মোটা অংকের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে দেওয়া হয়েছে। পদ বিক্রি সংক্রান্ত ৫ টি ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা মহলে বির্তকের সৃষ্টি হয়। শনিবার( Saturday ) সংবাদ সন্মেলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের( University Chittagong ) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরিন( Dr. Shirin ) আখতার এটা তার বিরুদ্ধে ষ”ড়যন্ত্র বলে আখ্যা দেন। এ ঘটানায় তিনি ‘বিব্রত’ বলে সাংবাদিকদেরকে জানিয়েছেন।
ফোন ফাঁসের ব্যাখ্যা দিতে শনিবার( Saturday ) এক সংবাদ সম্মেলনে নিজের বিব্রতকর অবস্থা প্রকাশ করেন উপাচার্য। চট্টগ্রামের মেহেদীবাগে ছাবির চারুকলা ইনস্টিটিউটে( Institute Fine Arts Mehedibagh, Chittagong ) এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
উপাচার্য অধ্যাপক শিরীন আখতার বলেন,আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে প্রায় ৯০০ শিক্ষক রয়েছেন। আমি কয়েকটা অ্যাপয়েন্টমেন্টও করেছিলাম। কিন্তু এর আগে কোনো প্রশ্ন ওঠেনি। এই ঘটনায় আমি বিব্রত (ফোনের কথোপকথন ফাঁ’স)। আমার ও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা দোষীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনব। আমরা দুদকের( ACC ) মাধ্যমে এ বিষয়ে তদন্ত করতে চাই, দুদকের( ACC ) তদন্তে আরও গভীরে যাওয়ার অবকাশ রয়েছে।
উপাচার্য বলেন, আমি মরতে পারি কিন্তু অন্যায় করব না। আমি অসম্ভব কনফিডেন্ট। আমি কোনো অসঙ্গতি করিনি। ভুল প্রমাণিত হলে যেই হোক না কেন, তার দৃষ্টান্তমূলক শা’স্তি হবে।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান( SM Monirul Hasan ) বলেন, ফোনালাপের টাকা নিয়ে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের নিয়োগ বোর্ডের সিদ্ধান্ত বাতিল করা হয়েছে।
এছাড়া উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী খালেদ মিসবাহুল( Khaled Misbahul ) মোকার রবিনকে অন্য বিভাগের পদ থেকে অপসারণ এবং হিসাব নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী আহমেদ হোসেনকে( Ahmed Hossain ) কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান( SM Monirul Hasan ) বলেন, “আমরা জোর দিয়ে বলতে চাই যে, বর্তমান প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগসহ সব ধরনের দুর্নীতির কোনো সম্পর্ক নেই। তাই চবিতে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী নিয়োগে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদ সম্পূর্ণ বিভ্রা’ন্তিকর, অসত্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
তিনি বলেন, “অডিও ক্লিপটি কর্তৃপক্ষের নজরে আসার সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টির আসল রহস্য উদঘাটনে ৯ জানুয়ারি হাটহাজারী মডেল থানায় একটি জিডি করে। যেহেতু এটি একটি আইনি বিষয় এবং তদন্তাধীন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে তদন্ত প্রতিবেদনের অপেক্ষায় ছিল।
৩ নভেম্বর( November ), ২০১৯ তারিখে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পান প্রফেসর ড. শিরিন( Dr. Shirin ) আখতার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা এবং ১৮ তম উপাচার্য। ২০২১ সালের এপ্রিলে( April year ), উপাচার্যকে দ্বিতীয় মেয়াদ দেওয়া হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের( University Chittagong ) ঘটনার প্রকৃত তদন্ত করা উচিত বলে মনে করেন সুধী সমাজসহ সমাজের সকল পেশাজীবি মানুষ। এ ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ও দূরনীতি শিক্ষাঙ্গনে কাম্য হতে পারে না এমন বলছেন সাধারন মানুষেরা। নীতি ও আদর্শকে বর্জন করে কোন কর্মকান্ড সম্পাদিত না হয় এ বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে সর্বসাধারনকে।