দীর্ঘ দিন ধরে শারীরিক ভাবে নানা ধরনের জটিলতায় ভুগছেন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এবং বর্তমান সময়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাষ্ট দূর্নীতি মামলায় সাজা ভোগ করছেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশের নেওয়ার লক্ষ্যে বারবার সরকারের কাছে আবেদন করা হলে তার সুফল মেলেনি। গতকাল আবারও তার পরিবার থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা জানালেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
সাজাপ্রাপ্ত অন্য আসামিদের তুলনায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বেশি সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দয়া করে তাকে এই সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন বলে মন্ত্রী জানান। মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে পাসের জন্য উত্থাপিত ‘বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১’ বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বিলটি বাছাই কমিটিতে পাঠানোর প্রস্তাবের ওপর আলোচনা করে বিএনপির রুমিন ফারহানা খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে ‘আইনগতভাবে’ তাকে বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার দাবি করেন। দণ্ডবিধির ৪০১ ধারা মতে এই সুযোগ দেওয়ার এখতিয়ার সরকারের রয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
জবাবে আইনমনন্ত্রী বলেন, ‘আমি কখনও বলিনি ৪০১ ধারা মতে উনাকে বিদেশ যেতে দেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু উনি বর্তমানে সাজা স্থগিতপূর্বক বাসায় আছেন, সেটা ৪০১ ধারার ভিত্তিতেই। উনারা যে আবেদনটি করেছিলেন, সেটা ৪০১ ধারার আলোকেই নিষ্পত্তি হয়েছে। আর একটি আবেদন যে ধারার অধীনে নিষ্পত্তি হয়েছে, একই ধারায় বিষয়টি পুনবিবেচনার কোনও সুযোগ নেই।’
আইন সবার জন্য সমান উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামি যেসব সুযোগসুবিধা ভোগ করেন। উনি (খালেদা জিয়া) তার চেয়ে বেশি সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন। আর এটা পাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিক কারণে। সাজা স্থগিত রেখে মুক্তির শর্তে তার বাসায় অবস্থান করা এবং বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার কথা থাকলেও উনি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরছেন। আমরা কোনও বাধা দেইনি।’ তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানবিকতা দেখালেও তারা কিন্তু সেটা করেননি। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তারা প্রধানমন্ত্রীকে হ/ত্যা করতে চেয়েছিল। এই হ/ত্যা মামলার প্রধান আসামি তার (খালেদা জিয়ার) ছেলে তারেক জিয়া। তারপরও তাকে দয়া করা হয়েছে।’
এদিকে বেশ আগে বেগম জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকাররের বিরুদ্ধে বিএনপি দল দোষারোপে করলে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন। এই বিষয় সম্পূর্ন তার নিয়ন্ত্রনের বাইরে। এবং এই কার্যক্রম আদালতের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। এমনকি তিনি জানিয়েছেন আদালতের কার্যক্রমের ক্ষেত্রে এই বিষয়ে সরকার কোন প্রকার হস্তক্ষেপ করবে না।