প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী হাবিবুল আওয়াল। সাম্প্রতিক সময়ে তার একটি মন্তব্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে এবং এই বিষয় নিয়ে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন কমিশনারের বুদ্ধিশুদ্ধি নেই এমন ধরনের মন্তব্য করেছেন। তাছাড়া কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সেখানকার এমপিকে এলাকা ছাড়ার নির্দেশ দেওয়ার পরও তাকে এলাকা থেকে বাইরে যাওয়াতে না পারায় নির্বাচন কমিশনের দুর্বলতার কথা তুলে ও সমালোচনা শুরু হয়। েবার এ বিষয়ে জবাব দিলেন নির্বাচন কমিশন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, শুধু নির্বাচনী ব্যবস্থাই নয়, রাজনীতিসহ অনেক কিছুই পচে গেছে। আমাকে অস্ট্রেলিয়া বা ভিয়েতনামের নির্বাচন কমিশনার করে দেন, আমি সহজেই ভোট করে দেব। এখানে নির্বাচন করা একটি কঠিন কাজ।
সোমবার (১৮ জুলাই) নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সঙ্গে সংলাপে এসব কথা বলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেন, আমার নাকি কোমর ভেঙে গেছে। আমি আজকাল ইউটি”উব দেখা বন্ধ করে দিয়েছি। আমি যখনই আমার কোনো ছবি দেখি, আমি বুঝতে পারি যে বুঝতে পারি যে বাপ-দাদাসহ গা”লিগালাজ শুরু হবে। কারণ হিসেবে বলা হয় আমার নাকি কোমর ভেঙে গেছে। আমরা কিন্তু মিডিয়াকে সমর্থন করি। আমি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী।
কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইসির সমালোচনা প্রসঙ্গে কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, আমি আইনের ছাত্র, আইন পড়ি, লেখালেখি করি। অনেক দিন ভার্সিটিতে পড়িয়েছি। তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো যে, এমপি বাহার সাহেব খুব ডিস্টার্ব করছেন। অনেক সময় হঠকারী করে ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে এলাকা থেকে বিতাড়িত করতে হবে। আমি যখন পরে সমালোচনা পড়েছিলাম, আইনটি মনোযোগ সহকারে পড়ে দেখি, নির্বাচন কমিশনের কোনো অধিকার নেই কোনো এমপিকে তার ঠিকানা থেকে, এমনকি এমপি তো আর চোর বা ডাকাত নন যে তাকে তার ঠিকানা থেকে বিতাড়িত করা যায়।
তবুও দেখলাম সমালোচনা আমাদেরই হবে। সেখানে বলা হয় একজন এমপিকে বের বের করে দিতে পারলেন না, মেরুদণ্ড ভেঙে গেছে, মাজা ভেঙে গেছে, ঘাড় ভেঙে গেছে, সবকিছু ভেঙে গেছে। তখন তাকে বিনীতভাবে অনুরোধ করা হলো, আমরা তাকে অনুরোধ করেছি, এটা খুব বেআইনি অনুরোধ নয়। তিনি অনুরোধ পালন করলে অনেকেই খুশি হতেন।
তিনি বলেন, গতকাল (১৭ জুলাই) আরেকটি ঘটনা ঘটেছে। আমি যদি আজ বিদায় নিতে পারতাম খুব ভালো লাগতো। সব ইংলিশ, পেপার এটা করেছে। আমি গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। আমি-আপনি বসে আছি। তিনি একজন খুব হাসিখুশি মানুষ, ওনার নাম ববি হাজ্জাজ (জাতীয় গণতান্ত্রিক আন্দোলনের চেয়ারম্যান)। তিনি ঘটনাক্রমে অ’স্ত্রের কথা বলেছেন। আমি বললাম আপনি বন্দুক নিয়ে দাঁড়াবেন। কারণ তারা যদি তলোয়ার নিয়ে আসে, আপনিও বন্দুক নিয়ে দাঁড়াবেন। এটা কী মিন করা হয়? একজন প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কি এতটুকু জ্ঞান নেই, যে এখনই কিন্তু পারেন আর্মস অ্যাক্টে অ্যারেস্ট করতে। যদি তা সত্য হয় তবে আমি অস্ত্র আইন লঙ্ঘন করেছি বলে অস্ত্র আইনে গ্রেপ্তার হতে পারি। পুলিশ এসে আমাকে একেবারে নিয়ে যাবে। মন থেকে বলা নাকি রসিকতা বলে একটা ব্যাপার আছে বুঝতে হবে।
নির্বাচন কমিশনার সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সংলাপ শুরু করেছেন। রাজনৈতিক দলগুলো যাতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে সেজন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না বিএনপি।