নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার একটি বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণীর একজন ছাত্রীর সাথে খারাপ কাজের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই শিক্ষকের নাম নুরুল আমিন আজাদ। এই ঘটনার পর ওই মেয়েটির বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে যান এবং সেখানে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের পর ঘটনা ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার চেষ্টা করেছেন ঐ অভিযুক্ত শিক্ষক এমনটি জানা যায়।
অভিযুক্ত নুরুল আমিন আজাদ উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর তহুরা আমিন সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি ক্লাসে ইংরেজি পড়ান।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, সোমবার নবম শ্রেণির কক্ষে যান নুরুল আমিন আজাদ। এ সময় শিক্ষার্থীদের নিকট ইংরেজি বই না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন তিনি। বই না থাকার শাস্তি হিসেবে তিনি একজন শিক্ষার্থী আরেকজন শিক্ষার্থীর পিঠে থাপ্পড় দেওয়ার আদেশ দেন। শিক্ষকের নির্দেশে শিক্ষার্থীরা একে অপরের পিঠে থাপ্প’ড় মারে। কিন্তু ছাত্রীদের শরীরে শিক্ষক নিজে হাত দেওয়ায় শ্রেণিকক্ষে চিৎকার শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে ছাত্রীরা লজ্জায় শ্রেণিকক্ষে কান্না শুরু করে।
কয়েকজন শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে তাদের অভিভাবকদের বিষয়টি জানায়। পরে ভুক্তভোগী এক কিশোরীর বাবা ঘটনার বিচার চেয়ে আজ ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন ইউএনও ও বিদ্যালয়ের সভাপতি একেএম লুৎফর রহমান। তারা অভিযুক্ত শিক্ষককে ক্লাস নেওয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানায়, ‘স্যার আমাদের সঙ্গে প্রায়ই অসম্মানজনক কথা বলেন। সোমবার, আমাদের ইংরেজি বই না থাকায় শাস্তি হিসেবে একে অপরকে চড় মারতে বলা হয়েছিল। কিন্তু স্যার কয়েকজন ছাত্রীর গায়ে হাত দিয়ে অশ্লীল কথা বলেন। স্যারের আচরণে আমরা খুবই লজ্জিত।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক নুরুল আমিন আজাদ বলেন, ইংরেজি বই না থাকায় শাস্তি হিসেবে একে অপরকে চড় মারতে বলেছি। আমি আদর করে মেয়ের গায়ে হাত দিলাম। এখন বিষয়টি ভিন্নভাবে নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রউফ বলেন, বিষয়টি খুবই লজ্জাজনক। সকাল থেকেই স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভ করতে চায়। কিন্তু আমি বুঝিয়ে তাদের থামিয়ে দিলাম। ইউএনও স্যার স্কুল পরিদর্শন করেন। স্যার বিষয়টি দেখভাল করবেন।
এ কে এম লুৎফর রহমান যিনি মদন উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তিনি ঘটনার বিষয়ে বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর খুব দেরী না করে ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া ১০জন ছাত্রীর নিকট থেকে বক্তব্য নেয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই ঘটনার সত্যতা মিলেছে। তবে এ বিষয়ে শিক্ষকের বক্তব্য নেওয়ার পর খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।