কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সুনীতি শান্তি হলের ২১৪ নম্বর রুমে নিয়মিত মাদকের আসর বসানোর অভিযোগ উঠেছে চার শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন মৌখিক অভিযোগ জানালেও কোনো সমাধান না পেয়ে অবশেষে আজ (২৫ ফেব্রুয়ারি) হল প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে হলের শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, কিছু শিক্ষার্থী ২১৪ নম্বর রুম দখল করে মাদক সেবন করছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাবিনা ঐশি (২১৪ নম্বর রুম), লাবিবা ইসলাম (২১৩ নম্বর রুম), ফার্মেসী বিভাগের আতিফা লিয়া (৩২৩ নম্বর রুম) এবং আইন বিভাগের মাইশা রহমান রোদিতা (২১৭ নম্বর রুম)।
সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় হলের সি-ব্লকের কয়েকটি রুমে গিয়ে অভিযুক্তরা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ সৃষ্টি করে জানতে চান কারা অভিযোগপত্রে সাক্ষর করেছে। পরে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী লাবিবা ইসলাম হুমকি দিয়ে বলেন, “আমি ছাত্রলীগ করে খেলে আসছি, এখনও খেলে দিবো, আসো! তোদের মতো পতিতা না, মেয়ে নিয়ে রুমে রুমে যাবো! তোদের সবাইকে দেখে নিবো!”
এসময় তার সঙ্গে থাকা রাবিনা ঐশি বলেন, “গাঁজা লাগবে গাঁজা? গাঁজা দিতে আসছি!”
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ২১৪ নম্বর রুমে কারো সিট বরাদ্দ হলে তাদের ভয় দেখিয়ে বের করে দেওয়া হয়। এ ছাড়া, অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং হলের পরিবেশ নষ্ট করার অভিযোগও রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা তাদের লিখিত অভিযোগে মাদকসেবীদের হল থেকে বহিষ্কার, ডোপ টেস্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ, হলের নিরাপত্তা জোরদার, বহিরাগতদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ, এবং মাদকের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য ক্যাম্পেইন ও কাউন্সেলিংয়ের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রতিদিনই ২১৪ নম্বর রুমে মাদকের আসর বসে। এর আগেও প্রভোস্টকে জানিয়েছি, কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এখন লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।”
অভিযুক্ত আতিফা লিয়া বলেন, “আমি ২১৪ নম্বর রুমের আবাসিক নই। মাঝেমধ্যে সেখানে যাই, কিন্তু অভিযোগের প্রমাণ কী?”
অন্যদিকে, মাইশা রহমান রোদিতা বলেন, “সেখানে আমার বন্ধু থাকে। তার জন্মদিন থাকায় গিয়েছিলাম, তবে এমন কিছু ঘটেনি।”
লাবিবা ইসলাম দাবি করেন, “এটা সাজানো অভিযোগ। কেউ কি আমাকে মাদক নিতে দেখেছে? আমাকে শুধু হয়রানি করা হচ্ছে!”
এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট ড. মোছা: শাহিনুর বেগম বলেন, “বিকেলে প্রশাসনিক বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”