আমির হামজা ব্যক্তিগত জীবনে ব্যবসায় ও কৃষিকাজের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। এছাড়াও, তিনি পালাগান ও কবিগানের সাথে যুক্ত ছিলেন বলে জানা যায়। তার লেখা প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই ‘বাঘের থাবা’ বইটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে ( Sheikh Mujibur Rahman ) নিয়ে লেখেন তিনি। ‘পৃথিববীর মানচিত্রে একটি মুজিব তুমি’ নামক গানের বইটি মজিবর্ষ উপলক্ষে প্রকাশিত হয় এটি তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্হ। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবনের ইতিহাস এটিতে তুলে ধরা হয়।
রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ বেসা”মরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার (সাহিত্যে) মো. আমির হামজা ( Md. Amir Hamza ) নামে এক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়ার পর আবারও বিতর্কের মুখে তা বাতিল করে সরকার। আমির হামজাকে বাদ দিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ শুক্রবার ( Friday ) সংশোধিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তালিকা প্রকাশ করেছে। আমির হামজার কর্মকাণ্ড নিয়ে যারা ভুল তথ্য দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে এবার ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে সরকার।
জাতীয় পুরস্কার সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির আহ্বায়ক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক ( K M Mozammel Haque ) শনিবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
এ ঘটনায় যারা ভুল তথ্য দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মন্ত্রী। এরই মধ্যে জড়িতদের প্রতিবাদ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে জানানো হয়েছে। কেন তাকে এই পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে তার ব্যাখ্যাও চেয়েছে কমিটি।
১৫ মার্চ, সরকার ঘোষণা করেছে যে ১০ জন ব্যক্তি এবং একটি সংস্থাকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান, স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। প্রয়াত আমির হামজা সাহিত্যে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত হন। অচেনা এই ব্যক্তিকে রাজ্যের সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করায় অনেকেই বিস্মিত। বিতর্কের পর আমির হামজার লেখা তিনটি বই ”বাঘের থাবা” এক মুজিব তুমি ও একুশের পাঁচালী বিশ্বের মানচিত্রে স্থান পায়।
মরণোত্তর পদক বিজয়ী আমির হামজার বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার বারিশাত গ্রামে। তিনি ওই গ্রাম তথা গোটা জেলার মানুষের কাছে পালাগানের শিল্পী বা কবি হিসেবে পরিচিত। তবে ১৯৭৮ সালে বারিশাত গ্রামে শাহাদাত ফকির নামে এক কৃষক ও শিল্পী নামের আড়াই বছরের শি”শুকে প্রাণনাশের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। ২০০৭ সালে স্থানীয় গ্রামের লড়া”ইয়ের সর্বশেষ ঘটনায়ও তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছিল, পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। এ ঘটনায় তাদের দুই ভাইসহ মোট ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। আট বছর কা’রাভোগের পর ১৯৯১ সালে মাগুরার মন্ত্রী মজিদুল হকের সহায়তায় বিএনপি সরকার গঠন করে। আমির হামজাও রাজনৈতিক কারণে সাধারণ ক্ষমা পেয়েছেন।
আমির হামজার ছেলে আসাদুজ্জামান সরকারি কর্মকর্তা। তিনি খুলনা জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। আসাদুজ্জামানের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি গনমাধ্যমকে বলেন, তার বাবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে।
এর আগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ২০২০ সালে স্বাধীনতা সাহিত্য পুরস্কার বাতিল করে সরকার। সে বছর স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা এসএম রইজ উদ্দিন আহমেদ। ওই সময় ঘটনার জন্য দায়ীদের চিহ্নিত করে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রসঙ্গত, প্রতিটি মানুষের ব্যক্তিগত জীবনে বিতর্ক থাকতেই পারে এটাই স্বাভাবিক। সামগ্রিক বিষয় বিবেচনায় তার ব্যক্তিগত জীবনও নিয়ে বির্তকিত হওয়া সকলের নিকট সমচীন নয় বলে সুধী সমাজের মন্তব্য। রাষ্টের সর্বোচ্চ পুুরষ্কার সহ যে কোনো পুরস্কার মনোনয়ন দেবার বিষয়ে অত্যন্ত বিবেচনাপ্রসুত হওয়া উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পুরস্কার দেবার জন্য যাদেরকে মনোনয়ন দেয়া হবে তাদের সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জেনে পুরষ্কার ঘোষনা পরে তা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি অত্যন্ত দূর্ভাগ্যজনক সকলের নিকট।