আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বিএনপি আন্দোলনে রাজপথে নামছে। কারণ হিসেবে বলা চলে, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে তবেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, অন্যথায় নয়। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দেওয়ার জন্য বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে আন্দোলনে নামছে বিএনপি ও এর সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলো। সাম্প্রতিক সময়ে আন্দোলন নিয়ে ভিন্ন ধরনের এক মন্তব্য করলেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান। তার কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে এক ধরনের বিপাকে ফেলেছেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে।
গত শনিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী উলামা পার্টির ৪৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ১০ ডিসেম্বরের পর বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কথায় দেশ চলবে, আর কারো কথায় নয়।
এরপর তার বক্তব্যকে কেন্দ্র করে দলের ভেতরে-বাইরে এক ধরনের তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তার এ বক্তব্যের কারণে বিএনপির কয়েকজন নেতা হতবাক হয়েছেন বলেও জানা গেছে।
বিএনপির নেতারা বলছেন, তারা এখন নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন করছেন, তবে আমান উল্লাহ আমান যেভাবে কথা বলেছেন, তাতে একধরনের আইনি জটিলতায় পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আর শেষ পর্যন্ত তা হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়া এখন বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। দুই শর্তে সাজা স্থগিত করে সরকার তাকে বাসায় চিকিৎসার সুযোগ দিয়েছে।
উল্লেখ্য, খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠ দফায় সাজা স্থগিত করে খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়।
দুটি শর্তে বলা হয়েছে- খালেদা জিয়া দেশে চিকিৎসা নিবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না। এছাড়া আইন অনুযায়ী তিনি এই সময়ে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারবেন না। কিন্তু আমান উল্লাহ আমান যেভাবে খালেদা জিয়াকে এগিয়ে নিয়ে এসেছেন তা অপরাধ। কারণ খালেদা জিয়া আদালতের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন। সে বিবেচনায় তিনি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারবেন না। আর আমান উল্লাহ আমান যেভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, খালেদা জিয়া এমন কোনো নির্দেশনা দেননি বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে আমান উল্লাহ আমানের এমন বক্তব্যে খালেদা জিয়ার পরিবারও নাখোশ বলে বিএনপি নেতাদের মধ্যে আলোচনা রয়েছে। বিশেষ করে খালেদা জিয়ার ভাই ও তার বোন বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
তারা এ বিষয়ে বলছেন, বিএনপি আন্দোলন করলেও এখন পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে পারেনি, সেটা তাদের ব্যর্থতা। আর তখনই এ ধরনের অযৌক্তিক বক্তব্য, যেটা ভিত্তিহীন সেটা কোনো ভাবেই আমান উল্লাহ আমানের বক্তব্য দেওয়া উচিত ছিল না। তিনি বিএনপিকেই বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছেন।