া নিয়ে সরব। বিভিন্ন সভা, মিছিল ও বাদ্যযন্ত্রের আয়োজন করা হচ্ছে। এবার বাছাইয়ে অংশ নিচ্ছেন ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুন ও মিশা-জায়েদ প্যানেলের শিল্পীরা।

সবাই সবার মতো প্রচারণা চালাচ্ছেন। দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। এদিকে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী ইলিয়াস কাঞ্চন বলেছেন, অনুদান বা সাময়িক তহবিল সাহায্য নয়; তিনি এবং তার প্যানেল ব্যবস্থা করবেন যাতে শিল্পীরা নিয়মিত কাজ করতে পারেন এবং খেতে পারেন। সিনেমার মান ও সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা করবেন বলেও দাবি করেন তিনি।

একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন দেশের হল মালিকদেরও। বাংলাদেশ প্রদর্শক সমিতি ১৮ জানুয়ারি মঙ্গলবার এক বন্ধুত্বপূর্ণ ভোজসভার আয়োজন করে। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুন প্যানেল।

কাঞ্চনের নেতৃত্বে প্যানেলে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি প্রার্থী চিত্রনায়ক রিয়াজ, ডিএ তায়েব। সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী চিত্রনায়িকা শাহনূর ও ভারপ্রাপ্ত সদস্য প্রার্থী গাঙ্গুলী উপস্থিত ছিলেন।

এসময় উপস্থিত ছিলেন কাজী শোয়েব রশীদ, আওলাদ হোসেন উজ্জলসহ অনেকে। উপস্থিত ছিলেন পরিচালক নেতা বদিউল আলম খোকন।

ইলিয়াস কাঞ্চন নির্বাচিত হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন নেতৃবৃন্দ। বহু কালজয়ী ও সুপারহিট সিনেমার নায়ক কাঞ্চনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে শিল্পী সমিতি আবার তার গতিপথ ফিরে পাবে বলে তারা আশাবাদী। সামগ্রিকভাবে চলচ্চিত্র শিল্পও উপকৃত হবে।

অভিনন্দনের জবাবে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আপনি আমাকে, আমার টিমকে ডেকেছেন বলে আমি কৃতজ্ঞ। এটা ইতিবাচক। আমি বুঝতে পারি যে আমরা সবাই চাই সিনেমাটি ভালো হোক। সেজন্যই আমি এক হয়েছি। আমাদের পরিকল্পনা করতে হবে। ভালো কিছুর জন্য।আমাদের একসাথে কাজ করতে হবে।দিন দিন প্রযোজকরা হারিয়ে যাচ্ছে।

যাদের সঙ্গে আমি অনেক হিট সিনেমা করেছি কিন্তু কোনোটাই করিনি। চালিয়ে যেতে পারিনি। আমি নিজেও এটি প্রযোজনা করেছি। হিট সিনেমাও দিয়েছি। কিন্তু প্রযোজক হিসেবে কাজ করার সাহসও আমার নেই। কারণ সিনেমার এ অবস্থা। পরিচালক হিসেবেও কাজ করেছি। এখন আর সেই সাহস নেই। ভাবছি টাকা নষ্ট করব! আমি অনুরোধ করলে হয়তো অনেকেই টাকা বিনিয়োগ করবে। কিন্তু লাভ কি? দর্শক দেখতে পাবে না বা দেখতে পারবে না।

নানা কারণে সিনেমাটি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রথম কারণ ছিল জলদস্যুতা। এরপর আসে অশ্লীলতার যুগ, কাটপিস। তারপর শুরু হলো অভিভাবক ছাড়া, নেতৃত্ব ছাড়া শিল্পের পথচলা। এই সব দেখা কঠিন। ভেবেছিলাম আর ফিরব না। কিন্তু সিনিয়র-জুনিয়ররা সবাই রাজি হয়ে গেল যে তোমার আসতে হবে। তোমার দরকার আমি এসেছি। এবার চেষ্টা করা যা। এবারের চেষ্টা হবে মৃত্যুকে কামড়ানোর মতো। ‘

কাঞ্চন আরও বলেন, ‘দেখুন আমরা শিল্পীরা রাস্তার মানুষ। চলচ্চিত্রের জন্য পাকিস্তান আমলে আমাদের সিনিয়ররা উর্দু ভাষার সিনেমার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন। সেই আনোয়ার হোসেন, রোজী সামাদ, সুমিতা দেবী আর নেই। কিন্তু তাদের আন্দোলনের ফসল ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি।

আমি নিজেই আন্দোলন করেছি। রাস্তায় আমাকে মারধর করা হয়, রক্তপাত হয়। রাজ্জাক ভাই, আলমগীর ভাই, জসিম ভাই, শাবানা; অনেকে, প্রায় সবাই, ক্ষমতা ট্যাক্সের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমেছে। কিন্তু আমি সেই ফল পেয়েছি। যখন প্রতিকূলতা ছিল তখন আবার মাঠে নেমেছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। আমার সাথীদের জন্য দোয়া করবেন।

দেখুন, আমার অনেক সিনিয়র চলে গেছে। রাজ্জাকের ভাই নেই। দুজন অসুস্থ। পদ ছাড়ার পর তিনি কী করবেন তা এই মুহূর্তে জানা যায়নি। এখান থেকে আমার কোন ক্ষমতা নেই। অনেক পেয়েছি. আমি এই সিনেমার জন্য দাঁড়ানোর কথা বলছি এই ব্যক্তি। এইবার দিতে এসেছি।

অনুষ্ঠানে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, “আপনি জানেন, আমি যখন কিছু বলি, আমি সেটা নিয়ে চিন্তা করি। আমি সেই কথা রাখার চেষ্টা করি। আমি যা বলি তাই করি। আমি আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, আমি আপনাদের জন্য কিছু ভালো কাজ করার চেষ্টা করব। আমি চেষ্টা করবো মুভিকে বাড়ানোর জন্য। সিনেমা না থাকলে মালিকরা থাকবে না। প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী ছাড়া কিছুই থাকবে না। তাই সিনেমা বানানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। সিনেমা মানেই সিনেমা। সব শ্রেণীর মানুষ। হল বানিজ্যিক সিনেমা নিয়েই থাকে। সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে এই প্রবণতাকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। আপনার শৈল্পিক সিনেমাও দরকার।

অনেকেই বলেন আমরা শিল্পী, সিনেমা প্রচার করা আমাদের কাজ নয়। এটা ভু। বিভিন্ন আন্দোলন সিনেমার প্রচারে এবং শিল্পকে চাঙ্গা রাখতে শিল্পীদের ভূমিকার গুরুত্বের সাক্ষ্য দেয়। দু’জন শিল্পী দাঁড়িয়ে কথা বললে, শুনবে এমন লোকের সংখ্যা অন্যদের সঙ্গে থাকবে না। কোন্দল দূর করে সকল সমিতির সাথে মিলেমিশে কাজ করার চেষ্টা করব।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলচ্চিত্র শিল্পের প্রতি অত্যন্ত আন্তরিক। বাবার হাত ধরেই গড়ে ওঠে এফডিসি। হয়তো সে কারণেই সিনেমার প্রতি তার আগ্রহ বেশি। হল মালিকদের জন্য তিনি ১ হাজার কোটি টাকা দিয়েছেন। সিনেমা নেই বলে সেই টাকা ফেরত দিয়েছেন। সিনেমা না হলে সুদের টাকা দিয়ে কী হবে সেটা ঠিক। আবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে যেতে হবে। প্রয়োজনে আরও টাকা বরাদ্দ করব। তবে তার আগে আমি একটি নিখুঁত এবং কার্যকর পরিকল্পনা নিয়ে আসব যাতে সিনেমা নির্মাণ এবং উভয়ই।

একসময় দেশ কাঁপানো এই নায়ক সিনেমা বর্তমান খুব একটা না করলেও চিত্র জগতের প্রতি যে তার রয়েছে প্রেম, সেটাই প্রকাশ করলেন তিনি। তাই তো ভালোবাসারই মাধ্যমটিকে আপ্রাণ চেষ্টা করে হলেও উঠাতে চান তিনি। তবে এখন দেখার বিষয় শেষমেশ কে জেতে, নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে কি মেয়ে নেয় চিত্র জগতের কর্মীরা, নাকি মিশা কেই রেখে দেয়! দেখতে হলে প্রয়োজন অপেক্ষার, তুমি যখন নির্বাচন শেষ হওয়ার।

About Ibrahim Hassan

Check Also

গোপনে বিয়ে করলেন তৌহিদ আফ্রিদি, জানা গেল কনের পরিচয়

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে যখন সারা দেশের মানুষ ছাত্রদের পাশে দাঁড়িয়েছেন, তখন বেশ নিরব ছিলেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *