দেশের সঙ্গীত অঙ্গনের বহুল আলোচিত ও জনপ্রিয় শিল্পী বাপ্পা মজুমদার। তিনি একজন গীতিকার এবং সুরকার। বাপ্পা মজুমদার অসংখ্য গান লিখেছেন। অবশ্যে তিনি নিজের জন্য গান লেখার পাশাপাশি অন্যান্য শিল্পীদের জন্যেও গান লিখেছেন। তার গান গুলো শ্রোতা মাঝে বেশ সাড়া ফেলেছে। সম্প্রতি তার নতুন কেটি গান প্রকাশ পেয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এই বিষয়ে এবং চলমান নিজের ব্যস্ততা নিয়ে বেশ কিছু কথা জানালেন এই জনপ্রিয় শিল্পী।
বাপ্পা মজুমদার। সম্প্রতি তার নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছে নতুন গান ‘হে পাথর’। এই গান সৃষ্টির পেছনের গল্প, এ সময়ের ব্যস্ততা ও অন্যান্য প্রসঙ্গে কথা হয় তার সঙ্গে-
অনেকে বলছেন, ‘হে পাথর’ গানে নতুন এক বাপ্পাকে খুঁজে পাওয়া গেছে- এ নিয়ে আপনার কী মত?
বিচারক তো শ্রোতা, তাদের মতামতই আসল। এটা ঠিক যে, আমার এ সময়ের অন্যান্য গান থেকে ‘হে পাথর’ কিছুটা আলাদা। মহসীন মেহদীর লেখা এই গানের কথা পড়ার পর নিজেও কিছুটা সময় থমকে গিয়েছিলাম। এ যেন কোনো গানের কথা নয়, বিশ্বজুড়ে চলমান নানা সং/ঘা/ত, ক্ষমতার দাপট, গোঁড়ামি- আরও অনেক বিষয় সেখানে উঠে এসেছে। তাই সুর-সংগীতায়োজন থেকে শুরু করে গায়কিতেও নতুনভাবে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। এককথায়, ‘হে পাথর’ গানের মাধ্যমে বলেছি মানবতার কথা।
নিরীক্ষাধর্মী কাজের প্রতি দুর্বলতা কি সব সময় ছিল?
সৃষ্টির নে/শা যখন পেয়ে বসে, তখন হবে-না হবে বুঝে ওঠা কঠিন। যে জন্য গান নিয়ে কাটাছেঁড়া সব সময়ই চলে। আমার মনে হয়, কমবেশি সব মিউজিশিয়ান চান সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তার সময় ধরে রাখতে, নয়তো সময়কে অতিক্রম করে যেতে। সেই দলে আমার থাকাটা নিশ্চয় দোষের কিছু না।
অনেকে অ্যালবাম তৈরি থেকে পিছিয়ে এসেছে। অথচ আপনি ঘোষণা দিয়ে অ্যালবাম তৈরি করছেন, কারণ কী?
অ্যালবামের মজা হলো নানা ধরনের গান শোনার সুযোগ পাওয়া। প্রকাশনার মাধ্যম বদলে যাওয়ার কারণে এখন অনেকে অ্যালবামের কথা ভাবছেন না। কিন্তু শ্রোতার কাছে এর প্রত্যাশা ফুরিয়েছে বলে আমার মনে হয় না। সে কারণেই দলছুটের পর একটি মিক্সড অ্যালবামের আয়োজন শুরু করেছি।
আপনার সুরে মিক্সড অ্যালবামটি সম্পর্কে জানতে চাই?
এর মধ্যে অনেকেই শুনেছেন, ‘বিউটিফুল ভয়েজেস’ নামে একটি মিউজিক প্রজেক্টের কাজ শুরু করেছি। আসলে একে প্রজেক্ট না বলে অ্যালবাম বলাই ভালো। কারণ, এতে আমার সুর ও সংগীতায়োজনে আঁখি আলমগীর, কনা, এলিটা করিম, জয়িতা, কোনালসহ বেশ কয়েকজন শিল্পী গান গেয়েছেন। যাদের প্রত্যেকের কণ্ঠ আমার ভীষণ প্রিয়। এটি মূলত প্রথম সিজনের কাজ। ইচ্ছা আছে এটি ধারাবাহিকভাবে তৈরি করে যাওয়া।
‘বিউটিফুল ভয়েজেস’ অ্যালবামের গানগুলো কবে করার পরিকল্পনা করেছেন?
গানের রেকর্ডিং শেষ। এখন ভিডিও নির্মাণ করা হচ্ছে। ভিডিওর কাজ শেষ হলেও একে একে গানগুলো প্রকাশ করা শুরু করব। আশা করছি, এ বছরের শেষ প্রান্তে সব গানই প্রকাশ করতে পারব। এখন দেখা যাক, পরিকল্পনা অনুযায়ী বাকি কাজ শেষ করতে পারি কিনা।
দুটি সিনেমায় সংগীত পরিচালনা শুরু করছিলেন, কাজ কি শেষ?
‘ভালোবাসা বীরকন্যা প্রীতিলতা’ ছবির গান অনেক দিন আগেই রেকর্ড করা হয়েছে। ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কাজও শেষ। পাশাপাশি এ ছবির জন্য ‘দ্য রিবেল’ শিরোনামে একটি থিম মিউজিক তৈরি করেছি। ছবির পরিচালক জানিয়েছেন, ডাবিংয়ের কাজ শেষ হলেই মুক্তির দিন-তারিখ চূড়ান্ত করবেন। একই সঙ্গে গানগুলোও প্রকাশ করা হবে। এই ছবির পাশাপাশি যে স্বল্পদৈর্ঘ্য ছবির কাজ শুরু করেছিলাম, তার ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকের কাজও শেষ করেছি।
‘মন দাবাড়ূ’ আর ‘প্রবঞ্চনা’ গান দুটি প্রকাশের পর দলছুটের নতুন কোনো আয়োজন চোখে পড়েনি, কারণ কী?
করোনার জন্য আমরা দীর্ঘদিন কোনো শো করতে পারিনি। পুরো পৃথিবী যখন খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, এমন একটা সময়ে নতুন গান প্রকাশের কথা ভাবি কীভাবে। এ জন্যই দলছুটের নতুন কোনো গান প্রকাশ করিনি। তবে ‘সঞ্জীব’ অ্যালবামের জন্য আমাদের বেশ কিছু গান রেকর্ড করা আছে। সময়-সুযোগ বুঝে সেই গানগুলো একে একে প্রকাশ করব।
বর্তমান মসয়ে দেশের তারকা ব্যক্তিরা সোশাল মাধ্যমে বেশ সরব ভূমিকায় রয়েছেন। এমনকি অনেক নাটক এবং গান এই অনলাইন মাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে। এছাড়াও অনলাইন অনেক প্লাটফর্মে সিনেমাও প্রকাশিত হচ্ছে। অবশ্যে অনেক তারকাদেরই নিজেদের নামে ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে। তারা প্রতিনিয়নত নতুন নতুন অনেক কিছুই ঐ মাধ্যমটিতে প্রকাশ করছে।