গাজীপুরে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে একজন নিহত ও অন্তত সাতজন আহত হয়েছেন। ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে নিহত আসলাম মিয়ার (৩০) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
নিহত আসলাম মিয়া উপজেলার সালটিয়া ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের মৃত মোছালেম উদ্দিন ও হোছনা খাতুনের ছেলে । তিনি পেশায় সবজি ব্যবসায়ী। স্ত্রী ফাতেমা খাতুন, দুই ছেলে শুভ (১১), আবু রায়হান (২) ও এক মেয়ে আরিফা (৮) এবং বৃদ্ধ মা হোসনা খাতুনকে নিয়ে তার ছয়জনের সংসার ছিল।
আসলামের স্ত্রী ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘আমার দুই ছেলে, এক মেয়ে। তাদের বাবা ট্রেন দুর্ঘটনায় মারা যান। এখন বাচ্চাদের কি হবে?’
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘আমার জামাই নির্দোষ, আমার জামাই কোনো অন্যায় করছেন না। তাহলে কেন তিনি এভাবে মারা গেলেন?
নিহতের মা হোছনা খাতুন বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন। আমার বাবাকে মারলে কেন? যারা হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই।
নিহতের ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া শুভ মিয়া বলেন, ‘যাদের জন্য ট্রেন দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বাবা মারা গেছে তাদের বিচার চাই।’
প্রতিবেশী জলিল মোল্লা বলেন, ‘আসলামের উপার্জনে পাঁচ-ছয়জনের সংসার চলত। আজ ট্রেন দুর্ঘটনায় তার মৃত্যু হয়েছে। গরীব মানুষ এখন কিভাবে চলবে এই সংসার? আসলামের পরিবারের জন্য সরকারের কাছে সাহায্য এবং এ ঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি কামনা করছি।’
শালতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হক বলেন, “আসলাম মিয়া পেশায় একজন সবজি বিক্রেতা। প্রতিদিন গফরগাঁওয়ের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে সবজি কিনে ঢাকায় বিক্রি করতেন। প্রায় প্রতিদিনই কাঁচামাল নিয়ে ট্রেনে যাতায়াত করতেন। গতকাল রাতে সবজি নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার পথে ভোর ৪টার দিকে গাজীপুরের ভাওয়াল রেলস্টেশনে ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হলে ঘটনাস্থলেই আসলামের মৃত্যু হয়।আত্মীয় স্বজনদের কান্নায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনি জানান, বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) মধ্যরাতের পর ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের রৌহা গ্রামে পারিবারিক কবরে আসলাম মিয়ার দাফন সম্পন্ন হয়।