নারায়ণগঞ্জ এর সিটি কর্পোরেশন মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম সাময়িক বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেয়ার পর থেকেই আলোচনার শীর্ষে। সম্প্রতি বিএনপি’র আইনজীবী থেকেও তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কোন কিছুতেই যেন তিনি থেমে নেই। নিজের উদ্যমে এগিয়ে চলেছেন নির্বাচন নিয়ে। সম্প্রতি আরও একটি পরিকল্পনার কথা বললেন তিনি আগামী ১০০ বছর কে সামনে রেখে পরিকল্পনা করতে চান।
নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার বলেছেন, বিআরটিসির চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় আমি প্রতিটি বাস-ট্রাকে আমার নম্বর দিয়ে রেখেছিলাম। আমি কারও ওপর নির্ভর করিনি।
সরাসরি জনগণের সমস্যা শুনে সমাধান করতাম। আগামী একশো বছরকে সামনে রেখে আমি পরিকল্পনা করতে চাই। পৌর পাঠাগারকে আলী আহমদ চুনকা পাঠাগার করা হোক, এটা আমি দরখাস্ত সই করেছি। কিন্তু যে পাঠাগারটা করা হয়েছে এখানে দেড়শো লোকও বসতে পারে না। আমি করলে এটা নগরবাসীর ডিমান্ড অনুযায়ী করতাম।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সিদ্ধিরগঞ্জের কদমতলী পুল এলাকায় প্রচারণায় নেমে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তৈমূর বলেন, মানুষ এখন পরিবর্তন চায়। সিটি করপোরেশন একটা সিন্ডিকেটে পরিণত হয়েছে। যেখানে ১৭৬টি ঠিকাদারি সংস্থা সিটি করপোরেশনে লিস্টেড ছিল। সেখানে এখন মাত্র বাইশ তেইশ জন ঠিকাদার রয়েছে। এর মধ্যে দুজনের হাতেই সব কন্ট্রোল রয়েছে। এটা নারায়ণগঞ্জে ওপেন সিক্রেট যে দুজন ঠিকাদার এ ঠিকাদারি ব্যবসা কন্ট্রোল করে। আমি আলী আহমদ চুনকা থেকে একটা কাজ শিখেছি, সেটা হল তিনি তার গাড়িতে কোনো কন্ট্রাক্টর উঠতে দিতেন না। সেটা শিখে আমি বিআরটিসির চেয়ারম্যান হওয়ার পর আমার রুমে কোনো কন্ট্রাক্টর ঢুকতে দিতাম না। অনেক বিষয় আছে যেটা মানুষের চোখ এড়ানো যায় না।
তিনি বলেন, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের পুঞ্জিভূত ব্যর্থতা ও নগরবাসীদের ক্ষোভ এবং পরিবর্তনের যে ডিমান্ড এটাই জনগণের প্রত্যাশা। সিটি করপোরেশন অধিক মাত্রায় ট্রেড লাইসেন্স ফি, হোল্ডিং ট্যাক্স, জন্মনিবন্ধন ফি বাড়িয়েছে। পানির কল না বসিয়েই দেড় লাখ টাকা করে নিচ্ছে। এতে জনগণের করের বোঝা বেড়েছে। পাশাপাশি যে সেবাটা পাওয়ার কথা ছিল সেটাও নগরবাসী পায়নি। যানজন, জলাবদ্ধতা ও বায়ুদূষণমুক্ত শহর চায় নগরবাসী। নগরবাসী নাগরিক সুবিধা বঞ্চিত। নাগরিক সুবিধাটা হল এ যে প্রতিটি এলাকায় কমিউনিটি সেন্টার থাকতে হবে, মেধা বিকাশের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
তৈমূর বলেন, নারায়ণগঞ্জে কিশোর গ্যাং বেড়েছে পত্র-পত্রিকায় দেখেছি। কিশোরদের হাতে অল্টারনেটিভ না থাকার কারণেই কিশোর গ্যাং হচ্ছে। যেখানে খেলার মাঠ হওয়ার কথা সেখানে সিটি করপোরেশন অ্যাপার্টমেন্ট করেছে। অ্যাপার্টমেন্ট করাটা সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব না। এ অ্যাপার্টমেন্টের বিষয়ে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। বিনা টেন্ডারে এ অ্যাপার্টমেন্টের ফ্ল্যাট ও দোকান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, মেয়র শহরকে রিপ্রেজেন্ট করে। আমরা যখন বিদেশে গিয়েছি মেয়র আমাদের রিসিভ করত এবং সেখানে আমাদের আপ্যায়ন করত। অতএব মেয়রের ব্যর্থতা সরাসরি নগরবাসীর ওপর বর্তায়। এ কারণে নগরবাসী এখন পরিবর্তন চায় এবং করের বোঝা থেকে বাঁচতে চায়।
বক্তব্যে তিনি অনেক প্রকার অসঙ্গতির কথা বলেছেন সেইসাথে প্রতিকারের উপায় সম্পর্কে তিনি ভেবে রেখেছে সে সম্পর্কেও কথা বলেছেন। তার মতে একজন মেয়রই একটা শহরকে রিপ্রেজেন্ট করতে পারে। সেটাই তিনি করতে চান নিজের মতো করে নারায়ণগঞ্জ শহরটাকে সাজাতে চান। তবে এখন দেখার বিষয় শেষমেশ নির্বাচিত কে হয়।