অভিনেত্রী নোভা ফিরোজ নাটক এবং বিজ্ঞাপনচিত্রে অভিনয়ে মন কেড়েছেন দর্শকদের। স্বপ্নের হাত ধরে প্রথম বড় পর্দায় আগমন তার।তবে শুরুটা একেবারেই খারাপ না বরং অনেকটাই সুন্দর ছিল।কিছুদিন অনিয়মিত হলেও বড় পর্দার হাত ধরে আবারও আগমন। তবে এইবার কেড়েছেন দর্শকদের মন হয়েছেন প্রশংসায় পঞ্চমুখ।
ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী নোভা ফিরোজ। ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন মডেলিং দিয়ে। এরপর দীর্ঘদিন নিয়মিত কাজ করেছেন বিজ্ঞাপনচিত্র, নাটক-টেলিছবিতে। করেছেন উপস্থাপনাও। তবে কোনও মাধ্যমেই আগের মতো নিয়মিত নন তিনি।
এদিকে সম্প্রতি প্রথমবারের মতো সিনেমায় কাজ করেছেন এই অভিনেত্রী। গত শুকবার মুক্তি পেয়েছে তার অভিনীত সিনেমা ‘মৃধা বনাম মৃধা’। রনি ভৌমিকের পরিচালনায় এ ছবিতে প্রধান চরিত্রগুলোতে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান, সিয়াম আহমেদ ও নোভা ফিরোজ। সিনেমাটি দেখার পর মুগ্ধ হয়ে প্রশংসা করছে দর্শকরা।
প্রথম ছবির অভিজ্ঞতাসহ নানা বিষয়ে নোভা কথা বলেছেন এক জাতীয় দৈনিকের সঙ্গে।
নিজেকে বড় পর্দায় দেখার অভিজ্ঞতা নিয়ে নোভা বলেন, এ এক দারুণ অভিজ্ঞতা। প্রথমত, জীবনের প্রথম নিজেকে বড় পর্দায় দেখলাম। পাশাপাশি তারিক আনাম খান, নিমা রহমান, সানজিদা প্রীতি, সিয়াম আহমেদের মতো গুণী মানুষের সহশিল্পী হিসেবে কাজ। তাই এটা আমার জন্য অনেক বেশি আনন্দের।
তিনি বলেন, তারিক আনাম খান যখন সেটে থাকেন, তিনি শিক্ষকের মতো হয়ে যান। কোনো একটি দৃশ্য চিত্রায়ণের সময় তিনি অভিনয়ের খুঁটিনাটি হাতে-কলমে শিখিয়ে দেন। বলা যেতে পারে, তার সান্নিধ্যে ছবিটির শুটিংয়ে এতগুলো দিন পার করে অনেক কিছু শিখেছি, যা আমার আগামীতে যে কোনো অভিনয়ের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে।
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘মৃধা বনাম মৃধা’ ছবিতে আমরা পারিবারিক গল্প দেখানোর চেষ্টা করেছি। যারা ছবিটি এরই মধ্যে দেখেছেন, প্রত্যেকেই প্রশংসা করেছেন। ছবি শেষ হওয়ার পর অনেককেই দেখলাম, তাদের চোখে-মুখে দুঃখ দুঃখ ভাব করে সিনেমা হল থেকে বের হচ্ছেন। অনেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে আবারও ছবিটি দেখবেন বলেছেন। এখানেই আমাদের সার্থকতা বলব।
প্রথম সিনেমা হিসেবে পারিবারিক গল্প বেছে নেওয়ার কারণও জানান নোভা। বলেন, আমার বাবা-মা বেঁচে নেই। বাবাকে হারিয়েছি সেই ছোটবেলায়। এর পর বড় হয়ে মাকে। সন্তান হিসেবে তাদের সঙ্গে অনেক সময় ভুল করেছি, যা এখন উপলব্ধি করতে পারি। আমাদের এই সিনেমা বাবা-সন্তানের গল্প নিয়ে। এর মাধ্যমে আমরা শুধু একটা বার্তাই দিতে চেয়েছি- সময় গেলে সাধন হবে না। নিজের বাবা-মা এবং সন্তানকে সময় দিন। কারণ আমাদের জীবনে সময় খুব অল্প। এখন সময় না দিলে পরে আফসোস থাকবে জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত। প্রিমিয়ারের দিন আমার ৮ বছরের ছেলে সিনেমাটি দেখে অঝোরে কেঁদেছে। বলতে পারি, ছবিটি দর্শকদের একটু হলেও ভাবাবে।
তিনি বলেন, আমি সব সময় বলি, আমি একজন অভিনেত্রী। নিজের প্যাশনের জায়গা থেকে অভিনয় করতে ভালোবাসি। সব সময় গল্প বা চরিত্রের প্রেমে পড়ে কাজ করি। চরিত্রের মাধ্যমে অভিনয়ের তৃষ্ণা মেটাতে চেয়েছি। সেই দিক থেকে ‘মৃধা বনাম মৃধা’ আমাকে তৃষ্ণা মেটানোর সুযোগ দিয়েছে।
নোভা যখন অভিনয় করেন তখন সেই ক্যারেক্টার এর ভিতরে নিজেকে ঢুকিয়ে নেন। অভিনয়টাকে যে খুব নিজের সাথে মানিয়ে নিয়েছেন, আয়ত্ত করে নিয়েছেন পুরোটাই, সেটা আর বলার উপেক্ষা রাখে না। তাইতো দর্শকদের মন কাড়ার পাশাপাশি চোখে পানিও এনে দিয়েছেন নিজের অভিনয় দিয়ে।