Tuesday , December 24 2024
Breaking News
Home / Countrywide / আমি আজকেও নির্দেশ দিয়েছি, বিরোধী দল একটা সুযোগ পাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

আমি আজকেও নির্দেশ দিয়েছি, বিরোধী দল একটা সুযোগ পাচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলো তাদের দল গোছানোর কাজ বেশ জোরেশোরেই করে চলেছে। ইতিমধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল সংগঠনকে শক্তিশালী করতে তৃণমূল পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশ দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় দল গোছানোর বিষয়ে বেশ শক্তিশালী পদক্ষেপ নিচ্ছে। আ.লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা তৃণমূল পর্যায়ের ত্যাগী এবং পোড় খাওয়া নেতাদের প্রাধান্য দিয়ে সংগঠন সাজানোর কথা বললেন।

জাতীয় সম্মেলন ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ে সব ধরনের দলীয় কোন্দল নিরসন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্দেশনা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়ার্ড থেকে শুরু করে ইউনিয়ন, থানা, শহর, উপজেলা, মহানগর ও জেলা কমিটি গঠনের কাজ শেষ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। প্রতিটি ইউনিটকে ব্যাপক হারে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে বলেছেন। এই ক্ষেত্রে, কোনও অনুপ্রবেশকারী যাতে দলে প্রবেশ করতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকার কথা বললেন। একই সঙ্গে দুর্দিনের ত্যাগী কর্মীরা যাতে কোনো পক্ষপাতিত্বের শিকার না হয় এবং পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ না পড়ে, সে বিষয়েও নির্দেশনা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

রোববার গণভবনে আওয়ামী লীগের আট বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকদের বৈঠকে তিনি এ নির্দেশনা দেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, এসএম কামাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল উপস্থিত ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় বৈঠক শুরু হয়ে চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। সাংগঠনিক সম্পাদকরা তাদের নিজ নিজ বিভাগের সাংগঠনিক প্রতিবেদন দলীয় সভাপতির কাছে লিখিত আকারে উপস্থাপন করেন। দলীয় প্রধান সাংগঠনিক সম্পাদকদের বক্তব্য শোনেন। তারা তাদের বিভাগের বিভিন্ন সমস্যার কথাও তুলে ধরেন। দলের সভাপতি এসব সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানও দেন।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, বৈঠকে শুধু সাংগঠনিক নির্দেশনা পাওয়া গেছে। দল একত্রিত করা, নিয়োগ এবং কনফারেন্সিং। তিনি বলেন, কবে জেলার নেতাদের গণভবনে ডাকা হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে কবে ডাকা হবে তা চূড়ান্ত হয়নি। তিনি আরও বলেন, এবার গণভবনে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন ডাকা হতে পারে। উপস্থিত একাধিক নেতা জানান, আগামী ডিসেম্বরে দলের জাতীয় সম্মেলনের কথা মাথায় রেখে সংগঠনের অসমাপ্ত কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা। দলের পোড় খাওয়া ও দীর্ঘদিন ধরে দলের রাজনীতির সঙ্গে আছেন-এ ধরনের মানুষকে যেন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তেলের দাম বৃদ্ধি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। আমেরিকার গ্যাস উত্তোলন চুক্তি দল নাকচ করেছিল। যে কারণে ২০০১ সালে দলটি ক্ষমতায় আসতে পারেনি। তাও আলোচিত। সরকারের অর্জন দেশবাসীর সামনে তুলে ধরতে বলেন প্রধানমন্ত্রী।

দ্রব্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বিরোধী দলগুলোকে কিছু না করার নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। তিনি বলেন, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলে কাউকে আটকানো যাবে না। নির্বাচনের আগে বিরোধী দল উসকানি দেয়। সেখানে পা রাখা যাবে না। দলটির নেতাকর্মী, দলীয় জনপ্রতিনিধি এবং আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের জনগণের কাছে যেতে বলা হয়েছে।

তাদের বোঝা উচিত আন্দোলনের নামে বাড়াবাড়ি করলে জনদুর্ভোগ বাড়বে: সূচনা বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চলমান বিশ্ব মন্দার কথা তুলে ধরে বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় দেশে বিরোধীরা প্রতিবাদ করতে পারে, কিন্তু তাদের এটাও বোঝা উচিত। বাড়াবাড়ি দেশের ক্ষতির পাশাপাশি মানুষের দুর্ভোগ বাড়াবে। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা তার সরকারের আছে উল্লেখ করে সরকারপ্রধান বলেন, আমি জানি না তারা (বিএনপি) তাদের আন্দোলনে কতটা সফল হবে, তবে তারা যেভাবে করতে চায় তাতে দেশের আরও ক্ষতি হবে। কিন্তু আমরা এটা সামলাতে পারবো, আমার সেই বিশ্বাস আছে।

তিনি বলেন, বিরোধী দল সুযোগ পাচ্ছে, তারা প্রতিবাদ করুক। তারা আন্দোলন করবে, করুক। আমি আজকেও নির্দেশ দিয়েছি খবরদার যারা আন্দোলন করছে তাদের কাউকে যেন গ্রেফতার করা না হয় বা ডিসটার্ব করা না হয়। তারা প্রধানমন্ত্রীর অফিসও ঘেরাও দেবে, আমি বলেছি হ্যাঁ আসতে দেব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হলে বিদ্যুতের এই সমস্যা অনেকাংশে দূর হবে। আর বিশ্ববাজারে যখনই তেলের দাম কমবে তখনই সমন্বয় করার নির্দেশ রয়েছে। হয়তো আরো কিছুদিন কষ্ট পেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া রোগ চলে গেলে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটকে কেন্দ্র করে স্যাংশন (অবরোধ) ও পালটা স্যাংশন সর্বনাশ ডেকে আনছে,, যার শিকার হচ্ছে বিশ্বের সাধারণ মানুষ। ইউরোপ এমনকি আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে দক্ষিণ এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া- প্রতিটি মহাদেশের মানুষ ভুগছে। সব কিছুতেই এর প্রভাব পড়ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের কিছু লোক তো থাকেই ওই ছুতা ধরে অপ্রয়োজনেও জিনিসের দাম বাড়িয়ে দেয়। সেটাই হচ্ছে কিছু কিছু। তা না হলে দাম এত বাড়ার কথা নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিষেধাজ্ঞা দিয়ে লাভ কী? প্রকৃতপক্ষে কেউ যদি লাভবান হয়ে থাকে, তা হয়েছে আমেরিকা ও রাশিয়া। বিশ্ববাজারে বেড়েছে ডলার ও রুবেলের মূল্য।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ জাতীয় নির্বাচনে যাতে জয়ী হতে পারে সেজন্য তৃণমূল পর্যায়কে গুরুত্ব দিয়েছে। কারন একটি দলের ভিত্তি হলো তৃণমূল পর্যায়ের নেতারা এবং তাদের নেতৃত্বে দলের সমর্থন পায় সাধারণ মানুষের কাছ থেকে। তাই প্রধানমন্ত্রী বেশ কৌশলী সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে। এদিকে অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপি অনেকটা গোপনে সংগঠন শক্তিশালী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন একাধিক সূত্র জানায়।

About bisso Jit

Check Also

ভারতের গণমাধ্যমে প্রতিবেদন ফাঁস, বন্দিদের ভারতে পাঠাতেন শেখ হাসিনা

ভারতের গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *