প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে বিপুল পরিমাণ কর্মী বিদেশে গিয়ে থাকেন ভাগ্য বদলের আশায়। যেসব দেশে বাংলাদেশের এই সকল কর্মীরা গিয়ে থাকেন তার মধ্যে অন্যতম হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরব। সৌদি আরবে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক শ্রমিক যান কাজ করতে। এদের মধ্যে শুধু পুরুষ নয়, নারীরাও যান। তবে পরিতাপের বিষয় সৌদি আরবে এ পর্যন্ত বহু সংখ্যক বাংলাদেশী নারী কর্মী সেখানে নির্যাতিত হয় থাকেন, এমন অভিযোগ উঠেছে। ফের আরো এক তরুণী সৌদি আরবে গিয়ে নি”/র্যাতিত হচ্ছেন, এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
সৌদি আরবে গিয়ে নি”/র্যাতনের শিকার হচ্ছেন হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার ঐ তরুণী। ইতিমধ্যেই বাড়িতে নি”/র্যাতনের কথা জানিয়ে করা ভিডিও কল সোশ্যাল মিডিয়ায় ভা”ইরাল হয়েছে। মাত্র ২৬ সেকেন্ডের ওই ভিডিও কলে নি”/র্যাতিতা মেয়েটিকে বলতে শোনা যায়, “ও আম্মা আমারে যে মাইর মারে গো আম্মা, আমারে চুলে ধইরা টানে গো আম্মা, আমি মইরা যাইমু গো আম্মা।” ঐ তরুনীর বাড়ি চুনারুঘাট উপজেলার ওসমানপুর গ্রামে।
তদন্তে জানা যায়, ২০২২ সালের ২১ ডিসেম্বর ওই তরুণী ঢাকার একটি এজেন্সির মাধ্যমে সৌদি আরবে যান। সেখানে যাওয়ার পর থেকে তিনি সৌদি আরবের দাম্মামে একটি বাড়িতে কাজ করছিলেন। সম্প্রতি গত কয়েকদিন ধরে ওই তরুণীকে শারিরীক ও মানসিক নি”/র্যাতন শুরু করে মালিক পক্ষ। যা তিনি একাধিক ভিডিও কলে তার পরিবারকে জানান। একই সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার অনুরোধ জানান। ভিডিও কলে তার শরীরে বিভিন্ন স্থানে নি”/র্যাতনের চিহ্ন দেখা যায়।
এদিকে মেয়েকে ফিরে পেতে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন বাবা। মামলাটি তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত।
স্থানীয় গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী জানান, মেয়েটির পরিবার অসহায়। পরিবারের অসচ্ছলতা ঘোচাতে দালাল ধরে বিদেশে যায় সে। সেখানে তার ওপর নি”/র্যাতন দুঃখজনক। তাকে দ্রুত ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।
এ বিষয়ে সিদ্ধার্থ ভৌমিক যিনি চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি এই বিষয়ে বলেন, মেয়েটি যে ভিডিও পাঠিয়েছে সেটা দেখেছি। তার পরিবারে সদস্যরা যদি প্রশাসনের নিকট তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা বা অন্য কোনো বিষয়ে সহযোগিতা চায়, তাহলে তাদেরকে সহযোগীতা করা হবে। তার পাসপোর্ট ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে সে যাতে দ্রুত দেশে ফিরতে পারে সে বিষয়ে চেষ্টা করব।