দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক আলোচনার চলচ্ছে রাজনৈতিক দলগুলোসহ বিভিন্ন মহলে। নির্বাচনে সকল দলের অংশগ্রহনে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে সকল ধরনের প্র্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। তবে বিরোধী দল বিএনপি নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে এবং নির্বাচন কমিশনের সংলাপেও অংগ্রহন করেনি। নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি রাজনৈতিক ভাবে সমাধানের কথা বলেন (সিইসি)কাজী হাবিবুল আউয়াল এবং এ বিষয়ে তাদের কিছু করার নেই বলেও জানান। নির্বাচনে ডিগবাজি খাবেন না বলে যে কথা জানালেন (সিইসি)কাজী হাবিবুল আউয়াল।
ডিগবাজী না খেয়ে সর্বশক্তি দিয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) নির্বাচন ভবনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সঙ্গে সংলাপে বসে তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
সিইসি বলেন, আমরা ডিগবাজি খাব না। আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করবে।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। এ সময় তিনি অতীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচন ও সে সময়ের সমস্যা নিয়ে কথা বলেন। বিভিন্ন কারণে ভোটের ফল ব্যাহত হওয়া, হা-না ভোট, ব্যালট ছিঁড়ে সিল দেওয়া, সামরিক শাসনের সময়কার নির্বাচনের ব্যাপারেও তিনি উল্লেখ করেন।
ইভিএমের সুবিধার বিষয়ে তিনি বলেন, লাঠি বা হকিস্টিক দিয়ে ভাঙলেও ভোট নষ্ট হবে না।
কেন্দ্র দখল ও ভোটার প্রতি পাঁচশ ভোট পড়লে এর হার বেড়ে যাওয়া সম্পর্কেও আলোচনা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। বিভিন্ন জায়গায় সমস্যা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি এসব সমস্যার সমাধান করে অর্থবহ, নিরপেক্ষ ও দুর্নীতিমুক্ত নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশ্বাস দেন।
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমাদের ওপর আস্থা রাখুন। কিন্তু চোখ বন্ধ রাখলে হবে না। নজদারিতে রাখতে হবে, যে আমরা কি আসলেই সাধু, নাকি ভেতরে ভেতরে অসাধু। সেটা যদি আপনারা নজর না রাখেন, তবে আপনাদের দায়িত্ব পালন হবে না।
এ সময় তিনি সংলাপে অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে বলেন, অর্থ শক্তিকে কীভাবে মোকাবিলা করা যায, সে বিষয়ে ধারণা দেন।এই অর্থ নিয়ন্ত্রণ করবো কীভাবে? কাগজে-কলমে পাঁচ লাখ টাকা করা হলেও যদি প্রকৃত খরচ পাঁচ কোটি টাকা হয় কীভাবে আমি আপনাকে ধরবো? আপনি আমাকে কীভাবে ধরবেন? এটা সম্ভব, এজন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
সিইসি আরও বলেন, আমাদের চর্চাটা অপসংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। টাকা ঢালাছে, মাস্তান ভাড়াদ করছে। একজন পেশাদার কিলার ভাড়া করতে আজকাল খুব বেশি খরচ হয় না, আজকাল যেটা হয়েছে। এই অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবাইকে সামাজিক আন্দোলন করতে হবে। আপনার মাঠে থাকতে হবে। আপনি আমাদের তথ্য দিলে আমরা আপনাকে সাহায্য করব। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে এই প্রতিশ্রুতির কিছু মূল্য থাকা উচিত। একেবারে যে আমরা ডিগবাজী খেয়ে যাবো তা তো না। সেটা হওয়ার কথা নয়।
তিনি বলেন, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী নির্বাচন হবে। এটা সময় মতে হবে। ভোটাররা যাবে, ভোট দেবে। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করব। আপনারাও কিছু দায়িত্ব নেবেন। অর্থ শক্তি, পেশী শক্তি মোকাবেলা এবং ভোট কেন্দ্রে শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য বেশি দায়িত্ব নিন। আমরা শেয়ার করবো দায়িত্বটা।
সমালোচনা, অনিয়ম, পক্ষপাতিত্ব নিয়েও আলোচনা করেন সিইসি। তিনি বলেন, এই বিষয়গুলোকে দূরে রেখে দায়িত্ব পালন করতে চান। কমিশনের পক্ষ থেকে তিনি এ বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেন। অনাস্থা দূর করতে সকলের সহযোগিতাও কামনা করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
সংলাপে অংশ নিয়ে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা প্রতিহত করতে কমিশনের আপ্রাণ চেষ্টা থাকবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান।
সংলাপে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল, চার নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অংশ নেন।
প্রসঙ্গত, নির্বাচনে ধরনের কারচুপি, পেশি শক্তির ব্যবহারসহ কোনো ধরনের অরজগতার সৃষ্টি হওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন (সিইসি)কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রনে করতে সবাইকেই পাশে থাকাতে হবে।