নির্বাচনের কয়েকদিন আগেই থেকেই একে ওপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছোড়ির বিষয়টি লক্ষ্য করা যায় প্রার্থীদের মধ্যে। এছাড়াও নির্বাচনে হেরে গেলে ভোট কারচুপির অভিযোগও তুলে থাকেন কেউ কেউ। এদিকে গেল সোমবার (১৭ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদ নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
নির্বাচনের একদিনের মধ্যেই কারচুপির অভিযোগ ওঠে। ইভিএম কারচুপির মাধ্যমে হেরে যাওয়ার অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ১নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী প্রার্থী আছিয়া খানম সুমি। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার জন্য দলীয় এমপি একেএম শামীম ওসমানকেও দায়ী করেন তিনি। সুমি আওয়ামী মহিলা লীগের জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।
মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর দেওবাগে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেন, ভোটের আগের রাতে এমপি শামীম ওসমান চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ডেকে সাদিয়া আফরিনকে ভোট দিতে চাপ দেন। এরপর কেউ নির্বাচনে অংশ নিলে ওসমান পরিবারের অনুমতি নিতে হবে। নারায়ণগঞ্জে যারা প্রকৃত আওয়ামী লীগ, তাদের নাম দলে নেই। এখানে সব ওসমান লীগ আছে।
ভোটারদের কাছে ক্ষমা চেয়ে সুমি বলেন, ‘আমি আমার ভোটারদের কাছে ক্ষমা চাইছি। ভোটারদের কাছে আমি পরাজিত হইনি। আমি ওসমান পরিবারের দুই ভাই শামীম ওসমান ও সেলিম ওসমানের কাছে পরাজিত হয়েছি। তিনি আমাকে ভোটে কারচুপি করে অযৌক্তিক ফলাফল দিয়েছেন।
সুমি আরও বলেন, সারা বাংলাদেশে তিনি (শামীম ওসমান) আইডল। আমার মতো একজন সাধারণ নেতা যে কখনো তার বিরুদ্ধে কথা বলেনি, সে কেন আমার সঙ্গে খেলা খেলল? নির্বাচনে এমন করবে আগে বললেই তো আমি নির্বাচনে অংশ নিতাম না।
দুই সংসদ সদস্যের নির্দেশে ভোটের দিনও কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সুমির। পরাজিত প্রার্থী বলেন, ‘৯০ ভোটার আমার কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আমি ৯০ না পেলেও ৩০ ভোট পেতাম। আমি যে ফলাফল পেয়েছি তা পরিষ্কার নয়। এখানে কারচুপি হচ্ছে। দুই সংসদ সদস্যের মতে, নির্বাচন কর্মকর্তারাও এই কারচুপির সঙ্গে জড়িত।
একজন অফিসার বলছেন ১০২ ভোটের পর মেমোরি কার্ড পরিবর্তন করা হবে। মেমোরি কার্ড বদলানো হলো কেন? ডিসি স্যার (রিটার্নিং অফিসার) প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠকে বলছিলেন, কেন্দ্রে সাংবাদিকদেরও ঢুকতে দেওয়া হবে না। তবে সেখানে নেতাকর্মীরা ছিলেন যারা সবাই শামীম ওসমানের অনুসারী। কেন্দ্রগুলো সব শামীম ওসমানের লোকদের দখলে ছিল। বারবার এ কথা বলার পরও পুলিশের কোনো সদস্য কিছু বলেননি।
গেল সোমবার নারায়ণগঞ্জসহ দেশের ৬১ জেলায় জেলা এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের নির্বাচন অনেকটাই সুষ্ঠূ হয়েছে বলেও দাবি করেছেন অনেকেই। তবে অন্যদিকে আবার এই নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।