ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোকেয়া ওয়ালে হামলা হয়েছে। বুধবার সন্ধ্যায় শোক দিবস উপলক্ষে রোকেয়া প্রাচীর নেতৃত্বে একদল সাংস্কৃতিক কর্মী প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। এসময় ৩০-৩৫ জনের একটি দল লাঠিসোঁটা নিয়ে রোকেয়া প্রাচীর ওপর হামলা করে।
পূর্ব ঘোষণায় রোকেয়া প্রাচী ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে যান। এদিকে ৭০-৮০ জন সংস্কৃতিকর্মী রোকেয়া সাথে যোগ দেন। সসন্ধ্যায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের আয়োজন চলাকালে ৩০-৩৫ জন যুবক উপস্থিত হয়। তাদের হাতে লাঠিসোঁটা ছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। তারা সবাইকে হুমকি দিয়ে সরিয়ে দেয়। এরপর তারা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি ভাঙচুর করে।রোকেয়া প্রাচী সেটি ঠিক করতে গেলে তাকে লাঠি দিয়ে মারতে থাকে যুবকেরা। একের পর এক আঘাতে অভিনেত্রী লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে দ্রুত সহশিল্পীরা ধরে বাইরে নিয়ে যান।
রোকেয়া প্রাচী বলেন, ‘‘সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আমাদের ওপরে অতর্কিত হামলা হয়। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। হঠাৎ করে আমাদের ঘিরে ফেলা হয় এবং প্রচণ্ড মারধর করা হয়।
গুরুতর আহত হওয়ার অভিযোগ করে রোকেয়া প্রাচী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,যারা পিটিয়েছে তারা আমাকে টার্গেট করে এসেছে। প্রত্যেককে আমার শিক্ষিত মনে হয়েছে। তারা খুব শুদ্ধ ভাষায় কথা বলেছে। তাদের কথাবার্তা শুনেই বুঝেছি তারা দুষ্কৃতকারী নন।’
সন্ধ্যায় স্মৃতিফলকে মোমবাতি প্রজ্বলনের সময় কয়েকজন ব্যক্তি রোকেয়া প্রাচীকে বলেন, চারপাশ থেকে আমাকে এলোপাতাড়ি মারছিল। আমি নাক, মুখ ও মাথায় আঘাত পেয়েছি। আঙুল ফেটে গেছে। আমার সারা শরীরে মেরেছে তারা।
প্রাথমিক চিকিৎসা পেয়েছেন কি না জানতে চাইলে এই অভিনেত্রী বলেন, জীবন নিয়ে পালিয়েছি। হাসপাতালে যাওয়ার সাহস পেলাম না। যদি হামলা হয়! রাস্তা পার হয়েছি ধমক খেতে খেতে। ওরা বারবার বলছিল, “ওরে পুলিশের হাতে তুলে দে”, যেন আমি বিরাট কোনো অপরাধ করে ফেলেছি। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা কি ধানমন্ডি ৩২ যাওয়া যাবে না বলে কোনো রুল জারি করেছেন? সেনাবাহিনী ঘিরে রেখেছে একটা জায়গা, সেখানেও আমাকে এভাবে পেটানো হলো! এটা আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।’
১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে রোকেয়া প্রাচী সোশ্যাল মিডিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানাতে একাই যাওয়ার ঘোষণা দেন।
রোকেয়া প্রাচী দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। দলের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছেন।