সম্প্রতি জার্মানির ডি সাইট পত্রিকায় সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশের নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে গত মাসে ড. ইউনূসকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এখন তিনি জামিনে আছেন।
গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস অভিযোগ করেন, গ্রামীণ ব্যাংক তাদের আটটি প্রতিষ্ঠান জবরদখল করেছে। তবে গত শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান একেএম সাইফুল মজিদ দাবি করেন, আইন অনুযায়ী সাতটি প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়েছে। ড. ইউনূস মানি লন্ডারিং করেছেন বলে প্রমাণ রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। গত রোববার এক বিবৃতিতে ইউনূস সেন্টার দাবি করেছে, এই অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর।
সাম্প্রতিক এসব ঘটনার পেছনে কারা, এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, বাংলাদেশের সবাই জানে কীভাবে এসব হয়। কারও নাম নিতে নেই; এটি অনেক খারাপ পরিণতি নিয়ে আসে।
ইউনূসকে পদ্মা নদীতে চুবানি দেওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মন্তব্য সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস বলেন, তিনি নিশ্চিত করতে চান যে মানুষ আমাকে ঘৃণা করুক।
শেখ হাসিনা কেন এটা চান- তা তিনি জানেন না অনলাইনকে বলেন ড. ইউনূস। তিনি বলেন, কেউ বলছেন ব্যক্তিগত, কেউ বলছেন রাজনৈতিক।
২০১১ সালে যখন তাকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ ওঠে। ইউনূস বলেন, আমাকে সরিয়ে দেওয়ার পর তারা আশা করেছিল আমাকে আর দেখা যাবে না, কেউ মনে রাখবে না।
তারপরও ড. ইউনূস সম্ভবত বাংলাদেশের সবচেয়ে পরিচিত নাগরিক এবং তাকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য ডাকা হয় – নোবেল বিজয়ী বলেছিলেন যে তারা কীভাবে করতে হয় তা জানেন না। এ কারণে তারা এখন হাস্যকর আইনি মামলা এনেছে।
কেউ কেউ বলছেন, শেখ হাসিনা তার (ইউনূস) জনপ্রিয়তা নিয়ে শঙ্কিত এবং তিনি (ইউনূস) প্রধানমন্ত্রী হতে চাইতে পারেন- এমন কথার প্রতিক্রিয়ায় সাইটটির অনলাইন সাংবাদিকদের ইউনূস বলেন, এটাই আমার শেষ চাওয়া, আমি যা করছি তাতে খুশি।
ভবিষ্যতে কী হবে বলে মনে করেন- এ প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, অনেক ধরনের সামাজিক ও আইনি শাস্তি। তারা আমাকে জেলে পাঠাতে পারেন। এছাড়া আমার আরও আশঙ্কা যে এতদিন ধরে যা তৈরি হয়েছে সবই ধ্বংস করা হবে।
সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে রাশিয়ায় নাভালনির মৃ/ত্যুর প্রসঙ্গ উঠলে ডক্টর ইউনূস বলেন, হ্যাঁ, এটা মর্মান্তিক। মানুষ এখন তাদের চোখে এই প্রশ্ন নিয়ে আমার দিকে তাকায়। তারা আশঙ্কা করছে আমার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটতে পারে।
ডক্টর ইউনূস বলেন, তার অনেক বন্ধু তাকে তাদের দেশে থাকতে বলেছে। তিনি বলেন, আমাকে নাগরিকত্ব দিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করার সুযোগ-সুবিধা দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু আমি বাংলাদেশ ছাড়তে চাই না। আমি তাদের সব সময় বলি, সারাজীবন বাংলাদেশে কাজ করেছি। এছাড়াও, আমি যদি যাই, আমি যাদের সাথে কাজ করি তাদের কী হবে?