Tuesday , December 24 2024
Breaking News
Home / opinion / আমি উচ্ছিষ্ট খাবার খুজি প্যারিসের সুপার মার্কেটে, ভাবেন কী অবস্থা: পিনাকী

আমি উচ্ছিষ্ট খাবার খুজি প্যারিসের সুপার মার্কেটে, ভাবেন কী অবস্থা: পিনাকী

বর্তমান সরকার জোর ক্ষমতায় টিকে থাকতে বিরোধী মতের বিরুদ্ধে যেন যুদ্ধ ঘোষনা দেয়। যার ফলে অনেককে দেশ ছাড়তে বাধ্য হতে হয়েছে। এখানেই শেষ নয় দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিদেশেও তাদের ওপর নানা ভাবে আক্রমন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই সরকার।তারা আবারও ১৪ ও ১৮ সালের মতো করে নির্বাচন করার পাঁয়তারা করছে। আর সেই লক্ষে বিভিন্ন কৌশলে বিরোধীদের দ/মন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন পিনাকী ভট্টাচার্য হুবহু পাঠকদের জন্য নিচে দেওয়া হলো।

এটা ২০১৯ সালের কথা, আমি রিফিউজি স্ট্যাটাস পেয়েছি। কাজ করতে পারবো। ফ্রেঞ্চ জানিনা কাজ খুজছি। লিংকডিনে এপ্লাই করি কোথাও ডাকেনা। ডাকেনা শুধু তাই না একটা সুন্দর করে লেখা রিজেকশন লেটার ধরিয়ে দেয়। তখন আমি রিফিউজিদের নিয়ে কাজ করে এমন একটা প্রতিষ্ঠানে ফ্রেঞ্চ শিখি। ওরা রিফিউজিদের কাজ পাইয়ে দেয়। নেহাৎই গায়ে গতরে খাটার কাজ। ওরা প্রায় বিশ জনকে পাঠালো IKEA তে দুইটা কাজের জন্য একটা কাজ হচ্ছে পেমেন্ট সেকশনে পেমেন্ট নেয়ার কাজ আরেকটা হচ্ছে ফর্ক লিফট অপারেটরের কাজ। আমি দ্বিতীয়টায় এপ্লাই করলাম। ইন্টারভিউ হলো। ভালোই হলো। আমাকে যেই ভদ্রমহিলা ইন্টারভিউ নিচ্ছিলেন, দেখে মনে হলো, খুবই ইমপ্রেসড হলেন। যাই হোক রেজাল্ট দিলো। বিশ জনের মধ্যে ১৯ জনেরই চাকরি হলো। বাদ পড়লাম আমি, বিশতম জন।

হিসাব করে খর্চা করতাম প্রত্যেকদিন যেন দশ ইউরোর বেশী খর্চা না হয়। যেহেতু আমার লাইফস্টাইলের জন্য প্রোটিন খেতে হয় তাই ফার্মের মুর্গি ভরসা। লেটুস খেতে হয়, এক ইউরোর কমে পাওয়া যায়না। মুর্গি তাও সাড়ে তিন ইউরো কেজি। এর মধ্যে আবিষ্কার করলাম সুপার মার্কেটে খাবার দাবার ফেলে দেয়ার আগে খুব ভালো ডিসকাউন্টে দেয়। মানে পচে যাওয়ার আগের মুহূর্ত আরকি। নানা কিছু পাওয়া যায়। প্রত্যেকদিন সুপার মার্কেটের ডিস্কাউন্ট সেকশনে ঢু মারি। শুধু আমি না আরো অনেকেই ঢু মারে। মাঝে মাঝে সত্যিই পচে যেতো খাবারগুলো। সেটা বুঝতে পারতাম খাবার পরে।

আমি যখন বাংলাদেশে ছিলাম, আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বেতন দেয়া হতো মাসে প্রায় এক কোটি টাকা। আর আমি উচ্ছিষ্ট খাবার খুজি প্যারিসের সুপার মার্কেটে। ভাবেন কী অবস্থা।

আমার মতো জীবনের উত্থান পতনের অভিজ্ঞতা দুনিয়াতে খুব কম মানুষ পেয়েছে। আমি ভাগ্যবান খোদাতায়ালা আমাকে এমন পরীক্ষায় ফেলেছিলেন। উৎরে যাওয়ার ক্ষমতা আমার ছিলো কিনা জানিনা। কিন্তু আমি উৎরে যাবার শক্তি পেয়েছি। আমার মনে হয়েছে অলক্ষ্যে আমাকে কোন মহাশক্তি সাহায্য করছেন। জীবনের ওই পর্যায় থেকে কোন ডিভাইন ইন্টারভেনশন ছাড়া আমি উঠে দাড়াতে পারতাম না। আমার প্রতীতি হয়েছে, আমাকে সৃস্টিকর্তা এমনি এমনি গাড্ডা থেকে রক্ষা করেননি।

আমার নির্ভয় হওয়ার শুরু তখন থেকেই। আমি জানি আমি ইতিহাসের সঠিক দিকে আছি। সৃস্টিকর্তা ছাড়া আর কাউকেই আমার এখন ভয় করেনা।

তারপরেও দেখি, আমাকে কেউ কেউ ভয় দেখায়, হুমকি দেয়। আমি তাদের অবিমৃষ্যকারীতায় হাসি। আমি এখন মৃত্যুভয়ের উপরে হাসতে হাসতে ডাকাতি করতে পারি। নি:শংক চিত্ত এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমাকে বিধাতা অকৃপণ হাতে আমাকে এই অমুল্য সম্পদ দিয়েছেন। আমি এই জীবনের জন্য, এই পরীক্ষার জন্য, আমার নি:শংক চিত্তের জন্য বিধাতার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাই।

About Babu

Check Also

আগামীকাল ঢাকায় বড় কিছু ঘটানোর পরিকল্পনা, আপাতত যানবাহন তল্লাসি করুন: ইলিয়াস হোসেন

আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করার উদ্দেশ্যে কিছু ব্যক্তি ও সংগঠন, যারা সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে রয়েছে, পরিকল্পিতভাবে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *