সিনিয়র সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়া (৭৩) গতকাল ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষের সময় টিয়ারশেলের আঘাতে তিনি রিকশা থেকে পড়ে মারা যান বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু তার মেয়ে উর্মি বললেন ভিন্ন কথা। প্রয়াত সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়ার মেয়ে বলেন, তার বাবা টিয়ারশেলের আঘাতের চেয়ে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে (স্ট্রোক) মারা গেছেন।
নিহত রফিক ভূঁইয়া জাতীয় প্রেসক্লাবের সদস্য ও সাপ্তাহিক নতুন কাগজের সম্পাদক ছিলেন। সোমবার (৩০ অক্টোবর) সকালে বাংলাভিশনের সঙ্গে ফোনালাপে রফিক ভূঁইয়ার মেয়ে ঊর্মি তার বাবার মৃত্যু নিয়ে বিভিন্ন সংবাদে আপত্তি জানিয়ে বলেন, আমার বাবা স্বাভাবিকভাবেই মারা গেছেন। তিনি কোনো সংঘর্ষে জড়াননি।
উর্মি বলেন, রিকশায় যাওয়ার পথে বাবা হঠাৎ স্ট্রোক করে রিকশা থেকে পড়ে যান। এরপর তিনি ব্রেন ডেড হয়ে যান। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়। স্ট্রোকের কারণে ভারসাম্য রাখতে না পেরে রিকশা থেকে পড়ে যায়। আর তখন মাথার পিছনে ব্যথা পাওয়া ইন্টার্নাল ব্লিডিং হয়েছে।
টিয়ারশেলের মৃত্যুর বিষয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে প্রচারিত তথ্যে আপত্তি জানিয়ে উর্মি বলেন, এ ধরনের খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমার বাবাকে টিয়ারশেল মেরে ফেললে আমরাই জিডি করতাম বা অভিযোগ করতাম। কিন্তু স্বাভাবিক মৃত্যু হওয়ায় আমরা সেগুলো করিনি। আমরা কিছু না বললেও কেউ কেউ এ ঘটনায় নানা রং ছড়াচ্ছে।
পরে বাবার বিভিন্ন অর্জনের কথা তুলে ধরে ঊর্মি বলেন, আমার বাবা দেশের জন্য যুদ্ধ করেছেন কিন্তু কোনো সুফল নেননি। সুবিধা নিতে রাজি না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা সনদও ছিঁড়ে ফেলেন তিনি। সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়ার মেয়ে এই মানুষটিকে নিয়ে যারা এমন মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে তাদের থামাতে বলেছেন।
এর আগে শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাবে যাওয়ার পথে সেগুনবাগিচায় রিকশা থেকে পড়ে মাথায় আঘাত পান রফিক ভূঁইয়া। পরে তাকে কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় তিনি মারা যান।
রফিক ভূঁইয়া ১৯৫১ সালের ১০ জানুয়ারি ফেনীর দাগনভূঁইয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি চার ছেলে ও দুই মেয়ে রেখে গেছেন।