Thursday , November 14 2024
Breaking News
Home / Countrywide / ‘আমার স্ত্রীর ইজ্জতের মূল্য কি এক হাজার টাকা?’

‘আমার স্ত্রীর ইজ্জতের মূল্য কি এক হাজার টাকা?’

পাবনার বেড়া উপজেলার সরকারি একটি আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় এক গৃহবধুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তকে নাকে খত, জুতাপেটা ও মাত্র এক হাজার টাকার জরিমানা করে মিমাংসার করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

এ ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

সম্প্রতি উপজেলার চাকলা ইউনিয়নের ঈদগাহ মাঠে অবস্থিত চাকলা আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় আয়োজিত ঘটনায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। এর আগে গত বুধবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার দুপুরে আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম শফিক প্রকল্পের আরেক বাসিন্দা সালেহা খাতুনের (ছদ্মনাম) বাড়িতে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে গেলে অভিযুক্তরা পালিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) চাকলা ইউনিয়ন পরিষদে সালিশ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদারের নেতৃত্বে আসামিদের মারধর, জুতা মারার ঘটনা এক হাজার টাকায় মীমাংসা হয়।

এ সময় ভুক্তভোগীদের ভবিষ্যতে কোনো মামলা বা ঝামেলা না করারও হুমকি দেন চেয়ারম্যান। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠলে শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে অভিযুক্ত শফিককে আটক করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ।

নির্যাতিতার স্বামী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “মাত্র এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমার স্ত্রীর ইজ্জত এক হাজার টাকা? আমি সেখানে অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। চেয়ারম্যান বললেন- ‘আপনি যদি আদালতে যান, তাহলে বলবো। তোমার স্ত্রীর সাথে তোমার দেহ ব্যবসা করো’, তাই আমি প্রথমে থানায় যাইনি। আমি চাই আমার স্ত্রীকে ধর্ষণ ও তমসার বিচার হোক।’

 

চাকলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইদ্রিস আলী সরদার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, উভয় পক্ষ আমার কাছে এলে স্থানীয় সদস্যদের সহায়তায় আমি সালিশ বৈঠক করি। ধর্ষণের অভিযোগ ছিল না। তারপরও এক মহিলার বাড়িতে অনুপ্রবেশের অভিযোগে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু জরিমানা করা হয়নি। নেওয়া ১০০০ টাকা জরিমানা নয়, দেওয়া হয় গ্রাম পুলিশের খরচ হিসেবে। উভয় পক্ষই তখন আমাদের সিদ্ধান্ত মেনে নেয়। এখন তারা মানছে না।

তিনি বলেন, “একজন ক্যাবল ও আমার প্রতিপক্ষের লোকজন আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য ছড়াচ্ছে। যেহেতু তারা এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে। এখন আইনে যা হবে তাই হবে। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ ভিত্তিহীন।

এ ব্যাপারে বেড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রশিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়ে গত শনিবার রাতে অভিযান চালিয়ে আসামি শফিকুল ইসলাম শফিককে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

About Zahid Hasan

Check Also

উপদেষ্টা পরিষদেই বৈষম্য

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে আঞ্চলিক বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। ২৪ সদস্যের এই পরিষদে ১৩ জনই চট্টগ্রাম …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *